মুক্তিযুদ্ধকে ঘিরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নতুন দিগন্ত উন্মোচন হলো। নতুন শিক্ষাক্রমে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যবই এবং পাঠদান পদ্ধতিতে যে পরিবর্তন আনা হয়েছে সেখানে মুক্তিযুদ্ধের উপস্থাপনা আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এই দুই শ্রেণির বাংলা ও সমাজবিজ্ঞান বইয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক তথ্য-উপাত্ত শিক্ষাক্রমের সহায়ক উপাদান ডিজিটাল শিক্ষার বিষয়বস্তু হিসেবে ব্যবহার করা হবে। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের পাঠদানে এটা অপারেট করবেন।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার জাদুঘরের সেমিনার হলে ‘মুক্তিযুদ্ধের ওপর ডিজিটাল শিক্ষার বিষয়বস্তু’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি সদস্য ডা. সারওয়ার আলী একথা বলেন।
ডা. সারওয়ার আলী বলেন মুক্তিযুদ্ধের দ্বিতীয় প্রজন্ম চলছে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আজও প্রাসঙ্গিক। মুক্তিযুদ্ধ পাঠদানের মাধ্যমে এই প্রজন্ম ধর্মের নামে নৃশংসতাকে ঘৃণা করতে শিক্ষা পাবে। মানবিক সমাজের লেখচিত্র অঙ্কন করতে পারবে। মুক্তিযুদ্ধের ওপর ডিজিটাল শিক্ষার তাগিদ থেকে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর নতুন পাঠ্যবই কেন্দ্র করে শিক্ষা-সহায়ক ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি ও সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর থেকে যে যাত্রা শুরু হয়েছে এটা সংগতিপূর্ণ।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি সদস্য মফিদুল হক বলেন, শ্রেণিকক্ষের শিক্ষার সঙ্গে সম্পৃক্ত করে ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের এক নতুন অধ্যায় শুরু হচ্ছে। ষষ্ঠ শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে জাহানারা ইমামের ‘একাত্তরের দিনগুলি’, ‘তিনদিনের রোজনামচা’ এবং ‘তোমাদের এলাকায় মুক্তিযুদ্ধ’ অধ্যায়ের শহীদ আজাদ বিষয়ক রচনা ঘিরে দুটি তথ্যমূলক ডিজিটাল কনটেন্ট পরীক্ষামূলকভাবে তৈরি করা হয়েছে। যা সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ একটা বিশাল অর্জন। যদিও শিক্ষাক্ষেত্রে অনেক ঘাটতি থাকতে পারে। কিন্তু আমাদের মনে হয়েছে, এই নতুন চিন্তা-ভাবনার সঙ্গে সমাজের সম্প্রীতি আমাদের বলবান করবে। আমরা আমাদের মতো করে একটা উদাহরণ তৈরি করার চেষ্টা করছি।
ইন্ডিপেন্ডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আবু সাঈদের মতে, ডিজিটাল কনটেন্টের মাধ্যমে শ্রেণিকক্ষে পাঠদানে সহায়ক অডিও-ভিজ্যুয়াল উপস্থাপনা, গ্রাফিকস এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এ-আই ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের পাঠ-অনুধাবন মূল্যায়ন ব্যবস্থা এখানে রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের যে দুটো অধ্যায় ষষ্ঠ শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, সেই দুটো অধ্যায়ের একটি বাংলা বইতে শহীদ জননী জাহানারা ইমাম। সেখানে যদি আমরা ক্লিক করি, তাহলে আমরা জাহানারা ইমামের ছোটবেলা থেকে তার কর্মকাণ্ড সব কিছু জানতে পারবো। শিক্ষার্থীরা ক্লাশে সেটা করবে। আবার দলীয়ভাবেও করতে পারবে। মানে কনটেন্টগুলো তৈরি করা হয়েছে যাতে সহজেই শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়। শুধু ভিডিও বা ছবিই নয়। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সংগ্রহশালা থেকেও কিছু ডকুমেন্ট এখানে দেওয়া হয়েছে। এই ডকুমেন্টগুলোর মধ্যে ডায়রির পাতা, সংবাদপত্রের নিউজ ইত্যাদিও রয়েছে।
ড. মঈনুল যাবের জানান, ডিজিটাল কনটেন্টের সুবিধা হচ্ছে কারিকুলামের উপাদানগুলোকে সহজভাবে তুলে ধরা।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি সদস্য সারা যাকের বলেন, মুক্তিযুদ্ধের অন্তর্ভুক্তি শুধু বাংলা বইয়ে নয়, অন্য বইতেও রয়েছে।
মন্তব্য করুন