দক্ষিণ এশিয়ায় সৌর, বায়ু ও জলবিদ্যুৎ উৎপাদন সম্পর্কিত প্রকল্পে ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশের সামিট গ্রুপ। সবুজ জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ এবং জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক ব্যবসায় বৈচিত্র্য আনার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই এমন পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব তথ্য জানিয়েছেন সামিট গ্রুপের চেয়ারমান আজিজ খান।
আজিজ খান বলেন, ভারতে ব্যাটারি স্টোরেজসহ এক হাজার মেগাওয়াট সৌর ও বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ করবে সামিট পাওয়ার ইন্টারন্যাশনাল। আমরা বড় বড় ভারতীয় কোম্পানির সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করেছি। এটি বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে সস্তায় বিদ্যুৎ হবে। এমনকি এটি প্রাকৃতিক গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুতের চেয়েও সস্তা হবে।
বাংলাদেশে সামিট গ্রুপ এক ডজনের বেশি জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ইউনিট পরিচালনা করে। এলএনজি আমদানি পরিচালনার জন্য দেশের দুটি ভাসমান স্টোরেজ ও রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিটের (এফএসআরইউ) একটির মালিক এই সামিট গ্রুপ। তারা ভুটান ও নেপালে ৭০০ মেগাওয়াটের জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে বলেও জানিয়েছেন আজিজ খান।
সামিটের চেয়ারমান বলেন, বিশ্বব্যাপী এলএনজির দাম এখনো চড়া। এগুলো বাংলাদেশের প্রধান প্রধান খাতে চাহিদা বিনষ্ট করছে। এর ফলে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে এবং ঘন ঘন লোডশেডিং হচ্ছে।
গত দশক থেকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কেন্দ্রবিন্দুতে এলএনজি। এ সময়ে দেশের লাখ লাখ মানুষ প্রথমবারের মতো বিদ্যুৎ পেয়েছে। গত দশকের শেষভাগে এই গ্যাসের মাধ্যমে দেশের তিন ভাগের দুই ভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে।
তবে চলতি বছর বেশ কয়েকটি কারণে এক দশকের মধ্যে চরম বিদ্যুৎ সংকটের সম্মুখীন হয়েছে বাংলাদেশ। এদের মধ্যে রয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে বিশ্ববাজারে এলএনজির মূল্যবৃদ্ধি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ায় জ্বালানি আমদানির অর্থ পরিশোধে জটিলতা, চরম আবহাওয়ায় বিদ্যুতের বাড়তি চাহিদা।
২০২৬ সালের এপ্রিলের মধ্যে দ্বিতীয় এফএসআরইউ কাজ শুরু করবে বলে জানিয়ে আজিজ খান বলেন, নতুন সরবরাহ থাকায় এলএনজির দাম নিম্নমুখী হবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এই শীতের পরই গ্যাসের দাম কমবে।
মন্তব্য করুন