অপহরণের আড়াই মাসেও সন্ধান মেলেনি মুন্সীগঞ্জের বালু ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম লিখনের। গত ৬ ফেব্রুয়ারি তিনি ঢাকা থেকে মুন্সীগঞ্জ যাওয়ার জন্য বের হন। তিনি মুন্সীগঞ্জ পৌঁছলেও তার আর খোঁজ মেলেনি। ওই ঘটনায় থানায় অপহরণের মামলা হয়।
স্বজনরা জানান, ৩৩ বছর বয়সী লিখন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ালেখা শেষ করেন। এরপর বন্ধু সাদ্দামের সঙ্গে বালুর ব্যবসা করতে বিনিয়োগ করেন। ওই বিনিয়োগের ঝামেলার জেরেই তাকে অপহরণ করা হতে পারে।
রোববার (২৭ এপ্রিল) লিখনের সন্ধান চেয়ে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেন পরিবারের সদস্যরা।
লিখিত বক্তব্যে লিখনের ভাই বাবু হাওলাদার বলেন, তারা ধারণা করছেন ব্যবসায়িক টাকা আত্মসাৎ করার জন্য তার ভাইকে অপহরণ করা হয়েছে। ভাই নিখোঁজের পর জিডি ও অপহরণ মামলা করার ক্ষেত্রে মুন্সীগঞ্জ পুলিশের অসহযোগিতা পেয়েছেন তিনি। পরে জিডি ও মামলা নিলেও তারা মনে করছেন একজন পুলিশ কর্মকর্তা লিখনের অপহরণের ঘটনা ভিন্ন খাতে নিয়ে প্রকৃত অপরাধীকে আড়াল করার চেষ্টা করেছেন। তবে বর্তমানে মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) করলেও তার ভাইয়ের সন্ধান মিলছে না। এতে তারা দিন দিন হতাশ হয়ে পড়ছেন।
লিখন অপহরণের বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, লিখন ৬ ফেব্রুয়ারি বন্ধু সাদ্দামের নিমন্ত্রণে ঢাকার বাসা থেকে মুন্সীগঞ্জ যান। দুটি সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ওই রাতে সাদ্দামের সঙ্গে তার ব্যবসায়িক মিটিংয়ের কথা ছিল। রাত ১১টা ১৪ মিনিটে ফোন করলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ফেসবুক মেসেঞ্জারে কল দিলেও সেটি নিষ্ক্রিয় দেখায়। তখন সাদ্দামকে ফোন দিলে তিনি জানান যে, লিখন সন্ধ্যার দিকে ঢাকার উদ্দেশ্যে চলে গেছে।
পরিবারের অভিযোগ, তাদের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মুন্সীগঞ্জ সদর থানার উপপরিদর্শক সাদ্দাম মোল্লার সঙ্গে অভিযুক্ত সাদ্দামের সম্পর্ক রয়েছে। পুলিশের এই কর্মকর্তা ঘটনাটি ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন। লিখনকে অপহরণের সঙ্গে বন্ধু সাদ্দাম ছাড়াও স্থানীয় ইলিয়াস, রবিন, তপু, তানভীর ও রাজীব জড়িত থাকতে পারেন বলে তাদের সন্দেহ।
অবশ্য অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য নিতে উপপরিদর্শক সাদ্দাম মোল্লার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নিখোঁজ লিখনের বাবা দুলাল হাওলাদার, মা রোজিনা বেগম, বোন মিতু আক্তার ও ফাতেমা বেগম।
মন্তব্য করুন