ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সহ-আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক। তিনি রাজনীতিক বিতার্কিক হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। সংসদ সদস্য থাকাকালে জ্বালাময়ী বক্তব্য দিয়ে আলোচিত হন। দেশের বিভিন্ন টেলিভিশন ও সামাজিক মাধ্যমে সরকারের সমালোচনার পাশাপাশি সমসাময়িক ইস্যুতে বেশ সরব তিনি।
সবশেষ সংরক্ষিত নারী আসন-৫০ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন রুমিন ফরহানা। গত বছরের ১১ ডিসেম্বর দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন। এর আগে তিনি ২০১৯ সালের ২৮ মে জাতীয় সংসদের ৫০টি সংরক্ষিত নারী আসনের মধ্যে ৫০নং আসনে নির্বাচিত হন তিনি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার ইসলামপুরে জন্মগ্রহণ করেন রুমিন। তার বাবা অলি আহাদ প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ এবং স্বাধীনতা পুরস্কার বিজয়ী ভাষাসৈনিক। তার দাদা আবদুল ওহাব ছিলেন ডিস্ট্রিক্ট রেজিস্ট্রার।
রুমিন ফারহানা হলিক্রস স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। পরে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিভাগে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। পরবর্তী সময়ে যুক্তরাজ্যের লিংকনস্ ইন থেকে ব্যারিস্টার ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।
পরিবার থেকেই রাজনৈতিক দীক্ষা পান রুমিন ফারহানা। বাবা অলি আহাদ ছিলেন ভাষা আন্দোলনে জারি করা ১৪৪ ধারা ভঙ্গের নায়ক। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন তিনি। যে ভূমিকার জন্য তিনি স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হন। অলি আহাদ তার জীবনের দীর্ঘ ১৯ বছর কারাগারে কাটিয়েছেন। রাজনীতি করেছেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে। আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন তিনি। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বাবার হাত ধরেই রাজনীতিতে আসেন রুমিন।
রুমিন ফরহানা বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক। এ ছাড়া ব্যারিস্টার হিসেবে বাংলাদেশের উচ্চ আদালতে আইনি পেশায় কাজ করেন তিনি। ২০১৯ সালের ২৮ মে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়ে সংরক্ষিত নারী আসন-৫০ থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির একমাত্র নারী সদস্য হিসেবে জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি। পরে ২০২২ সালের ১০ ডিসেম্বর ঢাকার গোলাপবাগে আয়োজিত বিএনপির গণসমাবেশে সংসদ সদস্য থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি। রুমিন ফারহানা ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য। আইন ও রাজনীতির পাশাপাশি লেখালেখিও করেন তিনি।
মন্তব্য করুন