নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষে বিশ্বনেতাদের চিঠিকে বাংলাদেশের স্বাধীন বিচারব্যবস্থার ওপর হস্তক্ষেপ বলে মনে করছেন দেশের বিভিন্ন পত্রিকার ৫০ সম্পাদক। এটি একটি সার্বভৌম দেশের স্বাধীন বিচাব্যবস্থার ওপর অযাচিত হস্তক্ষেপ উল্লেখ করে তারা এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা এ প্রতিবাদ জানান।
বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৪(৪)’ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বাংলাদেশের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণরূপে স্বাধীন।
এ ধরনের চিঠি প্রদানের মাধ্যমে তারা অনৈতিক, বেআইনি ও অসাংবিধানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীন বিচারব্যবস্থার ওপর হস্তক্ষেপ করেছেন বলে আমরা মনে করি। এ ধরনের বিবৃতি বা খোলা চিঠি আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এবং বাংলাদেশের আইনে শ্রমিকদের প্রদত্ত অধিকারসংক্রান্ত বিধানাবলির সম্পূর্ণ পরিপন্থি।’
বিবৃতিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিকভাবে সম্মানিত এবং নোবেল বিজয়ীগণের এ ধরনের বিবৃতি এবং চিঠি অনাকাঙ্ক্ষিত এবং অনৈতিক। একজন অপরাধ করলে তার বিরুদ্ধে মামলা করা যাবে না এবং বিচার করা যাবে না- এমন দাবি ন্যায়বিচার এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পরিপন্থি।
আমরা মনে করি তারা মামলা সম্পর্কে পুরোপুরি না জেনে এমন দাবি করেছেন। তাই আমরা তাদের অথবা তাদের প্রতিনিধি এসে মামলায় ড. ইউনূসকে আদৌ হয়রানি করা হচ্ছে কি না, তা তারা পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের এই আহ্বান জানিয়েছেন আমরা তা সমর্থন করি।
এতে বলা হয়, একই চিঠিতে বাংলাদেশের গণতন্ত্র এবং নির্বাচনসংক্রান্ত বিষয়ে যে ধরনের মন্তব্য করা হয়েছে, তা স্বাধীন-সার্বভৌম একটি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সরাসরি হস্তক্ষেপের শামিল।
মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশের জনগণ যে কোনো মহলের এ ধরনের অবমাননাকর, অযাচিত ও বেআইনি হস্তক্ষেপ কোনোভাবেই মেনে নেবে না। আমরা সংশ্লিষ্ট সবাইকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, স্বাধীন বিচারব্যবস্থা এবং শ্রমিকদের অধিকারের বিষয়ে সম্মান প্রদর্শনের জন্য আহ্বান জানান তারা।
বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন-
ডেইলি অবজারভারের সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, আজকের পত্রিকার সম্পাদক গোলাম রহমান, ইত্তেফাকের সম্পাদক তাসমিমা হোসেন, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, কালের কণ্ঠ’র প্রধান সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, সমকালের সম্পাদক আলমগীর হোসেন, যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, ইউএনবির সম্পাদক ফরিদ হোসেন, ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, ইমেরিটাস এডিটর নাঈমুল ইসলাম খান, সংবাদের সম্পাদক আলতামাশ কবির, পিপলস টাইমের সম্পাদক আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া, ডেইলি সানের সম্পাদক রেজাউল করিম লোটাস, বাংলাদেশ জার্নালের সম্পাদক শাহজাহান সরদার, আমাদের নতুন সময়ের সম্পাদক নাসিমা খান মন্টি, বাংলাদেশ বুলেটিনের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রতন, আজকালের খবরের সম্পাদক ফারুক আহমেদ তালুকদার, কালবেলার সম্পাদক সন্তোষ শর্মা, বাংলাদেশ পোস্ট সম্পাদক শরীফ শাহাবুদ্দিন, জনকণ্ঠ সম্পাদক শামীমা এ খান, সময়ের আলোর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কমলেশ রায়, প্রতিদিনের বাংলাদেশের সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি, দেশ রূপান্তর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোস্তফা মামুন, ভোরের ডাকের সম্পাদক বেলায়েত হোসেন, দৈনিক বাংলার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত, আলোকিত বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক শামীম সিদ্দিকি, সংবাদ সারাবেলার সম্পাদক আব্দুল মজিদ, সংবাদ প্রতিদিনের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক রিমন মাহফুজ, বাংলাদেশের আলোর সম্পাদক মফিজুর রহমান খান, ঢাকা টাইমস সম্পাদক আরিফুর রহমান দোলন, সকালের সময়ের সম্পাদক নুর হাকিম, আমার বার্তার সম্পাদক মো. জসিমসহ ৫০ জন।
মন্তব্য করুন