শ্রমিক সংকট কাটাতে চলতি বছরেই ৩০ হাজারের বেশি দক্ষ বিদেশি শ্রমিক নেবে দক্ষিণ কোরিয়া। এর মধ্যে আগামী জুলাই মাসের মধ্যে জরুরিভিত্তিতে অন্তত পাঁচ হাজার কর্মী নেওয়া হবে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার বিচারবিষয়ক মন্ত্রী হান ডং হুন।
মঙ্গলবার (২৭ জুন) মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী জানান, দেশের ‘ব্লু-কালার জবস’ খাতে উত্তরোত্তর বাড়তে থাকা কর্মী সংকট কাটাতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে ইলেকট্রিশিয়ান (বিদ্যুৎমিস্ত্রি), প্লাম্বার (পাইপমিস্ত্রি), দমকলকর্মী, ভবন নির্মাণের কাজ, টেকনিশিয়ান, মেকানিক, ট্রাক ড্রাইভিং- প্রভৃতি কাজ ‘ব্লু-কালার জবস’ নামে পরিচিত। সাধারণ দক্ষিণ কোরীয়দের মধ্যে এই ধরনের পেশায় যাওয়ার আগ্রহ ও প্রবণতা কম থাকায় বিদেশি কর্মীদেরই এসব কাজে নিয়োগ দেওয়া হয়।
আকর্ষণীয় বেতন কাঠামো এবং জীবনযাত্রার মান তুলনামূলকভাবে উন্নত হওয়ায় দীর্ঘ তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে এশিয়ার স্বল্পোন্নত দেশগুলোর শ্রমশক্তির কাছে আকর্ষণীয় দেশ দক্ষিণ কোরিয়া। কিন্তু পর্যাপ্ত সংখ্যক দক্ষ কর্মী থাকার কারণে গত কয়েক বছর ধরেই নতুন বিদেশি কর্মীদের জন্য ভিসার সংখ্যা কমিয়ে আনছিল দেশটির সরকার। ২০২০ সালে বিভিন্ন কোটায় মাত্র ১ হাজার বিদেশি কর্মীকে ভিসা দেওয়া হয়েছিল।
কিন্তু পরবর্তীতে কোভিড-১৯ এর কারণে ওই সালে বিপুল সংখ্যক বিদেশি কর্মী দক্ষিণ কোরিয়া থেকে নিজ দেশে চলে যান। সীমান্ত বিধিনিষেধ জারি থাকায় দীর্ঘদিনে এই শূন্যতা আর পূরণ সম্ভব হয়নি। ফলে দিন দিন ‘ব্লু কালার জবস’ খাতে কর্মীসংকট প্রকট হয়ে উঠছে।
হান ডং হুন বলেন, ‘২০২০ সালের তুলনায় যেহেতু আমরা (বিদেশি দক্ষ কর্মীদের জন্য) ভিসার সংখ্যা ৩০ গুণেরও বেশি বাড়িয়ে দিচ্ছি…..তাই অপর্যাপ্ত কোটার কারণে বিদেশিরা আসতে পারছেন না- এমন প্রশ্ন ওঠার আর অবকাশ নেই।’
যেসব কোম্পানি বাইরের বিভিন্ন দেশ থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় কর্মী সংগ্রহ ও সরবরাহের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত, শিগগিরই সেসব কোম্পানিকে এ সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় নির্দেশনা সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এর আগে গত বছর দক্ষিণ কোরিয়া ২০২৩ সালে বাংলাদেশ থেকে সাড়ে সাত হাজার কর্মী নেওয়ার ঘোষণা দেয়। ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত লি জাং-কেউন জানিয়েছিলেন, ২০২৩ সালের শুরু থেকে সপ্তাহে ১৫০ জন করে, বছরে ৭ হাজার ৫০০ বাংলাদেশির দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার সুযোগ আসছে।
সে হিসেবে বাংলাদেশ থেকেও দক্ষ কর্মী নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মন্তব্য করুন