বাংলাদেশ ম্যধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার সাথে শ্রমিকের চাহিদারও পরিবর্তন হয়েছে। শ্রমিকের বড় খরচ সন্তানের লেখাপড়া, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা এবং পরিবহন। যা মজুরি কাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত নয়। তাই মজুরি বৃদ্ধির সাথে সাথে মজুরির কাঠামোগত পরিবর্তন প্রয়োজন।
নারীপক্ষ’র আয়োজনে সাভার প্রেস ক্লাবের সামনে আজ রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) ‘ন্যায্য মজুরির লড়াইয়ে নারী সমাজ’ বিষয়ক অবস্থান কর্মসূচিতে বিশিষ্টজনরা এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন নারীপক্ষ’র সদস্য রওশন আরা। লিফলেট পাঠ করেন পল্লী ও পরিবেশ উন্নয়ন সংস্থার কোষাধ্যক্ষ অরিত্রি বিনতে আতিকা।
বংশাল মহিলা সমিতির সভানেত্রী পারুল ইসলাম বলেন, নারী শ্রমিকরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তিনি তাদের ন্যায্য ন্যূনতম মজুরি মাসিক ২৫ হাজার টাকা প্রদানের দাবি জানান।
পল্লী ও পরিবেশ উন্নয়ন সংস্থার সভানেত্রী কামরুন নাহার খানের মতে, নিত্যপ্রয়োজনী দ্রব্যের দাম অতিরিক্ত বৃদ্ধি পাওয়ায় সংসার চালাতে পারছেন না।
নবীন মহিলা কল্যাণ সমিতির সভানেত্রী ইয়াসমিন জাহান বলেন, মজুরি কম হওয়ায় নারী শ্রমিকরা পরিবারের চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে নিজেরা প্রয়োজন অনুযায়ী খাবার খায় না বিধায় তারা অপুষ্টিতে ভুগছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে কয়েকটি দাবি উত্থাপন করেন।
অবিলম্বে পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম সঙ্গতিপূর্ণ শ্রমের মজুরি ঘোষণা করতে হবে। ৬৫ শতাংশ বেসিক নিশ্চিত, মজুরি নির্ধারণ না হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ৬০ শতাংশ মহার্ঘ্যভাতা দেওয়া।
সব গ্রেডে জীবন যাত্রার ব্যয়ের সাথে সংগতি রেখে মজুরি বৃদ্ধির সুযোগ থাকা। গ্রেড বৈষম্য দূর করতে মজুরি কাঠামো পরিবর্তন করা। প্রচলিত ৭টি গ্রেডের বদলে ৫টি গ্রেড করা। সোয়েটার ও পিস রেটে কর্মরত শ্রমিকদের কাজের আগে মজুরি নির্ধারণ ও ডাল সিজনে পূর্ণ বেসিক দেওয়া, সোয়েটারে ৩ শিফট ও ওভারটাইম নিশ্চিত করা। ইপিজেড-ইপিজেডের বাইরে সব কারখানায় সমান হারে মজুরি বৃদ্ধি ও মূল মজুরির ১০ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট দেওয়া। বাধ্যতামূলক অংশীদারিত্বমূলক প্রভিডেন্ট ফান্ড চালু করা। তৈরি পোশাক শিল্পে যেহেতু বেশির ভাগ নারী কর্মরত রয়েছে তাই মজুরি বোর্ডে নারীর অংশগ্রহণ ও সিদ্ধান্ত প্রক্রিয়ায় নারী সদস্য অন্তর্ভুক্ত করা।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত প্লাকার্ড প্রদর্শন ও লিফলেট বিতরণ করা হয়। শ্রমিকের ন্যায্য মজুরির দাবিতে স্থানীয় সমমান নারী সংগঠন, ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠন এর প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন এবং নারীপক্ষের সদস্য রওশন আরা সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে আন্দোলন চলমান থাকার পরামর্শ দেন।
মন্তব্য করুন