কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৬:৫৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

‘অসাধু ব্যবসায়ীদের জন্য এফবিসিসিআই অ্যাডভোকেসি করবে না’

ছায়া সংসদে বিজয়ী দলের সঙ্গে এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ. এইচ. এম সফিকুজ্জামান ও ডিবেট ফর ডেমোক্র্যাসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ ।
ছায়া সংসদে বিজয়ী দলের সঙ্গে এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ. এইচ. এম সফিকুজ্জামান ও ডিবেট ফর ডেমোক্র্যাসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ ।

যে কোনো সৎ ব্যবসায়ীর জন্য এফবিসিসিআই পাশে থাকবে আর অসৎ ব্যবসায়ীর জন্য বিপক্ষে দাঁড়াবে বলে জানিয়েছেন এফবিসিসিআই’র সভাপতি মাহবুবুল আলম। তিনি বলেন, কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে যারা দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে, তারা ব্যবসায়ী নয়। এফবিসিসিআই অসাধু ব্যবসায়ীদের জন্য কোনো অ্যাডভোকেসি করবে না। কৃত্রিম সংকট যারা করে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পণ্যের সংকট সৃষ্টি ও বাজার অস্থিরতার সাথে জড়িত প্রতিষ্ঠান যত বড় প্রভাবশালী হোক না কেন আমরা তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেব। ডলার সংকটের কারণে ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা পণ্য আমদানি করতে পারছে না।

সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর তেজগাঁওস্থ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে খাদ্যদ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি ও বৈশ্বিক পরিস্থিতি নিয়ে এক ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠনের প্রধান অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআইর সভাপতি মাহবুবুল আলম এসব কথা বলেন। ডিবেট ফর ডেমোক্র্যাসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ. এইচ. এম সফিকুজ্জামান।

এফবিসিসিআইর সভাপতি আরও বলেন, মুক্তবাজার অর্থনীতিতে সিন্ডিকেট করা সহজ নয়। চাহিদা ও জোগানের সাথে মিল রেখে সাপ্লাই চেইন ঠিক থাকলে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। তবে দ্রব্যমূল্যের দাম সহনীয় রাখতে হলে আমদানি পণ্যের ওপর কর ছাড় দেওয়া উচিত। এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে দেশীয় উৎপাদন খাত যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্র্যাসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, নানা পদক্ষেপ নেওয়া সত্ত্বেও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখা যাচ্ছে না। আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের হিসাব মেলাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য বৈশ্বিক পরিস্থিতিকে দায়ী করা হলেও এর পেছনে সুশাসনের অভাব, রাজনৈতিক সদিচ্ছা, সরকারি সংস্থাগুলোর অদক্ষতা ও সমন্বয়হীনতা অনেকাংশে দায়ী। বাজার নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে বড় বাধা অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে না পারা। এক বছরের ব্যবধানে খাদ্যদ্রব্যসহ অধিকাংশ পণ্যের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। বাজারে নিত্যপণ্যের যে উত্তাপ তা সাধারণ মানুষকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। নিম্ন আয়ের মানুষরা ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে স্বল্পকিছু পণ্য ন্যায্যমূল্যে কিনতে পারলেও মধ্যবিত্তদের যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। করোনা পরবর্তীতে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়ে। আবার অন্যদিকে ডলারের দাম বৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতিসহ নিয়ন্ত্রিত আমদানি খাদ্যদ্রব্যের দাম বৃদ্ধি করছে। তবে পণ্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য, পরিবহন ভাড়া, রাস্তায় পদে পদে চাঁদাবাজি, সাপ্লাই চেইনের দুর্বলতা ও বিপণন ব্যবস্থার ত্রুটিও এর জন্য দায়ী।

তিনি বলেন, আমরা সবসময় দেখি ব্যবসায়ীরা সরকারের নানা সাফল্য নিয়ে প্রশংসা করেন। এফবিসিসিআইসহ বড় বড় ট্রেডবডিগুলো সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে অহংকার করে। কিন্তু দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে এসব ব্যবসায়ীর মধ্যে অনেকেই সরকারকে সহযোগিতা করে না। বরং সুযোগ পেলেই সিন্ডিকেট করে দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে দেয়। যা সাধারণ মানুষের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই ব্যবসায়ীদের উচিত শুধু সরকারের প্রশংসা নয়, জনগণকে স্বস্তি দিতে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারকে সহযোগিতা করা। চিনি, ভোজ্যতেল, ডিম, ব্রয়লার মুরগিসহ খাদ্য দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সাথে জড়িত মূল হোতারা বারবার ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। আমরা ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে নই। তবে আমরা ওইসব ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে, যারা সরকারকে বিব্রত করার জন্য বাজার সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে সাধারণ জনগণের নাভিশ্বাস তুলে দিচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ডিমের উৎপাদন নিয়ে সরকার ও বেসরকারি উদ্যোক্তাদের মধ্যে তথ্যের গরমিল দেখা যায়। সরকার বলছে, ডিমের উৎপাদন বেড়েছে। বেসরকারি উদ্যোক্তারা বলছে, ডিমের উৎপাদন কমেছে। সরকারি হিসাবে জুলাই মাসে ডিমের উৎপাদন হয়েছে ২১০ কোটি। আর বেসরকারি উদ্যোক্তারা বলছেন, জুলাইয়ে ডিমের উৎপাদন ১১৬ কোটি। আবার আলুর উৎপাদন নিয়েও সরকারি ও বেসরকারি হিসেবে তথ্য ভিন্ন। তাহলে কোনটি সত্য?

‘বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতি খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির জন্য প্রধানত দায়ী’ শীর্ষক ছায়া সংসদে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়কে পরাজিত করে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, সাংবাদিক ড. শাকিলা জেসমিন, সাংবাদিক আরিফুর রহমান, সাংবাদিক সুশান্ত সিনহা ও সাংবাদিক মো. শারফুল আলম। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আজকের নামাজের সময়সূচি

শহীদ আমিনুলের সন্তানদের দায়িত্ব নিল ইত্তেফাকুল উলামা

রোববার রাজধানীর যেসব এলাকায় যাবেন না

মিছিলে বিএনপি নেতার গুলির প্রতিবাদে বিক্ষোভ

রৌমারীতে ব্যবসায়ীদের আহ্বায়ক কমিটির শপথ অনুষ্ঠিত

৬৫ ভরি স্বর্ণ ছিনিয়ে নেয়ায় মামুনের বিরুদ্ধে যুবদলের মামলা

আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ইসলামী আন্দোলনে যোগদান

ক্ষমা পেয়ে আমিরাত থেকে ১২ জন ফিরছেন চট্টগ্রামে

‘ছাত্র জনতার আন্দোলনে হাসিনা সরকার দুই ভাবে পরাজিত’

মহানবীকে (সা.) কটূক্তিকারী সেই যুবকের বিরুদ্ধে মামলা

১০

শিবচর আঞ্চলিক সড়কে গ্রামবাসীর বৃক্ষরোপণ

১১

মাদ্রাসাছাত্রকে বলাৎকার চেষ্টার অভিযোগ ধামাচাপা, ৭ দিন পর ফাঁস

১২

১২ দিনেও মেলেনি রানীনগরে নিখোঁজ নার্গিসের সন্ধান

১৩

দায়িত্বশীলদের নিয়ে সাতক্ষীরায় ছাত্র শিবিরের সমাবেশ

১৪

আযহারী শিক্ষার্থীরা হবে বাংলাদেশ ও মিশরীয় ঐতিহ্যের সেতুবন্ধন : মিশরীয় রাষ্ট্রদূত

১৫

রাজশাহীতে বস্তাভর্তি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার

১৬

আন্দোলনের ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ছাত্রলীগ কর্মীকে গণধোলাই

১৭

আশুলিয়ায় গার্মেন্টস শ্রমিক অসন্তোষ ও ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে শ্রমিক সমাবেশ

১৮

কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি

১৯

পাকিস্তানের জলসীমায় বিপুল তেল-গ্যাস মজুতের সন্ধান

২০
X