ই-পাসপোর্ট আবেদন কার্যক্রম শুরুর পর থেকে পাসপোর্ট পাওয়া নিয়ে ঝক্কি-ঝামেলা অনেকটা কমে এসেছে। ঘরে বসেই স্বল্প সময়ের মধ্যে আবেদন ফি পরিশোধসহ পুরো আবেদন প্রক্রিয়াটি শেষ করা যায়।
ই-পাসপোর্টের আবেদন করতে হলে প্রথমে (www.epassport.gov.bd) এই ওয়েবসাইটে লগ ইন করতে হবে। ওয়েবসাইটে ঢুকে ডিরেক্টলি টু অনলাইন অ্যাপ্লিকেশনে (Directly to online application) ক্লিক করতে হবে।
ই-পাসপোর্ট আবেদনের প্রথম ধাপে বর্তমান ঠিকানায় জেলা শহরের নাম ও থানার নাম নির্বাচন করে ক্লিক করতে হবে। পরের ধাপে ব্যক্তিগত তথ্যসংবলিত ই-পাসপোর্টের মূল ফরমটি পূরণ করে সাবমিট করতে হবে। তৃতীয় ধাপে মেয়াদ ও পাসপোর্টের পৃষ্ঠা সংখ্যা অনুযায়ী ফি জমা দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে যে কোনো ব্যাংকের ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড দিয়ে অনলাইনে পেমেন্ট করা যাবে।
এ ছাড়া যদি অধিদপ্তরের অনুমোদিত পাঁচ ব্যাংকের যে কোনো একটিতে টাকা জমা দিয়ে সেই জমা স্লিপের নম্বর এখানে দিতে হবে। এরপর ফাইল সাবমিট করতে হবে। এর ফলে আপনার তথ্যগুলো পাসপোর্টের কার্যালয়ের সার্ভারে চলে যাবে। পরবর্তী ধাপে জাতীয় পরিচয়পত্রসহ (এনআইডি) প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস নিয়ে বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদানের জন্য পাসপোর্ট অফিসে যেতে হবে।
ই-পাসপোর্ট প্রস্তুতের পর আবেদনকারীকে জানানো হবে এবং আবেদনকারীকে নির্দিষ্ট সময়ে উপস্থিত হয়ে ই-পাসপোর্ট গ্রহণ করতে হবে।
শুধু অনলাইনেই নয়, পাসপোর্ট অফিস থেকে ই-পাসপোর্টের কাগজের ফরম নিয়ে পূরণ করে জমা দিলেও মিলবে ই-পাসপোর্ট। ফরমে আবেদনকারীকে ৮৭ ধরনের তথ্য পূরণ করতে হবে। এমআরপি থেকে এই ফরম কিছুটা আলাদা।
অতি জরুরি পাসপোর্ট প্রয়োজন হলে আবেদনকারীকে নিজ উদ্যোগে আগেই পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আনতে হবে। এ ক্ষেত্রে পাসপোর্টের ফরমে প্রি-পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের নম্বর ফরমে উল্লেখ করতে হবে। আবেদনের সময় জমা দিতে হবে ক্লিয়ারেন্সের কপি। প্রাপ্তবয়স্কের ই-পাসপোর্ট করতে ফরম পূরণ করে জাতীয় পরিচয়পত্র/স্মার্ট কার্ড এবং ছবি জমা দিতে হবে। তবে ১৮-এর কম বয়সীদের জন্য জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেট, মা-বাবার ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি জমা দিতে হবে। ই-পাসপোর্ট আবেদনকারীদের ৪৮ পৃষ্ঠার পাঁচ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ভ্যাটসহ চার হাজার ২৫ টাকা, জরুরি ফি ছয় হাজার ৩২৫ টাকা ও অতি জরুরি ফি আট হাজার ৬২৫ টাকা এবং ১০ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি পাঁচ হাজার ৭৫০ টাকা, জরুরি ফি আট হাজার ৫০ টাকা ও অতি জরুরি ফি ১০ হাজার ৩৫০ টাকা।
এ ছাড়া ৬৪ পৃষ্ঠার পাঁচ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ছয় হাজার ৩২৫ টাকা, জরুরি ফি আট হাজার ৬২৫ টাকা ও অতি জরুরি ফি ১২ হাজার ৭৫০ টাকা এবং ১০ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি আট হাজার ৫০ টাকা, জরুরি ফি ১০ হাজার ৩৫০ টাকা ও অতি জরুরি ফি ১৩ হাজার ৮০০ টাকা।
অন্যদিকে বাংলাদেশি কোনো মিশন থেকে ৪৮ পৃষ্ঠার পাঁচ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ১০০ ইউএস ডলার ও জরুরি ফি ১৫০ ইউএস ডলার। অপরদিকে ৪৮ পৃষ্ঠার ১০ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ১২৫ ইউএস ডলার ও জরুরি ফি ১৭৫ ইউএস ডলার।
আবার ৬৪ পৃষ্ঠার পাঁচ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ১৫০ ইউএস ডলার ও জরুরি ফি ২০০ ইউএস ডলার। এ ক্ষেত্রে ১০ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ১৭৫ ইউএস ডলার ও জরুরি ফি ২২৫ ইউএস ডলার।
তবে বাংলাদেশি মিশন থেকে শিক্ষার্থী এবং শ্রমিকদের জন্য খরচ কম রাখা হয়েছে। পাঁচ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ৩০ ইউএস ডলার ও জরুরি ৪৫ ইউএস ডলার। ৪৮ পৃষ্ঠার পাঁচ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ৫০ ইউএস ডলার ও জরুরি ফি ৭৫ ইউএস ডলার। ১০ বছরের ক্ষেত্রে সাধারণ ফি ১৫০ ইউএস ডলার ও জরুরি ফি ২০০ ইউএস ডলার। ৬৪ পৃষ্ঠার পাঁচ বছরের সাধারণ ফি ১৭৫ ইউএস ডলার ও জরুরি ফি ২০০ ইউএস ডলার এবং ১০ বছরের ক্ষেত্রে সাধারণ ১৭৫ ইউএস ডলার ও জরুরি ২২৫ ইউএস ডলার।
মন্তব্য করুন