একসময় দেশে অন্ধত্বের হার ছিল ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ। সর্বশেষ জরিপে দেখা গেছে, এ হার কমে শূন্য দশমিক ৬৯ শতাংশে নেমে এসেছে। অর্থাৎ এখন ১০০ জনে ১ জনেরও কম বা ১ হাজার জনে সাতজন অন্ধত্বের শিকার। সে হিসেবে বর্তমানে দেশে জনসংখ্যার ১২ লাখ মানুষ অন্ধ। অন্যদিকে, ৩ শতাংশ বা ৫১ লাখ মানুষ ক্ষীণদৃষ্টির শিকার।
বৃহস্পতিবার বিশ্ব দৃষ্টি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে চিকিৎসকরা এই তথ্য তুলে ধরেন। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ছিল ‘আপনার চোখকে ভালবাসুন, কর্মস্থলেও’।
দিবসটি উপলক্ষে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল থেকে একটি সচেতনতামূলক শোভাযাত্রা ও সেমিনারের আয়োজন করা হয়। সেমিনারে চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎকরা জানান, বাংলাদেশে দৃষ্টি সমস্যা কোনো কোনো ক্ষেত্রে কমেছে, আবার নতুন সমস্যা আসছে। তারা জানান, দেশে ছানি অপারেশন অনেক বেড়েছে, যার কারণে ছানিজনিত অন্ধত্ব কমছে। গ্লুকোমা ও রেটিনাজনিত সমস্যাও কমছে আবার জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশগত সমস্যার কারণে ড্রাই আই বা চোখের শুষ্কতা বাড়ছে; সেই সঙ্গে বাড়ছে কর্নিয়ার সমস্যা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ন্যাশনাল আই কেয়ার কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর ও জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. গোলাম মোস্তফা বলেন, চক্ষু সেবার কাজে নিয়োজিত ১০টি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিচ্ছে।
জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের রেটিনা বিভাগের প্রধান এবং বাংলাদেশ চক্ষু চিকিৎসক সমিতির মহাসচিব অধ্যাপক ডা. দীপক কুমার নাগ বলেন, দেশে অন্ধত্বের হার কমছে। এটা খুবই আশার দিক।
স্বাগত বক্তব্যে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক অফথালমোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক খায়ের আহমেদ চৌধুরী বলেন, বর্তমানে দৃষ্টিজনিত মূল সমস্যা হলো ছানি, গ্লুকোমা ও রেটিনার সমস্যা। এছাড়া ডায়াবেটিসজনিত চোখে সমস্যা এখন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। আইএনজিও ফোরামের চেয়ারম্যান এবং অরবিস ইন্টারন্যাশনালের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. মুনীর আহমেদ বলেন, অন্ধত্ব প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক সংস্থা-আইএপিবি’র স্ট্র্যাটেজিক ভিশন ‘ইনসাইট ২০৩০’কে সামনে রেখে মানবাধিকারের অংশ হিসেবে চোখের চিকিৎসাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে হবে।
সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের কর্নিয়া বিভাগের অধ্যাপক ও অ্যাকাডেমিক কমিটির চেয়ারম্যান ডা. আব্দুল কাদের, দৃষ্টি উন্নয়ন সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ও ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডা. শাহিন রেজা চৌধুরী, ভিট্রো-রেটিনা বিভাগের অধ্যাপক ডা. শামিমা সুলতানা এবং ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার সহকারী অধ্যাপক ডা. উৎপল প্রমুখ।
মন্তব্য করুন