গাজায় দখলদার ইসরায়েলের গণহত্যার প্রতিবাদে সোমবার অনুষ্ঠিত বিক্ষোভের সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর ও লুটপাট ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৭২ জনতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
বুধবার (০৯ এপ্রিল) সকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানান তিনি।
বিবৃতিতে শফিকুল আলম জানান, দেশের বিভিন্ন শহরে গত সোমবার অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ কর্মসূচির সময় সহিংসতা, দোকানে হামলা এবং ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুত ব্যবস্থা নেয়।
তিনি বলেন, এই হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা জননিরাপত্তা এবং আইনের শাসনের পরিপন্থি। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৭২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ বিষয়ে দুটি মামলা দায়ের হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলমান রয়েছে। দোষীদের বিরুদ্ধে আরও মামলার প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে, আজ সকাল ৮টা নাগাদ এই ৭২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারদের মধ্যে রয়েছে- খুলনায় ৩৩ জন, সিলেটে ১৯ জন, চট্টগ্রামে ৫ জন, গাজীপুরে ৪ জন, নারায়ণগঞ্জে ৪ জন, কুমিল্লায় ৩ জন এবং কক্সবাজারে ৪ জন।
এদিকে ফিলিস্তিনের গাজায় চালানো গণহত্যা ও ইসরায়েল পণ্য বয়কটের দাবিতে রাজধানীসহ সারা দেশে বিক্ষোভ চলার সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে রেস্তোরাঁয় ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি। মঙ্গলবার (০৮ এপ্রিল) সংগঠনটির পক্ষে মহাসচিব ইমরান হাসান এই দাবি জানান।
বিবৃতিতে সংগঠনটি জানায়, বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি নিরীহ ফিলিস্তিনিদের উপর ইসরায়েলের বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে। গতকাল সোমবার ফিলিস্তিনের গাজাবাসীদের গণহত্যা ও ইসরায়েল পণ্য বয়কটের দাবিতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ প্রদর্শনের নাম করে কতিপয় দুর্বৃত্ত এবং সন্ত্রাসীরা দেশের বহু রেস্তোরাঁয় ভাঙচুর ও লুটপাটের মতো জঘন্যতম কর্মকাণ্ড ঘটায়। এর ফলে সেসব রেস্তোরাঁ মালিকদের ব্যাপক ব্যবসায়িক ও অর্থনৈতিক ক্ষতি সাধিত হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, বলা বাহুল্য বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও গাজায় ইসরায়েল হামলার প্রতিবাদে গত সোমবার সারা দেশে বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করে। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, বিক্ষোভের নাম করে কিছু দুর্বৃত্ত ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন জেলার রেস্তোরাঁয় অতর্কিত হামলা চালায় ও ব্যাপকভাবে ভাঙচুর করে সম্পদের ক্ষতি সাধন করে। এভাবে সন্ত্রাসীরা বিদেশি পণ্যের নাম করে দেশের রেস্তোরাঁগুলোতে যে সহিংস ঘটনা ঘটিয়েছে তা মোটেও আমাদের কাম্য নয়।
এতে আরও বলা হয়, এমতাঅবস্থায় বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির বক্তব্য হচ্ছে- বাংলাদেশের রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি ও এর সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা কর্মচারীরা এ ঘটনার জন্য তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায় এবং এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের অতি শিগগিরই (আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে) আটক ও দৃষ্টান্তমূলক শান্তি দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছে। বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি দেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এই সহিংসতায় যে সম্পদ ধ্বংস করা হয়েছে তা নিরূপণ করা ও তাদের বিনিয়োগের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা। ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে তার জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা ও টহল পুলিশিং কার্যক্রম বৃদ্ধি করা।
মন্তব্য করুন