পুলিশের চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ক্রসফায়ার ও গুমের ভয় দেখিয়ে ৪ কোটি টাকা মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগ করেছেন মেডিকেল ভর্তি কোচিং প্রতিষ্ঠান মেডিকোর প্রতিষ্ঠাতা ডা. জুবায়দুর রহমান জনি।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে পুলিশের হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা, শারীরিক নির্যাতন করে মিথ্যা স্বীকারোক্তিমূলক ভিডিও ধারণ ও ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের প্রতিবাদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মলনে তিনি দাবি করেন, ষড়যন্ত্রমূলক প্রশ্নফাঁস মামলায় গত ২ আগস্ট বাসা থেকে ডা. জুবায়দুর রহমানকে তুলে নেওয়া হয়। এরপর ক্রসফায়ার ও গুমের ভয় দেখিয়ে তার পারবারের কাছ থেকে ৪ কোটি টাকা মুক্তিপণ আদায় করে সিআইডি’র সাবেক অপরাধ তদন্ত প্রধান মোহাম্মদ আলী ও পুলিশের তিন কর্মকর্তা। অন্য তিন কর্মকর্তা হলেন, র্যাব-১৪ সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সেবা) জুয়েল চাকমা, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পরিদর্শক মেহেদী হাসান, ঢাকা মালিবাগ সিআইডির অপরাধ তদন্ত বিভাগের উপ-পরিদর্শক আতিকুর রহমান।
ডা. জুবায়দুর রহমান বলেন, গ্রেফতারের পর ছয় কিস্তিতে আমার পরিবারের কাছ এ টাকা নেয় মোহাম্মদ আলী সিন্ডিকেট। রিমান্ডে থাকা অবস্থায় দেড় কোটি, কারাগারে থাকা অবস্থায় দেড় কোটি, কারগার থেকে বের হয়ে আসার এক কোটি নেয়। আগাঁরগাও আইসিটি টাওয়ার, পাসপোর্ট অফিস, বেতার ভবন আশেপাশের রাস্তার থেকে সাব-ইন্সপেক্টর মেহেদী হাসান নিজের গাড়ি দিয়ে এসে নিয়ে গেছেন। রিমান্ডে থাকা অবস্থায় শারীরিক নির্যাতন, নতুন আরও মামলা, স্ত্রীকে গ্রেফতার ও মেডিকো সিলগালা করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে এ অর্থ আদায় করা হয়।
এই চিকিৎসক দাবি করেন, টাকা নেওয়ার বিষয়ে একাধিক অডিও রেকর্ড রয়েছে তার কাছে। তার স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের স্কাইসিটি হোটেলে ডেকে মুক্তির বিনিময়ে পাঁচ কোটি টাকা দাবি করা হয়। এ ছাড়া রিমান্ডে ক্রসফায়ারে ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায় করা হয় এবং তা একজন সাংবাদিক দিয়ে ভিডিও নেওয়া হয়। সে সাংবাদিক চ্যানেল টুয়েন্টিফোরে কর্মরত, যার নাম ইমরান।
প্রশ্নফাঁসের বিষয়টি ছিল রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক দাবি করে তিনি বলেন, আমার পরিবারের একমাত্র বোন দুবার মেডিকেলে পরীক্ষা দিয়ে চান্স পায়নি। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়, এ ছাড়া আমার স্ত্রীর দুইবার মেডিকেল পরীক্ষা দিয়ে সরকারি মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পায়নি। পরে ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়। আমার স্ত্রীকে কেন স্কাইসিটি হোটেলে ডাকা হয়েছিল? কেন আমাকে মেরে ফেলার ভয় দেখানো হয়েছিল? এটা কি শুধুই তদন্তের অংশ, না কোনো চক্রান্ত?’ তখন আমার স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের স্কাইসিটি হোটেলে ডেকে মুক্তির বিনিময়ে পাঁচ কোটি টাকা দাবি করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা ও শাস্তির দাবি জানান।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের জুলাইয়ে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস নিয়ে সিআইডি তদন্ত শুরু করে। তার ধারাবাহিকতায় ২৩ আগস্ট ভোরে সাদা পোশাকে পুলিশ ডা. জনিকে তার বাসা থেকে আটক করে।
মন্তব্য করুন