কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৯ অক্টোবর ২০২৩, ১০:২১ পিএম
আপডেট : ০৯ অক্টোবর ২০২৩, ১০:৩১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

জন্মনিবন্ধনবিষয়ক সভায় সাংবাদিকদের বের করে দিলেন মন্ত্রী

সচিবালয়ে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনে নাগরিকদের ভোগান্তি নিয়ে আলোচনা সভা। ছবি : কালবেলা
সচিবালয়ে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনে নাগরিকদের ভোগান্তি নিয়ে আলোচনা সভা। ছবি : কালবেলা

জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন নিয়ে নাগরিকদের ভোগান্তি ও সমালোচনার মধ্যে সচিবালয়ে সার্বিক পর্যালোচনা সভা ডাকে স্থানীয় সরকার বিভাগ। গণমাধ্যমসহ সর্বমহলে তীব্র সমালোচনার লাগাম টানতেই এই সভা বলে জানানো হয়। এ নিয়ে বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমকে সভা কাভারেজের জন্য সচিবালয়ের পাসও দেওয়া হয়। তবে সভা শুরু হওয়ার অল্প সময়ের মধ্যেই গণমাধ্যমকর্মীদের বের হয়ে যাওয়ার কথা বলেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। কারণ হিসেবে বলা হয়, মিডিয়ার অনুপস্থিতিতেই জন্ম-মৃত্যু সমস্যা নিয়ে খোলামেলা আলাপ হবে।

আজ সোমবার (৯ অক্টোবর) সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগ আয়োজিত জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন বিষয়ে সার্বিক পর্যালোচনা সভায় এ ঘটনা ঘটে। সভাটি সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও কিছুটা বিলম্ব করে শুরু হয়। পরিচয় পর্ব শেষ হতেই সূচনা বক্তব্য দেন মন্ত্রী। একপর্যায়ে চলে সমস্যার সমাধানে আলোচনা। আলোচকেরা মিডিয়ার উপস্থিতিতে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

একপর্যায়ে ৬টা ৪৪ মিনিটে মন্ত্রী গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আমার মনে হয় গণমাধ্যমকর্মীদের অনুপস্থিতিতে আমরা আলোচনা করি। আমি আপনাদের ডেকেছি, সমস্যাগুলো জানানোর জন্য। তবে আমাদের নিজেদের মধ্যেও আলোচনা দরকার। পরে গণমাধ্যমকর্মীরা সভাকক্ষ ছেড়ে বের হয়ে যান। এ নিয়ে উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়।

এর আগে স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন রেজিস্ট্রার জেনারেল, জাতীয় স্থানীয় সরকার ইনস্টিটিউটের (এনআইএলজি) পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. রাশেদুল হাসান। জন্ম মৃত্যু নিবন্ধন প্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বারবারই তিনি থেমে যাচ্ছিলেন। সেবা জোরদারসহ নাগরিকদের ভোগান্তি কমাতে কোনো ধরনের অর্গানোগ্রাম রয়েছে কিনা- মন্ত্রীর এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি তিনি। একপর্যায়ে গণমাধ্যমকর্মীরা না থাকলেই ভালো হয়- এমন নীরব দাবি উঠে সভাকক্ষে।

মন্ত্রী বলেন, প্রায়ই আমার কাছে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনে ভোগান্তি নিয়ে অভিযোগ আসছে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, সেখানে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন নিয়ে আমরা আটকে থাকব, এমনটা হতে পারে না। জন্মনিবন্ধনবিষয়ক কী কী সমস্যা আছে সেটা সমাধানের জন্য আজ এই সভা আহ্বান করা হয়েছে। সিটি করপোরেশনকে বিশেষভাবে বলা হয়েছে। কারণ সিটি করপোরেশন জন্মনিবন্ধন নিয়ে বেশকিছু সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। কিছু কিছু বিষয় নিয়ে বিতর্কও আছে। সেজন্য আমাদের যে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আছেন তার সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করতে হবে। আমরা চাই সমস্যাগুলো সবাই জানুক এবং সমাধান হোক। আমি নিজেও দায়বদ্ধ হতে চাই। কারণ আমার দুর্বলতাগুলো কেন সমাধান করলাম না।

তাজুল ইসলাম বলেন, এখানে নিরাপত্তার বিষয় আছে, ক্যাপাসিটি বিল্ডিং, অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনা আছে, সার্ভারে সমস্যা, টেকনিক্যাল সাপোর্ট কী দরকার এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করে সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানের পথ বের করার চেষ্টা করব। আমরা তো বলি না যে, বাংলাদেশের সব সমস্যা সমাধান করে ফেলছি। আমাদের সমস্যা হাজারটা ছিল, সমাধানও হয়েছে। নতুন আরও সমস্যা আছে এবং সেগুলো সমাধান করার জন্য আমরা সবাই আন্তরিক। আমি অনুরোধ করব, এখানে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী সবাইকে নিয়ে এসেছেন। চাহিদা অনুযায়ী লোকবল নিয়োগ দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাছে অনুমতি চেয়েছি।

মন্ত্রী বলেন, আপনাদের কী পরিমাণ লোকবল লাগবে, কোন কোন পদে লোক লাগবে, কারণগুলো কী কী, সেগুলো উপস্থাপন করুন। তাহলে আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাছে যাব। আপনাদের লোকবল না থাকলে তো কাজ করতে পারবেন না। আর অতিরিক্ত লোকবল চাইলে তো আমরা দিতে পারব না। আপনাদের কতজন প্রোগ্রামার লাগবে, কী কারণে লাগবে, সেটা আমাকে বোঝাতে হবে।

জন্মনিবন্ধন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের উদ্দেশে বলেন, আপনাদের কোনো ওয়ার্কআউট করা আছে কিনা যে, কত লোকবল লাগবে। আপনার গ্রোগ্রামার আছে একজন, এখন আপনার কতজন প্রয়োজন, কোন কাজের জন্য কতটি। মূল কথা হলো- লোকবল যুক্তিসংগতভাবে লাগতে হবে। আমাদের দেখাতে হবে এবং আমরা যদি মনে করি তাহলে দেব। এর আগে আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলেছিলাম জেলা পর্যায়ে আমাদের অফিস লাগবে এই বিষয়গুলো পরিচালনা করার জন্য। ইউনিয়ন পর্যায়ে একটি অফিস যদি থাকে তাহলে এগুলো পরিচালনার জন্য সেকেন্ডারি অফিস হিসেবে জেলা পর্যায়ে একটি অফিস দরকার। তাহলে ইউনিয়ন পর্যায়ের অফিসে সমস্যাগুলো জেলা অফিস সমাধান করবে। এতে কেন্দ্রীয়ভাবে সমস্যাগুলো আসবে না। এটা আমার ধারণা, তবে আমার ধারণা ভুলও হতে পারে। আমার ধারণা ইউনিয়ন লেবেল থেকে কেন্দ্রীয় পর্যন্ত সরাসরি কাজ করতে পারি। এ বিষয়টি কেবিনেটে যাওয়া সময়সাপেক্ষ হবে। কিন্তু সমস্যাগুলো আমাকে তো সমাধান করতে হবে।

তিনি বলেন, মানুষ নভেম্বর ও ডিসেম্বর- এই দুই মাসে বেশি করে জন্মনিবন্ধন চাইবে দেখে আমি পারব না, এটা তো কথা হতে পারে না। এখন আমাদের সমস্যাগুলো আগে সমাধান করতে হবে। এরপর দীর্ঘমেয়াদে কীভাবে এই সমস্যা সমাধান করতে পারি।

সভায় উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইবরাহিম, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমানসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তরের ৪০ জনের বেশি কর্মকর্তা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ঢাকা মেডিকেলে অনেক লাশের মধ্যে পড়ে ছিল শহীদ রনির লাশ 

এমন বৃষ্টি আর কতদিন?

ইসরায়েলকে প্রতিশোধের রাস্তা দেখিয়ে দিলেন ট্রাম্প

মসজিদ টার্গেট করে চালানো হচ্ছে বিমান হামলা

আর এক জয় দূরে মেসির মায়ামি!

নির্যাতনের তথ্য চেয়ে আ.লীগের বিশেষ বার্তা

পূজায় বুড়িমারীতে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে ৬ দিন

প্রতি সপ্তাহে সহায়তা দেবে জুলাই ফাউন্ডেশন : প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব

আন্দোলনে অস্ত্র উঁচিয়ে গুলি, সেই যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করছে যমুনা গ্রুপ

১০

জনবল নেবে স্যামসাং বয়সসীমা  ২১ থেকে ২৮ বছর 

১১

বায়ুদূষণে শীর্ষে হ্যানয়, ঢাকার খবর কী

১২

সুস্থ থাকতে ভাত নাকি রুটি, কী বলছেন চিকিৎসক

১৩

লিটনের শরীরে ৫ শতাধিক বুলেট

১৪

সপ্তম রাউন্ডে জমে উঠেছে প্রিমিয়ার লিগের লড়াই

১৫

পাচারের টাকায় আমিরাতে মিনি সিটি নিয়ে আসিফের স্ট্যাটাস

১৬

শেরপুরে ভয়াবহ বন্যায় ৭ জনের মৃত্যু

১৭

তিন বিভাগে ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস গবেষকের

১৮

সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার আক্ষেপ জ্যোতির

১৯

১৩ জেলায় দুপুরের মধ্যে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের শঙ্কা

২০
X