জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের পর আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া গত বছরের ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন। ১৪ আগস্ট বন্ধু মোয়াজ্জেম হোসেনকে নিজের সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) হিসেবে নিয়োগ দেন আসিফ মাহমুদ। তবে গত ২১ এপ্রিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে তাকে অব্যাহতি দিয়েছে।
এরপর থেকে মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে তদবির, বদলি-বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠতে থাকে বিভিন্ন মহলে।
এমন পরিস্থিতিতে নিজ বন্ধুর বিরুদ্ধে ওঠা নানা অভিযোগের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) তদন্ত করার অনুরোধ জানিয়েছেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া।
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) বিকালে রাজধানীর হেয়ার রোডে নিজের সরকারি বাসভবনে শীর্ষ দৈনিক প্রথম আলোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ অনুরোধ জানান।
আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘যেহেতু এখন তিনি (মোয়াজ্জেম) মন্ত্রণালয়ে কর্মরত নন, সুতরাং মন্ত্রণালয় পর্যায়ে এটা তদন্ত করার সুযোগ নেই। তিনি একজন স্বাধীন ব্যক্তিসত্তা। সেই জায়গা থেকে আমরা দুদককে অনুরোধ করেছি যে আপনারা এটা তদন্ত করুন।’
মোয়াজ্জেম হোসেনকে অব্যাহতির প্রথম প্রজ্ঞাপনে লেখা হয়েছিল তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। পরে শোনা গেল তিনি পদত্যাগ করেছেন। এই বিষয়ে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘সংশোধিত প্রজ্ঞাপন এসেছে। পদত্যাগপত্রের কপিটাও হয়তো আপনারা পেয়েছেন। ২৫ মার্চ সম্ভবত পদত্যাগপত্রটা আমাদের মন্ত্রণালয়ে জমা হয়। ঈদের ছুটির পর পদত্যাগের আবেদনটা গ্রহণ করি। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে অব্যাহতির কথাটা লেখা ছিল। সংশোধিত প্রজ্ঞাপন ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে। সেখানে লেখা আছে যে পদত্যাগের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অব্যাহতি। এখানে একটা “মিসকমিউনিকেশন” হয়েছিল। মোয়াজ্জেমের যখন নিয়োগ হয়, তখনই তিনি আমাকে বলেছিলেন স্থায়ী চাকরির সুযোগ এলে তিনি এই চাকরি (এপিএস) ছেড়ে দেবেন। তার ব্যাংকে চাকরির ভাইভা (মৌখিক পরীক্ষা) এগিয়ে আসছে। বিসিএসেরও লিখিত পরীক্ষা সামনে। সেই জায়গা থেকে মোয়াজ্জেম পদত্যাগের আবেদন করেন এবং আমি তা গ্রহণ করি।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে তদবির, বদলি-বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ বিষয়ে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘তদন্ত হওয়া উচিত এবং তদন্তের জন্য ইতোমধ্যেই আমরা দুদককে (দুর্নীতি দমন কমিশন) বলেছি। যেহেতু এখন তিনি মন্ত্রণালয়ে কর্মরত নন, সুতরাং মন্ত্রণালয় পর্যায়ে এটা তদন্ত করার সুযোগ নেই। তিনি একজন স্বাধীন ব্যক্তিসত্তা। সেই জায়গা থেকে আমরা দুদককে অনুরোধ করেছি যে আপনারা এটা তদন্ত করুন।’
তার মন্ত্রণালয় থেকেও মোয়াজ্জেমের বিষয়ে সাধারণ মানুষের কাছে অভিযোগ চাওয়া হয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তবে বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ আমরা পাইনি।...দুদক স্বাধীন সংস্থা। আমরা অনুরোধ করেছি, তারা এটা তদন্ত করুক। শুধু এটা নয়, স্বাস্থ্য উপদেষ্টার একান্ত সচিবের ব্যাপারেও আমরা তদন্ত করতে বলেছি।’
একই দিন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মুহাম্মদ তুহিন ফারাবীকেও দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
মন্তব্য করুন