পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হওয়া বর্ণাঢ্য বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রার র্যালি শেষ হয়েছে।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ৯টায় শুরু হয়ে ১০টা ৩০ মিনিটে চারুকলা অনুষদের সামনেই এসে শেষ হয়। এবারের ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’য় শুধু দেশি নয়, নেচে-গেয়ে উৎসবে মেতে উঠেছেন একঝাঁক বিদেশি শিক্ষার্থী ও পর্যটকও।
এতে চীন, জাপান, ফ্রান্স, রাশিয়া, জার্মানিসহ নানা দেশের পর্যটকদের অংশ নিতে দেখা গেছে।
শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া বিদেশিদের মধ্যে কেউ গলায় বাঁশি ঝুলিয়ে বাজাচ্ছেন, অনেকেই আবার লাল-সাদা শাড়ি-পাঞ্জাবিতে বাঙালিয়ানা সাজে সেজেছেন। বাঙালির ঐতিহ্যবাহী এই উৎসবে অংশ নিয়ে বিদেশি পর্যটকদের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
শোভাযাত্রায় আসা চীনের একজন নাগরিক বললেন, ‘খুশি লাগলো এবং খুবই আনন্দিত। ইনশাআল্লাহ, বিসমিল্লাহ ও আলহামদুলিল্লাহ। আচ্ছা ধন্যবাদ ’
‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’ প্রতিপাদ্যে আয়োজিত এ শোভাযাত্রার নেতৃত্ব দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান।
শোভাযাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন, কৃষক ও রিকশাচালক প্রতিনিধি, নারী ফুটবলার এবং ২৮টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সদস্যসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
শোভাযাত্রা বর্ণিল মুখোশ, রঙিন পোস্টার, প্ল্যাকার্ড ও ঐতিহ্যবাহী সাজসজ্জায় উৎসবমুখর হয়ে ওঠে। ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে এতে ফিলিস্তিনের পতাকা ও প্রতীকী মোটিফ যেমন- তরমুজের ফালি ব্যবহৃত হয়।
এবারের শোভাযাত্রায় ৭টি বড়, ৭টি মাঝারি ও ৭টি ছোট মোটিফসহ মোট ২১টি শিল্পকর্ম প্রদর্শিত হয়। মূল মোটিফ ছিল ‘স্বৈরাচারের প্রতিকৃতি’। এ ছাড়াও শোভাযাত্রায় পায়রা, মাছ, বাঘ এবং আলোচিত ‘মুগ্ধর পানির বোতল’-এর শিল্পরূপ প্রদর্শিত হয়।
এদিকে বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা উপলক্ষে পুরো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা। পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানগুলোতে আগত দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
এদিন সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশপথে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
আজ সকালে ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা গেছে, ক্যাম্পাসের সাতটি প্রবেশপথে নেওয়া হয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা। কোনো ধরনের যানবাহন ক্যাম্পাসের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। সবাই হেঁটে ক্যাম্পাসে ঢুকছেন। সন্দেহ হলেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তল্লাশির আওয়ায় আসছেন যে কেউ। বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে রাখা হয়েছে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা রোধে বিভিন্ন সরঞ্জামাদি।
মন্তব্য করুন