বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দেওয়ার ঘটনায় বিএনপিকে দায়ী করে কোরআন ছুঁয়ে জবানবন্দি দিয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্য মোহাম্মদ মনসুর আলম নামে এক ব্যক্তি।
আগুনের ঘটনায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ নবী উল্লাহ নবীসহ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে মনসুরকে জিজ্ঞাসাবাদে ট্রেনে আগুন দিতে বিএনপির পরিকল্পনার কথা সামনে আসে বলে জানান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ও ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
ডিবিপ্রধান জানান, মনসুরকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়- দুই ধাপে নাশকতার পরিকল্পনা করেছিলেন যুবদলের নেতাকর্মীরা।
জবানবন্দিতে মনসুর নামে ওই ব্যক্তি বলেছেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক সদস্য সচিবসহ আমরা টিম লিডাররা ভার্চুয়ালি মিটিং করেছিলাম। সেখানে দুটি সিদ্ধান্ত হয়। ভোটাররা যাতে ভোটকেন্দ্রে না আসেন সেজন্য থানা ও ওয়ার্ড কমিটির সদস্যরা ভীতি সৃষ্টি করবেন এ জন্য নির্বাচনী ক্যাম্প আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়া ও ককটেল বিস্ফোরণ করার পরিকল্পনা করা হয়। দ্বিতীয়ত, ঢাকায় প্রবেশের পথে ট্রেনে হামলার চালানোর কথা হয়।
মনসুরের বরাত দিয়ে হারুন অর রশীদ জানান, ১৭ মিনিটের ওই মিটিং চলাকালে সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন টিম লিডারদের জিজ্ঞাস করেন, ট্রেনে হামলা কে করতে পারবে? পরে একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয় আগুন দেওয়ার জন্য। সে অনুযায়ী শুক্রবার রাতে বেনাপোল এক্সপ্রেসে আগুন দেওয়া হয়।
এদিকে, মোহাম্মদ মনসুরের স্বীকারোক্তির একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে মোহাম্মদ মনসুর আলমকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি কাউকে ফাঁসাতে কোনো মিথ্যা বলছি না, কোরআন শরীফ হাতে রেখে বলছি, মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবসহ সব টিম লিডার মিলে ভার্চুয়ার মিটিং করি। গতকাল (৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টা ২ মিনিটের দিকে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে কল আসে। প্রায় ১৭ মিনিট কথা হয়। ওই মিটিংয়ে দুটি সিদ্ধান্ত আসে। ওয়ার্ডভিত্তিক কমিটির দায়িত্ব দেওয়া হয় ভ্রাম্যমাণ ক্যাম্প জ্বালিয়ে দেওয়া এবং ককটেল মেরে ভীতি সৃষ্টি করা। এছাড়া ট্রেনে আগুন দেওয়ার সিদ্ধান্তও হয়। ট্রেনে আগুন দেওয়ার কাজটা দেওয়া হয় সদস্যসচিবকে।’
তিনি বলেন, ‘আমার একটা ছোট বাচ্চা আছে এবং কোরআন ছুঁয়ে শপথ করে বলছি, আমি মোটেও মিথ্যা বলছি না। আমি কাউকে ফাঁসাচ্ছি না, কোনো মিথ্যাও বলছি না।’