কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৫:৫৪ পিএম
আপডেট : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৫:৫৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

বায়ুদূষণে বছরে একজনের চিকিৎসা ব্যয় ৪ হাজার টাকা

বাংলাদেশ বায়ুদূষণে প্রায়ই শীর্ষে থাকে। ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশ বায়ুদূষণে প্রায়ই শীর্ষে থাকে। ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা শহরের প্রধান সমস্যা হচ্ছে যানজট। প্রতি দুই ঘণ্টায় ৪৬ মিনিট রাস্তায় বসে থাকতে হচ্ছে। এতে জ্বালানি পুড়ছে, সময় অপচয় হচ্ছে। সর্বোপরি উৎপাদনশীলতা নষ্ট হচ্ছে। আর বায়ুদূষণের ফলে মানুষ স্বাস্থ্যের যে ক্ষতি হচ্ছে, তার চিকিৎসায় একজন মানুষকে বছরে চার হাজার টাকা খরচ করতে হচ্ছে। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) একটি গবেষণায় এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

আজ বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে ‘সবুজ নগরীর জন্য দূষণ কমানো’ শীর্ষক সংলাপের মূল প্রবন্ধে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়।

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে গবেষণাপত্র উপস্থাপনা করেন সিনিয়র রিসার্চ ফেলো সৈয়দ ইউসুফ সাদাত।

উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার বলেন, সড়ক তৈরিতে প্রধানমন্ত্রীকে ধোঁকা দিয়ে ফাইল পাস করে গাছ কাটা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এখন বুঝে গেছেন। কোনো ফাইল এলেই সেই প্রকল্পে গাছ কাটা হচ্ছে কি না, পরিবেশের কোনো ক্ষতি হচ্ছে কি না, তা যাচাই করে ফাইল পাস করেন। পরিবেশসম্মত নয়, এমন অনেক ফাইল তিনি ফিরিয়ে দিয়েছেন।

তিনি বলেন, আমাদের আইন অনেক আছে কিন্তু আইন বাস্তবায়নের দিকে মনোযোগ নেই। এটি শুধু পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়, সব ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আমাদের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। শ্রদ্ধাশীল না হলে আমাদের অনেক মত ও পথ থাকলেও লক্ষ্য পূরণ হচ্ছে না। এছাড়া পরিবেশের উন্নয়নে আগে ব্যক্তি মানুষকে সচেতন হতে হবে। ব্যক্তি মানুষ সচেতন না হলে গোলটেবিলে পরিবেশ রক্ষার কথা বলে বাসায় গিয়ে পরিবেশ দূষণে পলিথিন ব্যবহার করবে। সচেতন না হলে আইন দিয়ে পলিথিন উৎপাদন বন্ধ করা যাবে না, ব্যবহার বন্ধ হবে না। এ থেকে সৃষ্ট পরিবেশেরও ক্ষতি রোধ করা যাবে না।

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, আমাদের অর্থনৈতিক উন্নতি হয়েছে বটে কিন্তু তা হচ্ছে পরিবেশকে ধ্বংস করে। পরিবেশ না বাঁচিয়ে উন্নয়ন করলে সে উন্নয়ন টেকসই হবে না। পরিবেশ দূষণের প্রধান দুটি উৎস হলো বায়ু ও পলিথিন। এ ছাড়া নির্মাণ, যানবাহন, শিল্প, ইটের ভাটা থেকে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। ঘরের বাইরে ভেতরে দুই পর্যায়েই এ ক্ষতি হচ্ছে। ঘরের ভেতরে ইলেকট্রনিক পণ্য, ফ্রিজ, ফ্যান, এমনকি বাজারে ব্যবহৃত পলিথিন ঘরে এসে পরিবেশের ক্ষতি করছে। এ ক্ষতি মারাত্মকভাবে শিশুদেরও ওপরও পড়ছে। এ ক্ষতি থেকে আইনি পদক্ষেপ যেমন দরকার, আবার সচেতনতাও দরকার।

সেমিনারে পরিবেশ রক্ষায় সিপিডি বেশ কিছু সুপারিশ করেছে। সিপিডির সুপারিশগুলো হলো- ইটের ভাটা ও কয়লাচালিত বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র পর্যায়ক্রমে বন্ধ করে দেওয়া। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর ইটের ভাটা তুলে দেওয়া। সরকার ১০টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়ার কথা ভাবছে, সেগুলো নতুন করে চালু না হয়। কয়লা থেকে সরে এসে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রণোদনা দেওয়া। যারা প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদন ও বিক্রি করছে, তাদের শাস্তির আওতায় আনা। কর বাড়িয়ে প্লাস্টিক কারখানাকে নিরুৎসাহিত করলে জনগণের ওপর চাপ সৃষ্টি হবে। প্লাস্টিক পণ্য বাদ দিয়ে বিকল্প পরিবেশসম্মত কাগজ বা কাপড়ের পণ্য উৎপাদন করতে চাইলে তাদের প্রয়োজনীয় প্রণোদনা দেওয়া। প্রয়োজনে সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া। যে পরিবেশের দূষণ করবে, তাকে আর্থিক দণ্ড দিতে হবে।

আর্থিকসহ আরও যেসব শাস্তির অধীনে আনা যায়, সেগুলো নিশ্চিত করা। পরিবেশ সহায়ক নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে ভর্তুকি বাড়ানো। এ সম্পর্কিত আইন ও নীতিমালাগুলো হালনাগাদ করা। আইন প্রয়োগ করতে যেসব প্রতিষ্ঠান রয়েছে, সেগুলোকে শক্তিশালী করা; জবাবদিহি সৃষ্টি করা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা। আইনের সমান প্রয়োগ নিশ্চিত করা, যাতে আইনের ঊর্ধ্বে কেউ চলে না যায়।

জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে সরকারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ারও সুপারিশ করেছে বেসরকারি খাতের গবেষণা সংস্থা সিপিডি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বৃহস্পতিবার রাজধানীর যেসব এলাকায় যাবেন না

সমাজ ও রাষ্ট্রের শত্রুরা ওত পেতে আছে

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ গ্রেপ্তার

‘গণহত্যায় উসকানিদাতা কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিকদেরও বিচারের আওতায় আনা হবে’

জাবিতে গণধোলাইয়ের শিকার সাবেক ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু ঘিরে রহস্য

বৈদেশিক ঋণ আবার ছাড়িয়েছে ১০০ বিলিয়ন ডলার

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা পদক পেলেন নৌবাহিনীর ২শ’ সদস্য

সিলেট জেলা ও মহানগর যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা

জাহাঙ্গীরনগরে সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে গণপিটুনি, হাসপাতালে মৃত্যু

ডিপিডিসি কর্মকর্তা-কর্মচারী সমবায় সমিতির নতুন কমিটি

১০

সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান হয়ে আলী রীয়াজের ফেসবুক স্ট্যাটাস

১১

আলজাজিরার অনুসন্ধান / যুক্তরাজ্যে ৩৬০টি বাড়ি কিনেছেন সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী

১২

রূপপুর পারমাণবিকের প্রথম ইউনিটে ডামি ফুয়েল লোডিং শুরু

১৩

মহেশখালী থেকে অস্ত্রসহ একজনকে আটক করেছে নৌবাহিনী

১৪

নকল সোনার মূর্তি দিয়ে প্রতারণা, গ্রেপ্তার ২

১৫

কুমিল্লায় ট্রাকচাপায় প্রবাসী যুবক নিহত

১৬

ভুল সংশোধনী ও দুঃখ প্রকাশ

১৭

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে যানজট নিরসনে পুলিশের অভিযান

১৮

মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে হেরে গেলেন গৃহবধূ শারমিন

১৯

সন্তানকে পানিতে চুবিয়ে হত্যার অভিযোগ, সৎ মা আটক

২০
X