কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৪ জানুয়ারি ২০২৪, ০৯:০৩ পিএম
আপডেট : ০৪ জানুয়ারি ২০২৪, ০৯:২৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের গড় আয় বেড়েছে

অনলাইনে সংবাদ সম্মেলন করেছে সুজন।  ছবি : সংগৃহীত
অনলাইনে সংবাদ সম্মেলন করেছে সুজন। ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নারায়ণগঞ্জ ১ আসনের গোলাম গাজী দস্তগীরের আয় ৮৩. ৩০ কোটি, কুমিল্লা ৮ এর আবু জাফর মোহাম্মদ শফি উদ্দিনের ৭০.৫৫ কোটি, ঢাকা-১ এর সালমান ফজলুর রহমানের ৫০.৬২ কোটি, যশোর-৩ এর কাজী নাবিল আহমেদের ১৪. ৩৯ কোটি টাকা। স্বতন্ত্র থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ এস.এ.কে একরামুজ্জামান ৫৪.০১ কোটি, নারায়ণগঞ্জ-১ গাজী গোলাম মূর্তজা ৫১.০৮ কোটি, ঝিনাইদহ-২ মো. নাসের শাহরিয়ার জাহেদী ১৯.৬০ কোটি, নরসিংদী-৩ মো. সিরাজুল ইসলাম মোল্লা ১৬.৬৮ কোটি, ঢাকা-১৮ মো. খসরু চৌধুরী ১৬.৬৬ কোটি টাকা। জাতীয় পার্টি থেকে বরিশাল-৩ এর গোলাম কিবরিয়া টিপুর ১৮.৬৩ কোটি টাকা।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের তথ্যের বিশ্লেষণ উপস্থাপনের জন্য নাগরিক সংগঠন সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন-এর উদ্যোগে বৃহস্পতিবার (০৪ জানুয়ারি) অনলাইনে সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দলের প্রার্থীদের আয়ের তথ্য তুলে ধরা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে সুজন নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সুজন সহসভাপতি বিচারপতি এম এ মতিন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ড. শাহদীন মালিক, কোষাধ্যক্ষ আবু নাছের বখতিয়ার, সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার প্রমুখ। লিখিত প্রবন্ধ পাঠ করেন সুজন কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার। এ ছাড়াও সারাদেশ থেকে বিভিন্ন জেলার সুজন নেতারা যুক্ত হয়েছেন।

লিখিত প্রবন্ধে দিলীপ কুমার সরকার বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সর্বমোট ১ হাজার ৯৪৫ জন প্রার্থীর মধ্যে ১৪০ জনের (৭.২০ শতাংশ) প্রার্থীর বার্ষিক আয় ২ লাখ টাকার কম, ৭৩৬ জনের (৩৭.৮৪ শতাংশ) ২ লাখ ১ টাকা থেকে ৫ লাখ টাকা, ৫২৪ জনের (২৬.৯৪ শতাংশ) ৫ লাখ ১ টাকা থেকে ২৫ লাখ টাকা, ১৪৬ জনের (৭.৫১ শতাংশ) ২৫ লাখ ১ টাকা থেকে ৫০ লাখ টাকা, ১০৩ জনের (৫.৩০ শতাংশ) ৫০ লাখ ১ টাকা থেকে ১ কোটি টাকা এবং ১৭০ জনের (৮.৭৪ শতাংশ) ১ কোটি টাকার অধিক। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ১ হাজার ৯৪৫ প্রার্থীর মধ্যে ২৮২ জনের (১৪.৫০ শতাংশ) সম্পদ ৫ লাখ টাকার কম, ৪৮৮ জনের (২৫.০৯ শতাংশ) ৫ লাখ ১ টাকা থেকে ২৫ লাখ টাকা, ২০৮ জনের (১০.৬৯ শতাংশ) ২৫ লাখ ১ টাকা থেকে ৫০ লাখ টাকা, ১৭৫ জনের (শতাংশ) ৫০ লাখ ১ টাকা থেকে ১ কোটি টাকা ৩৭৪ জনের (১৯.২৩ শতাংশ) ৫০ লাখ ১ টাকা থেকে ১ কোটি টাকা এবং ৩৩৫ জনের (১৭.২২ শতাংশ) ৫ কোটি টাকার অধিক।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ১ হাজার ৯৪৫ প্রার্থীর মধ্যে ৬৩২ জনের (৩২.৪৯ শতাংশ) শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতকোত্তর, ৫১৪ জনের (২৬.৪৩ শতাংশ ) স্নাতক। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২৬৫ জন প্রার্থীর মধ্যে ১২৩ জনের (৪৬.৪২ শতাংশ) শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতকোত্তর, ১০২ জনের (৩৮.৪৯ শতাংশ) স্নাতক। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ১ হাজার ৯৪৫ জন প্রার্থীর মধ্যে ১১৪২ জন (৫৮.৭১ শতাংশ) ব্যবসায়ী, ১২১ জন (৬.২২ শতাংশ) কৃষিজীবী, ২৩৭ জন (১২.১৯ শতাংশ) চাকুরিজীবী এবং ১৮৮ জন (৯.৬৭ শতাংশ) আইনজীবী। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২৬৫ জন প্রার্থীর মধ্যে ১৭০ জন (৬৪.১৫ শতাংশ) ব্যবসায়ী। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ১ হাজার ৯৪৫ প্রার্থীর মধ্যে ১৮৫ জনের (৯.৫১ শতাংশ) বিরুদ্ধে বর্তমানে, ৩৩৮ জনের (১৭.৩৮ শতাংশ) বিরুদ্ধে অতীতে এবং ৭৭ জনের (৩.৯৬ শতাংশ) অতীতে মামলা ছিল এবং বর্তমানেও আছে।

সুজন সম্পাদক আরও বলেন, ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের গড় আয় বাড়লেও অন্যসকল প্রার্থীদের সাথে তাদের প্রার্থীদের আয়ের এই বৈষম্য কিছুটা কমে আসে, দুই গ্রুপের মধ্যে পার্থক্য ছিল ৬১ শতাংশ। ২০২৪ সালের নির্বাচনের হলফনামা অনুসারে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের আয়ের বৃদ্ধি এবং অন্য সকল প্রার্থীদের সাথে পার্থক্য অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। ২০২৪ সালে এ পার্থক্য বেড়ে দাঁড়ায় ৫৫৯ শতাংশে।

সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার ২০০৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য প্রার্থীদের গড় আয়ের একটি তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরে বলেন, বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের গড় আয়ের সঙ্গে অন্যান্য সকল প্রার্থীর গড় আয়ের বড় ধরনের পার্থক্য রয়েছে। দিন দিন এটি আরো বেড়েছে।

সাংবাদিকদেরকে নির্যাতনের কারণে জরিমানা করার প্রসঙ্গে ড. শাহদীন মালিক বলেন, জরিমানা নিয়ে আমাদের মধ্যে কিছু ভ্রান্ত ধারণা আছে। বিষয়টা হচ্ছে কোনো হোটেলে ভেজাল খেয়ে তিন দিন হাসপাতালে থাকার পর মোবাইল কোর্ট ওই হোটেলকে জরিমানা করলো, এতে আমার কী লাভ হল। সাংবাদিক নির্যাতনে যে জরিমানা করা হল এ টাকা সাংবাদিক পায় না, রাষ্ট্র পায়। ভুক্তভোগী কোনো ক্ষতিপূরণ পায় না। আমাদের আইনে ভুক্তভোগীকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা নাই। আর জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বলতে গেলে আমাদের জাতীয় নির্বাচন স্থানীয় নির্বাচনের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। সংসদ সদস্যদের কাজ এলাকার উন্নয়ন করা না, তাদের মূল কাজ আইন প্রণয়ন করা। উন্নয়মূলক কাজ স্থানীয় সরকারের করার কথা।

তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনেও প্রার্থীরা এলাকার উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। প্রার্থীদের সম্পদের তথ্যের ক্ষেত্রে দুদক চাইলে দুদক আইনের ২৬ ধারা অনুযায়ী যে কোনো ব্যক্তির ১৫ বছরের সম্পদের হিসাব চাইতে পারে। সম্পদ ও আয়ের কোনো গরমিল পেলে ব্যবস্থাও গ্রহণ করতে পারে। বাস্তবতা হচ্ছে, দুদক প্রার্থীদের ব্যাপারে এটি করবে না।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রাষ্ট্র পরিচালনার ‘স্টাইল’ পরিবর্তন দরকার : হোসেন জিল্লুর রহমান

প্রতি জেলায় পূজামণ্ডপের নিরাপত্তায় সেনাবাহিনী তৎপর থাকবে : সেনাপ্রধান

নির্বাচনের রোডম্যাপ জানতে চেয়েছে বিএনপি

সংলাপে যোগ দিতে যমুনায় জামায়াতের নেতারা

রাজধানীতে সন্ত্রাসী হামলায় আহত সাংবাদিক

সাবেক ডিবিপ্রধান হারুনকে নিয়ে কথা বললেন নতুন ডিবিপ্রধান

বিশ্ব শিক্ষক দিবস / বিশ্বায়ন ও এসডিজিসের আলোকে দেশের শিক্ষা ও শিক্ষক সমাজ

বৈষম্যবিরোধী ঐক্য কর্মচারীদের কর্মসূচি সাময়িক স্থগিত দাবিতে অনঢ় থাকার ঘোষণা

গয়না নিয়ে পালাল প্রেমিক, বিয়ের দাবিতে অনশনে প্রেমিকা

‘আমরা এখনো শ্রদ্ধার স্বর্ণ শিখরে রেখেছি শিক্ষকদের’

১০

সিরাত মাহফিল শুরু

১১

আশুলিয়ায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার অভিযোগ 

১২

টি-টোয়েন্টিতে না থেকেও ‘আছেন’ সাকিব

১৩

একের পর এক ধর্ষণ, যুবকের ৪২ বার যাবজ্জীবন

১৪

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কাজ দ্রুত নির্বাচন করা : নাজমুল হাসান 

১৫

ইচ্ছা থাকলেও সামর্থ্যের অভাব রয়েছে : শিক্ষা উপদেষ্টা

১৬

যৌথবাহিনীর অভিযানে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ৩

১৭

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপে কোন দলে কারা রয়েছেন

১৮

আ.লীগ ছাড়ার ঘোষণা দিলেন অধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন

১৯

দেশের সর্বকনিষ্ঠ আন্তর্জাতিক মাস্টার মনন

২০
X