রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র ফার্মগেট সংলগ্ন আনোয়ারা উদ্যান। গণপূর্ত অধিদপ্তরের অনুমতি নিয়ে ২০১৮ সাল থেকে এটিকে মেট্রোরেলের প্রকল্প অফিস ও নির্মাণ উপকরণ রাখার কাজে ব্যবহার করে আসছে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ। কথা ছিল নির্মাণকাজ শেষে পার্কটি আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার। কিন্তু তা না করে উল্টো সেখানে মেট্রোরেলের স্টেশন প্লাজা নির্মাণের পরিকল্পনা করছে তারা। যেখানে বিপণিবিতান, হোটেল, রেস্টুরেন্ট, কফিশপ, বিনোদনকেন্দ্রের মতো বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। শহীদ আনোয়ারা উদ্যানে মার্কেট নয় আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী ও আশপাশের স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
আজ রোববার (১৫ অক্টোবর) ঢাকার ফার্মগেটের পুনর্নিমিত ফুটওভার ব্রিজের উদ্বোধনের আগে মানববন্ধন করেন তারা। তাদের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। মন্ত্রী জানিয়েছেন, শহীদ আনোয়ারা উদ্যানের জায়গায় কোনো সুপার মার্কেট হতে দেওয়া হবে না।
মানববন্ধনে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী দাবি জানিয়ে বলেন, একটি মহল মাঠ বন্ধ করে মার্কেট বানানোর যে চক্রান্ত করছে তা অতিসত্বর বন্ধ করতে হবে। মেট্রোরেলের কাজ এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে তাই কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সবার জন্য খেলার মাঠ হিসেবে সংস্কার করে উন্মুক্ত করে দিতে হবে।
ফুট ওভারব্রিজ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, শুনলাম আনোয়ারা উদ্যানে যারা মেট্রোরেল তৈরি করছেন তারা নাকি এখানে বড় একটা মার্কেট করবে। যারা মাঠ নষ্ট করে মার্কেট করতে চান আমি তাদের বলছি, আমি জনগণকে নিয়ে তা প্রতিহত করব। এটি আগে সিটি করপোরেশনের জায়গা ছিল। আমাদের জায়গা আমাদের বুঝিয়ে দেওয়া হউক তাহলে আমরা এখানে সুন্দর, আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন খেলার মাঠ গড়ে তুলব। আর তা না করে কেউ যদি এখানে মার্কেট বানাতে চায় তাহলে আমিও আপনাদের সঙ্গে প্রতিবাদে যোগ দিব। আমরাও মার্কেট নয়- মাঠ চাই।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, এটি অনেক আগে থেকেই খেলার মাঠ। এটি পাকিস্তান আমলে ছিল ফর্টিকালচার গার্ডেন হিসেবে। সামনে বিস্তীর্ণ ফুলের বাগানও ছিল। ৬ দফার আন্দোলনে এখানে মনু শাহাদাত হয়েছিলেন। পাকিস্তান সরকার আন্দোলন যখন কন্ট্রোল করতে পারছিল না তখন আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দিয়েছিল। তখন তারা বেপরোয়া হয়ে গেছিল। ’৬৯-এর আন্দোলনের সময় শহীদ আনোয়ারা তার ছেলেকে দুগ্ধ পান করাচ্ছিলেন। কিন্তু তাদের গুলিতে এখানে শহীদ হন। তখন আমরা আনোয়ারা বাগান বলে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর থেকেই এটি আনোয়ারা মাঠ নামে পরিচিতি পায়।
তিনি বলেন, ফার্মগেটে যথেষ্ট সুপার মার্কেট আছে। এখানে অনেক মার্কেট হয়েছে। মার্কেটের জন্য আরও বহু জায়গা রয়েছে। এখানে মেট্রোরেল এসেছে, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এসেছে। কাজেই এখানে আমরা আর ইমারত না করি, এখানে একটা বাগান থাকবে। আমাদের এই আনোয়ারা বেগমের নামেই বাগানটি হবে। এটা আমরাও চাই।
মন্তব্য করুন