মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসন নীতির কারণে বাংলাদেশিরা সেখানে নানা ধরনের জটিলতায় পড়ছেন বলে জানিয়েছেন অভিবাসন অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী।
রোববার (১৩ এপ্রিল) ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে ইমিগ্র্যান্টস ইন্টারন্যাশনালের আয়োজিত আমেরিকার বর্তমান কঠোর ইমিগ্রেশন নীতি, বাংলাদেশের ওপর প্রভাব ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
অভিবাসন নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোরতার কথা তুলে মঈন চৌধুরী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেছে, যার মাধ্যমে অননুমোদিত অভিবাসীদের প্রেরণ এবং সব ভিসা ক্যাটাগরিতে কড়া তদন্ত কার্যক্রম চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো- সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করা এবং বিদ্যমান অভিবাসন আইন কার্যকর করা।
এখনো কোনো বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো না হলেও এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের যে তদারকি প্রক্রিয়া, তার মধ্যে বাংলাদেশিরা রয়েছে জানিয়ে মঈন বলেন, ইউএস ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) বাংলাদেশি অননুমোদিত অভিবাসীদের শনাক্ত করে ফিরিয়ে আনার প্রস্তুতি নেবে। নিউইয়র্ক, নিউ জার্সি এবং কানেকটিকাটে অননুমোদিত বাংলাদেশিদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় কূটনৈতিক পর্যায়ে মর্যাদাপূর্ণ ফেরত নিশ্চিত করার বিষয়ে আলোচনা চলছে।
যুক্তরাষ্ট্রে আনুমানিক কতজন বাংলাদেশি ফেরত পাঠানোর ঝুঁকির মধ্যে আছে- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর তথ্য যেভাবে বাংলাদেশ সরকারের কাছে থাকে, যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে এটা থাকে না। যারা ইমিগ্রেশনের জন্য কেস ফাইল করেছে, কেবল তাদেরটা বোঝা যায়, সংখ্যাটা কত। আর অ্যাসাইলাম চেয়েছে, রেসিডেন্ট না- এই সংখ্যাটা কয়েক হাজারের মতো বলে পত্রিকায় আসছে।
গ্রিন কার্ড ও অন্যান্য ভিসাধারীদের বিমানবন্দরে কঠোর জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হচ্ছে জানিয়ে মঈন বলেন, যদি আপনি বছরে ১০ মাসের বেশি সময় বিদেশে থাকেন, তাহলে আপনার গ্রিন কার্ড বাতিলের ঝুঁকি আছে।
শিক্ষার্থী ভিসা প্রসেসিংয়ের ক্ষেত্রে বিলম্ব হওয়ার কথা তুলে ধরে মঈন চৌধুরী বলেন, অতিরিক্ত প্রশাসনিক যাচাই প্রক্রিয়া চালু হওয়ায় ভবিষ্যতে আরও দীর্ঘ বিলম্বের সম্ভাবনা রয়েছে, তাই সময় মতো আবেদন ও আইনগত সহায়তা নেওয়া জরুরি।
কঠোর তদন্ত আর সীমিত আকারে সাক্ষাৎকার চালু থাকায় পারিবারিক পুনর্মিলন, এইচ-১বি, এইচ-২বি কাজের ভিসারও জট তৈরি হয়েছে বলে জানান অভিবাসন অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী। তিনি বলেন, আবেদনকারীদের দীর্ঘ সময় ধরে প্রতীক্ষার জন্য প্রস্তুত থাকতে এবং সম্পূর্ণ কাগজপত্র প্রস্তুত রাখতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
প্রত্যাবাসন এড়ানোর জন্য সরকার কী করতে পারে, এমন প্রশ্নে মঈন বলেন, যারা অ্যাসাইলাম চেয়ে আবেদন করেছে, তারা আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল। এখন তো আওয়ামী লীগ নেই। তাদের আগের অবস্থা তো এখন না থাকার কথা। এ কারণে এই সরকার বলতে পারবে না, তাদের আনব না। আগে যারা আবেদন করেছিল, এখন তো ড. ইউনূসের সময়ে তাদের জন্য শান্তির দেশ হওয়ার কথা।
ভিসা ও নাগরিকত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে ফেসবুক ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পোস্ট খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও তথ্য দেন মঈন চৌধুরী।
মন্তব্য করুন