ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের ব্যর্থতার দায় রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের দুই মেয়র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে নিতে হবে বলে প্রতিবাদ জানিয়েছে স্বাস্থ্য সুরক্ষা আন্দোলন।
রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে স্বাস্থ্য সুরক্ষা আন্দোলন আয়োজিত মানববন্ধনে সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক নাজমুল হাসান এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা এমন একটি সময়ে দাঁড়িয়ে আছি, যখন ডেঙ্গুতে লাশের মিছিল বইছে। বাবা-মায়েরা তাদের সন্তান হারাচ্ছে, সন্তানরাও তাদের বাবা-মাকে হারাচ্ছে। অতীতের তুলনায় ইতোমধ্যে ডেঙ্গুর সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। এর দায় দুই মেয়র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীকেই নিতে হবে। আপনারা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা পালন করুন নয়তো দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন। এর ব্যত্যয় ঘটলে আমরা পদত্যাগ করাতে বাধ্য করব।
সিটি করপোরেশন ও প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ডেঙ্গু এখন মহামারি আকার ধারণ করেছে। এ ছাড়া হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নেওয়ার জায়গা নেই। এমনকি ভুল চিকিৎসাতেও অনেকে মারা যাচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে স্যালাইন পাওয়া যাচ্ছে না। ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের শুরুতে মশা নিয়ন্ত্রণে সঠিক কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। মাঝেমধ্যে ফগার মেশিন দিয়ে ধোঁয়া ছাড়া হয়েছে। অপরদিকে ডেঙ্গু মহামারির সময় মেয়র বিদেশ ভ্রমণে গেছেন। এই ডেঙ্গুকে কেন্দ্র করে কোটি কোটি টাকা দুর্নীতি হয়েছে। আমাদের দাবি হলো, কীটতত্ত্ববিদদের পরামর্শক্রমে ডেঙ্গু মশা নিধনের ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
মানববন্ধনে বক্তারা দাবি জানিয়ে বলেন, রাজধানীসহ সারা দেশে সনাতন পদ্ধতিতে নয়, কীটতত্ত্ববিদদের নেতৃত্বে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে এডিস মশা নিধন অভিযান শুরু করতে হবে। বছরব্যাপী এডিস মশা বিস্তারের ওপর নজরদারি করা, নিয়মিত জরিপ করা, লার্ভা যথাসময়ে ধ্বংস করা, সিটি করপোরেশন-পৌরসভায় কীটতত্ত্ববিদ নিয়োগ করা, ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা এবং এজন্য প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ করতে হবে। অবিলম্বে জরুরি স্বাস্থ্য অবস্থা ঘোষণা করে জনগণকে রক্ষায় ২৪ ঘণ্টা তৈরি থাকা, ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও শনাক্ত করা এবং ডেঙ্গুবিস্তার রোধে কার্যকর সাড়া দেওয়ার কাজ সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সিটি করপোরেশনকে করতে হবে। এ ছাড়া মশক নিধন ও ডেঙ্গুর বিস্তাররোধে সিটি করপোরেশন ও স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
মো. রাকিবের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য সুরক্ষা আন্দোলনের সদস্য রিদওয়ান উল্লাহ খান, মুনিরা আঞ্জুম, মো সালমান, বাপ্পি, ইউসুফ হোসেন, আরাফাত হোসেন, আফতাব মাহমুদ এবং কাওসার হোসেন প্রমুখ।
মন্তব্য করুন