দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনাপত্তিপত্র ছাড়াই হজরত শাহজাহালার আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের থার্ড টার্মিনালের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) হিসেবে এ.এইচ. এমডি. নুরউদ্দিন চৌধুরীকে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রোববার (২০ এপ্রিল) বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসরীন জাহানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, পিডি নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে গোয়েন্দা প্রতিবেদন ও দুদকের অনাপত্তি নেওয়ার কথা থাকলেও এ ক্ষেত্রে তা নেওয়া হয়নি। এ ছাড়া পিডি নিয়োগের ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করা হয়েছে। প্রকল্পের ৯৯.৫ শতাংশ কাজ শেষ হওয়ার পর মাত্র শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ কাজের জন্য নতুন পিডি নিয়োগ দেওয়ার যৌক্তিকতা নেই। আগের পিডি দিয়েই কাজ সমাপ্ত করা সম্ভব।
এর আগে, হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল প্রকল্পের জন্য তিনজনকে নতুন প্রকল্প পরিচালক (পিডি) হিসেবে প্রস্তাব করে মন্ত্রণালয়ে নাম পাঠায় বেবিচক। তারা হলেন- প্রকৌশলী শুভাশিষ বড়ুয়া, মো. শরিফুল ইসলাম ও এ.এইচ. এমডি. নুরউদ্দিন চৌধুরী।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর এ.কে.এম মাকসুদুল ইললামের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল হওয়ার পর পিডি শূন্য হয়ে পড়ে থার্ড টার্মিনাল প্রকল্পে। এ সময় প্রকল্পের কাজে স্থবিরতা দেখা দেয়। নতুন পিডি নিয়োগের জন্য জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই এবং দুদকের অনাপত্তি বা তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা বা অনুসন্ধনা চলমান আছে কি না সেটি জানার প্রয়োজন হয়। এ দুটি অনাপত্তি পেতে দীর্ঘ সময় ব্যয় হয়। পরবর্তীতে প্রায় তিন মাস পর প্রকৌশলী জাকারিয়া হোসেনকে পিডি হিসেবে নিয়োগ করা হয়। বর্তমানে জাকারিয়া হোসেনকে পিডির পাশাপাশি প্রধান প্রকৌশলীর চলতি দ্বায়িত্ব পালন করছেন।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যে ৩ জনের নাম প্রস্তাব করা হয়েছিল তার মধ্যে নুরুদ্দিন সবচেয়ে জুনিয়র। থার্ড টার্মিনালের মতো বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ঠ প্রকল্পের বার বার পিডি পরিবর্তন হলে নতুন পিডির নমুনা স্বাক্ষর মন্ত্রণালয়, ইআরডি, দাতা সংস্থা জাইকা, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ নানা প্রতিষ্ঠানের অনুমোদনের জন্য প্রেরণ করতে হয়। এ প্রেরণ ও অনুমোদন প্রক্রিয়া দীর্ঘ সময় স্বাপেক্ষ। এ কারণে এ.কে.এম মাকসুদুল ইললামের চুক্তি বাতিলের পর ঠিকাদারের ও পরামর্শকের বিল পরিশোধ বন্ধ থাকে এবং টাকার অভাবে বিদেশ হতে আমদানিকৃত মালামাল পোর্ট হতে ছাড়করণ কাজও বন্ধ হয়ে যায়। বিলম্ব জনিত কারণে সরকারের প্রায় ১০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়। নতুন পিডি নিয়োগ করায় থার্ড টার্মিনালের কাজ আরও দীর্ঘায়িত হবে।
এ বিষয়ে বেবিচকের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভুঁইয়া বলেন, নুরুদ্দিন চৌধুরীকে থার্ড টার্মিনালের পিডি হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে নিয়মের কোনো ব্যতয় হয়েছে কি না সেটা খতিয়ে দেখা হবে।
মন্তব্য করুন