জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভেঙে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা নামে দুটি আলাদা বিভাগ করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। আর প্রতিষ্ঠানটির সক্ষমতা বাড়াতে সরকারের এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানান এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তবে বিপত্তি বাধে দুই বিভাগে আয়কর ও শুল্ক বিভাগের জন্য না রেখে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সচিব করার সুযোগ নিয়ে।
আয়কর ও শুল্ক ক্যাডারদের দেওয়া প্রস্তাব বিবেচনায় না নিয়ে তৈরি হয় অধ্যাদেশের খসড়া। এই খসড়া সামনে আসায় ক্ষোভ বাড়ে কর্মকর্তাদের মাঝে। ইতোমধ্যে বিসিএস কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট অ্যাসোসিয়েশন বিষয়টি নিয়ে বিবৃতিও দিয়েছে। আয়কর ক্যাডারদের অ্যাসোসিয়েশন আগামী শনিবার (৩ মে) বিশেষ সাধারণ সভা ইজিএমও আহ্বান করেছে। এসব বিবেচনায় না নিয়ে এরই মধ্যে এনবিআর চেয়ারম্যান অধ্যাদেশের খসড়ার ভেটিং সম্পন্ন করছেন এমন খবরে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেন কর্মকর্তারা এবং অবরুদ্ধ করে রাখেন। এনবিআর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এনবিআর সূত্র জানায়, আইএমএফের প্রোগ্রাম শেষ করে আমেরিকা থেকে দেশে ফিরেই তড়িঘড়ি ভেটিংয়ের কাজ শেষ করার চেষ্টা করেন এনবিআর চেয়ারম্যান। আর এই খবরে কর্মকর্তাদের মাঝে আরও ক্ষোভ বাড়তে থাকে।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সচিবালয়ে অফিস করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান। সচিবালয় থেকে বিকেল ৫টায় এনবিআরে প্রবেশ করতেই তার কক্ষের সামনে অবস্থান নেন আয়কর ও শুল্ক ক্যাডারের কর্মকর্তাসহ এনবিআরের অন্য কর্মকর্তারা। তাকে প্রায় তিন ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন। তারা এনবিআর চেয়ারম্যানকে নিজ দপ্তরে অবরুদ্ধ করে রাখেন। অবরুদ্ধ অবস্থায় এনবিআরের কনফারেন্স রুমে কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তিনি কর্মকর্তাদের শান্ত করার চেষ্টা করে বার বার ব্যর্থ হন। একইসঙ্গে আয়কর ও শুল্ক ক্যাডারের কর্মকর্তারা এই ডিপার্টমেন্টকে ধ্বংস করে দেওয়ার অভিযোগও তোলেন তার বিরুদ্ধে।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত দুই ক্যাডারের কর্মকর্তাদের তোপের মুখে ভেটিং বন্ধ করতে লেজিসলেটিভ সচিবকে ফোন করে ভেটিং বন্ধ করার অনুরোধ করেন। একইসঙ্গে দুই ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনকে উপদেষ্টার বৈঠক করার সুযোগ আশ্বাস দিয়ে ফের তার কক্ষে যান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা কালবেলাকে বলেন, বৈঠকে আজ এনবিআর চেয়ারম্যানের কথা কেউ শুনে নাই। সবাই বলছে, আপনি এই ডিপার্টমেন্ট দিয়ে চাকরি শুরু করে এই ডিপার্টমেন্টের ক্ষতি করলেন বলেও সামনাসামনি অভিযুক্ত করেন।
মন্তব্য করুন