চৈত্র মাসের শেষ দিন আজ রোববার (১৩ এপ্রিল)। এই দিনটিকে চৈত্রসংক্রান্তি হিসেবে উদযাপন করা হয়। এ ছাড়াও আগামীকাল সোমবার (১৪ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখ, নতুন বাংলা বর্ষ ১৪৩২।
আবহমান বাংলার চিরায়িত বিভিন্ন ঐতিহ্যকে ধারণ করে আসছে এই চৈত্রসংক্রান্তি। বছরের শেষ দিন হিসেবে পুরাতনকে বিদায় ও নতুন বর্ষকে বরণ করার জন্য প্রতিবছর চৈত্রসংক্রান্তিকে ঘিরে থাকে বিভিন্ন অনুষ্ঠান-উৎসবের আয়োজন।
মনে করা হয়, চৈত্রসংক্রান্তিকে অনুসরণ করেই পহেলা বৈশাখ উদযাপনের এত আয়োজন। তাই চৈত্রসংক্রান্তি হচ্ছে বাঙালির আরেক বড় অসাম্প্রদায়িক উৎসব।
চৈত্রসংক্রান্তির দিন সনাতন ধর্মচারীরা শাস্ত্র মেনে স্নান, দান, ব্রত, উপবাস করে থাকেন। শিবের গাজন ও ধর্মের গাজন নামে পালাগানও অনুষ্ঠিত হতে দেখা যায়। গাজন মূলত কৃষকদের উৎসব। চৈত্রের দাবদাহ থেকে রক্ষা পেতে বৃষ্টির জন্য চাষিরা পালার আয়োজন করে থাকেন, যা গাজন নামে পরিচিত। কিছু কিছু স্থানে চড়ক পূজা অনুষ্ঠিত হয়। নিজ নিজ বিশ্বাস অনুযায়ী, অন্য ধর্মাবলম্বীরাও নানা আচার-অনুষ্ঠান পালন করেন।
চৈত্রসংক্রান্তি উপলক্ষে গ্রামগঞ্জে নানা ধরনের মেলা ও উৎসব হয়ে থাকে। বিশেষ করে হালখাতার জন্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সাজানো, লাঠিখেলা, গান, সংযাত্রা, রায়বেশে নৃত্য, শোভাযাত্রাসহ নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয় চৈত্রসংক্রান্তি।
চড়ককে চৈত্রসংক্রান্তির প্রধান উৎসব বলা হয়। চড়ক গাজন উৎসবের একটি প্রধান অঙ্গ। এ উপলক্ষে গ্রামের শিবতলা থেকে শোভাযাত্রা শুরু করে অন্য গ্রামের শিবতলায় নিয়ে যাওয়া হয়। একজন শিব ও একজন গৌরী সেজে নৃত্য করে এবং অন্য ভক্তরা নন্দি, ভৃঙ্গী, ভূত-প্রেত, দৈত্য-দানব সেজে শিব-গৌরীর সঙ্গে নেচে চলে।
এদিকে, পুরোনো বছরের সব জরাজীর্ণতা মুছে ফেলে সোমবার (১৪ এপ্রিল) বাঙালি মিলিত হবে পহেলা বৈশাখের সর্বজনীন উৎসবে। এদিন জরাজীর্ণতা, ক্লেশ ও বেদনার সবকিছুকে বিদায় জানানোর পাশাপাশি সব অন্ধকারকে বিদায় জানিয়ে আলোর পথে এগিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার থাকবে গোটা জাতি।
মন্তব্য করুন