বহু শতাব্দী ধরে টিকে থাকা ইতিহাসের নীরব সাক্ষী- দুর্লভ ও প্রাচীন মুদ্রার এক ব্যতিক্রমী সমাবেশ নিয়ে জাতীয় জাদুঘরে শুরু হয়েছে তিন দিনের বিশেষ প্রদর্শনী ‘ঢাকা নিউমিস শো ২০২৫’।
শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে জাতীয় জাদুঘরের নলিনীকান্ত ভট্টশালী প্রদর্শনী হলে আয়োজিত এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন হয়। এটি চলবে আগামী রোববার (২০ এপ্রিল) পর্যন্ত।
ঢাকা-ভিত্তিক শৌখিন সংগ্রাহকদের সংগঠন ওল্ড ঢাকা কালেক্টরস সোসাইটি (ওডিসিএস) এ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। উদ্বোধনী আয়োজনে ইতিহাসপ্রেমী, গবেষক, সংগ্রাহক ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি এক প্রাণবন্ত মিলনমেলায় পরিণত হয়। আয়োজকরা মনে করছেন, এটি দেশের মুদ্রা-ইতিহাসের অনুরাগী ও সংগ্রাহকদের জন্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবে।
ওডিসিএসের সভাপতি সামসুল আলম কালবেলাকে বলেন, এটা একদম শখ থেকেই শুরু। ছোটবেলায় যেভাবে অনেকেই ডাকটিকেট, নোট বা কয়েন জমাত, সেই শখই সময়ের সঙ্গে ঐতিহাসিক মুদ্রা সংগ্রহে রূপ নিয়েছে। এবারের প্রদর্শনীতে আকবরের আমলের মুদ্রা, স্বাধীন সুলতানদের যুগ, ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমল এবং বর্তমান বাংলাদেশের দুষ্প্রাপ্য মুদ্রা স্থান পেয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রায় ৯৬ থেকে ১০০টি ফ্রেমে সাজানো এ প্রদর্শনীতে দেশের ৫১ শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিগত সংগ্রাহক তাদের সংগৃহীত মুদ্রা প্রদর্শন করছেন। এসব সংগ্রহ একান্তই ব্যক্তিগত, কোনো প্রাতিষ্ঠানিক সংরক্ষণ নয়।
এবার প্রদর্শনীতে বিদেশি অংশগ্রহণকারীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। আয়োজকদের ভাষ্য, বিদেশি সংগ্রাহকদের মুদ্রা আনয়নে কাস্টমস ডিক্লারেশনের জটিলতা থাকায় আমরা কেবল দেশীয় সংগ্রাহকদের নিয়েই আয়োজন করেছি।
২০২২ সালের মার্চে ওডিসিএসর যাত্রা শুরু হলেও, এত বড় পরিসরে এবং জাতীয় জাদুঘরের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ ও সুরক্ষিত স্থানে এটাই তাদের প্রথম আয়োজন। সামসুল আলম বলেন, ৫০০ বছর, ২০০ বছর এমনকি হাজার বছরেরও পুরোনো মুদ্রা রয়েছে এবারের প্রদর্শনীতে। এত মূল্যবান সংগ্রহের জন্য নিরাপত্তা গুরুত্বপূর্ণ, যা জাতীয় জাদুঘরের মতো প্রতিষ্ঠানে সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, ২০২৩ ও ২০২৪ সালে নানা কারণ ও প্রস্তুতির অভাবে আয়োজন সম্ভব হয়নি। তবে এবার বহু প্রতীক্ষার অবসান ঘটেছে। ভবিষ্যতে আরও বিস্তৃত পরিসরে এই শখকে মানুষের সামনে তুলে ধরার পরিকল্পনাও রয়েছে তাদের।
মন্তব্য করুন