ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) পদ থেকে বরখাস্ত হওয়ার পর এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া নিরাপত্তাহীনতার কারণে শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সপরিবারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে আশ্রয় নেন। পরে রাতে নিরাপত্তার আশ্বাসে তিনি রাতে বাসায় ফিরে যান।
এর আগে ডিএজি এমরানকে তার পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে আইন মন্ত্রণালয়।
পরিবারকে নিয়ে এমরান নিরাপত্তা চেয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে যাওয়ার বিষয়টি আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘এই জন্যই তো নাটক সাজিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে যেতে চায়, বিষয়টি আমি দেখছি।’
মার্কিন দূতাবাসে যাওয়ার কারণ জানিয়ে এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বক্তব্যে তিনি আশঙ্কা করেছিলেন যে, তাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে। তাই মার্কিন দূতাবাসে গিয়েছিলেন। তবে তার কোনো ক্ষতি হবে না, সে বিষয়ে আশ্বস্ত হয়ে বাসায় ফিরেছেন।
এমরান আহম্মদ আরও বলেন, আমার পরিবারের সঙ্গে পুলিশ পাহারা রয়েছে।
জানা যায়, আজ বন্ধের দিন হওয়ায় নিরাপত্তাকর্মীরা মার্কিন দূতাবাসের ভেতরে যেতে বাধা দেন। মূল ফটকের পাশে একটি কক্ষে তাদের বসতে দেওয়া হয়। তবে, পরে তাদের দূতাবাসের ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বেশকিছু সময় পরিবারসহ অবস্থান করেন। এরপর সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটের দিকে নিরাপত্তার আশ্বাসে ইমরান আহম্মদ ভূঁইয়াসহ তার পরিবারের সদস্যরা দূতাবাসের ভিসা গেট দিয়ে একটি মাইক্রোবাসে (ঢাকা মেট্রো-গ ২৮-০৪৭৮) লালমাটিয়ার বাসার উদ্দেশে বের হয়ে যান।
ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার মো. শহিদুল্লাহ গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে বাসায় ফিরে গেছেন।
ঘটনাস্থল থেকে সাংবাদিকরা জানান, সন্ধ্যা ৬টা ৩৮ মিনিটে দূতাবাসের বাইরে থেকে একটি গাড়ি আসে। সেই গাড়িতে পরিবারসহ দূতাবাস ছেড়ে যান এমরান।
শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিষয়ে বিবৃতিসংক্রান্ত বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় আসেন এমরান আহম্মদ।
ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘন ও দুর্নীতির মামলা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে খোলা চিঠি (বিবৃতি) পাঠিয়েছিলেন বিশ্বের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃত্বস্থানীয় দেড় শতাধিক ব্যক্তি। তাদের মধ্যে শতাধিক নোবেলজয়ী রয়েছেন। এ বিষয়ে গত সোমবার হাইকোর্টের বর্ধিত ভবনের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, ড. ইউনূস একজন সম্মানিত ব্যক্তি। তার সম্মানহানি করা হচ্ছে এবং এটি বিচারিক হয়রানি।’
শতাধিক নোবেলজয়ীর ওই খোলা চিঠির বিপরীতে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দেওয়ার কথা রয়েছে- এমন দাবি করে এমরান আহম্মদ বলেন, ‘অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে কর্মরত সবাইকে এতে স্বাক্ষর করার জন্য নোটিশ করা হয়েছে। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করব না।’
এর পরদিন মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের আইনমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি (এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া) অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন ডিএজি (ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল)। তিনি যদি সাংবাদিকদের সামনে কথা বলেন, তাহলে তাকে হয় পদত্যাগ করে কথা বলা উচিত অথবা অ্যাটর্নি জেনারেলের অনুমতি নিয়ে কথা বলা উচিত। তিনি সেটি করেননি।
মন্তব্য করুন