মিয়ানমারের স্ক্যাম সেন্টারে বন্দিজীবন থেকে মুক্ত হয়ে দেশে ফিরেছেন ১৮ বাংলাদেশি। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ঢাকায় ফেরেন তারা। বিমানবন্দরে তাদের জরুরি সহায়তা দেন ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের কর্মীরা।
ব্র্যাকের মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার সেন্টারের ব্যবস্থাপক আল-আমিন নয়ন বলেন, বাংলাদেশি এই নাগরিকেরা মিয়ানমারের ভয়ংকর স্ক্যাম সেন্টারে বন্দি জীবন কাটিয়েছেন। চাকরি ও ভালো ভবিষ্যতের প্রলোভনে ফেলে মানবপাচারকারীরা তাদের প্রথমে থাইল্যান্ডে নিয়ে যায়, এরপর মিয়ানমারের স্ক্যাম সেন্টারে বিক্রি করে দেয়। সেখানে তাদের দিয়ে জোরপূর্বক সাইবার অপরাধমূলক কাজে বাধ্য করা হতো, আর প্রতিদিন তারা বেঁচে থাকার জন্য লড়াই করতেন।
তিনি বলেন, ভুক্তভোগীদের পরিবার, ব্র্যাক এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরলস কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় দুঃসহ বন্দিদশা থেকে তাদের মুক্তি মিলেছে।
উদ্ধার ব্যক্তিরা হলেন- ওমর ফারুক, রাশেদুল ইসলাম রিফাত, আলিফ ইমরান, মোহাম্মদ রায়হান সুবহান, এস কে আরমান, পাভেল চৌধুরী, মনির হোসেন, ইসমাইল হোসেন, নাজিম উদ্দীন, জহির উদ্দিন, তানভীর আহাম্মেদ রাফি, তাইনুর খলিলুল্লাহ, সায়মন হোসেন আবির, উজ্জ্বল হোসেন, মেহেদী হাসান শান্ত, মোহাম্মদ কায়সার হোসেন, শাহ আলম ও আকাশ আলী।
ব্র্যাকের সহযোগী পরিচালক শরিফুল হাসান (মাইগ্রেশন অ্যান্ড ইয়ুথ প্ল্যাটফর্ম) জানান, ভুক্তভোগীদের পরিবার থেকে তাদের উদ্ধারের জন্যে ব্র্যাকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এরপর বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও থাইল্যান্ডের বাংলাদেশ দূতাবাসসহ সবার নিরলস প্রচেষ্টায় দুঃসহ বন্দিদশা থেকে মুক্তি পান ১৮ বাংলাদেশি। মঙ্গলবার রাতে থাই এয়ারওয়েজের ফ্লাইটে তারা দেশে ফিরেছেন।
তিনি বলেন, সাইবার স্ক্যাম মানবপাচারের ভয়াবহ একটা ধরন। কম্পিউটার অপারেটর, টাইপিস্ট, কলসেন্টার অপারেটরসহ বিভিন্ন পদে আকর্ষণীয় বেতনের প্রলোভন দিয়ে নিয়োগের লক্ষ্যে বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমে (ভুয়া ওয়েবসাইট, ইমেইল, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম ইত্যাদি) প্রচার চলে। এরপর তাদের সুকৌশলে স্ক্যাম সেন্টারের ভেতরে নিয়ে গিয়ে অস্ত্রের মুখে জোরপূর্বক জিম্মি করে স্ক্যামের কাজে নিয়োজিত করা হয়। থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, লাওস, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ায় কাজের কথা বলে যাওয়ার বিষয়ে এজন্য সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এসব বিষয়ে বিদেশগামীসহ সবার সচেতনতা প্রয়োজন।
মন্তব্য করুন