কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৭ মার্চ ২০২৫, ১০:২২ এএম
আপডেট : ১৭ মার্চ ২০২৫, ১০:৪০ এএম
অনলাইন সংস্করণ

কর্মবিরতি প্রত্যাহার, মেট্রোরেলের টিকিট ব্যবস্থা চালু

কর্মবিরতি প্রত্যাহার, মেট্রোরেলের টিকিট ব্যবস্থা চালু

কর্তৃপক্ষের আশ্বাসের দেড় ঘণ্টা পর মেট্রোরেলের কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেছে কর্মীরা। একই সঙ্গে চালু হয়েছে টিকিট ব্যবস্থা।

সোমবার (১৭ মার্চ) সকাল ৯টার দিকে কর্মীরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে স্বাভাবিক কাজে ফেরেন।

এর আগে এমআরটি পুলিশ সদস্যদের দ্বারা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) চার কর্মী মৌখিক ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হওয়ার অভিযোগে সোমবার মধ্যরাত থেকে কর্মবিরতির ঘোষণা দেন মেট্রোরেল কর্মীরা।

তবে যাত্রীদের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে সোমবার মেট্রোরেল চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় কর্মী না থাকার কারণে ফাঁকা ছিল কাউন্টারগুলো। আর সে সুযোগেই ওই সময়টাতে টিকিট ছাড়াই ভ্রমণ করেছেন অনেক যাত্রী।

সে সময়টাতে মেট্রো স্টেশনের ভেতরে কয়েকজন আনসার এবং পুলিশ সদস্য ছাড়া বাকি কর্মী দেখা যায়নি। ফলে টিকিট দেওয়া, এমনকি চেকিং করার মতোও কেউ ছিল না। পাস মেশিনও বন্ধ ছিল। এতে করে টিকিট ছাড়াই চলাচল করেছেন যাত্রীরা।

এদিকে এ ঘটনায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াসহ তাদের দাবি পূরণ না হলে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা দেন মেট্রোরেল কর্মীরা।

সোমবার (১৭ মার্চ) মধ্যরাতে কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন মেট্রোরেলের একাধিক কর্মী। তার আগে ‘ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড-এর কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের’ ব্যানারে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঘটনা তুলে ধরে ৬টি দাবি জানানো হয়।

মেট্রোরেলের কর্মীদের দাবিগুলো- সোমবারের মধ্যে ঘটনার মূল হোতা ওই পুলিশ সদস্যকে (এসআই মাসুদ) স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করতে হবে ও ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সব পুলিশ সদস্যকে (কনস্টেবল রেজনুল, ইন্সপেক্টর রঞ্জিত) শাস্তি প্রদান করতে হবে এবং তাদের প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। মেট্রোরেল, মেট্রো স্টাফ ও যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তুলতে হবে, এমআরটি পুলিশ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে, স্টেশনে দায়িত্বরত সিআরএ টিএমও, স্টেশন কন্ট্রোলারসহ অন্য কর্মীদের শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, অফিসিয়াল পরিচয়পত্র ছাড়া ও অনুমতি ব্যতীত কোনো ব্যক্তি যেন স্টেশনের পেইড জোনে প্রবেশ করতে না পারে- তা নিশ্চিত করতে হবে এবং আহত কর্মীর সম্পূর্ণ চিকিৎসার দায়িত্ব কর্তৃপক্ষকে নিশ্চিত করতে হবে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কর্মবিরতি কর্মসূচি ঘোষণা করে বলা হয়, দাবিগুলো পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা মেট্রোরেলের সব স্টাফ কর্মবিরতি পালন করব এবং প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। তারা বলেন, আমরা আশা করি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন এবং মেট্রো স্টেশনে নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করবেন।

মেট্রোরেল কর্মীরা কালবেলাকে জানান, ১৭ মার্চ সকাল থেকে আমরা ট্রেন চালাব না। আমাদের দাবি মেনে নিলে আমরা ট্রেন চালাব। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে। আমাদের ঘটনার বিষয়ে হেড অফিসের বড় স্যাররা অবগত আছেন। ঘটনার পর তারা সচিবালয়ে মিটিং করেছেন। আমাদের প্রেস রিলিজ সরকারি ডেকোরাম মেনে তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঘটনার বিবরণ তুলে ধরে বলা হয়, আনুমানিক বিকেল সোয়া ৫টায় মেট্রোরেলের সচিবালয় স্টেশনে দুজন নারী কোনো প্রকার পরিচয়পত্র প্রদর্শন না করেই সিভিল ড্রেসে বিনা টিকিটে ট্রেনে ভ্রমণ করে সুইং গেট ব্যবহার করে পেইড জোন থেকে বের হতে চান। যেহেতু তারা নির্ধারিত ইউনিফর্ম পরিহিত ছিলেন না ও তাদের পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি, তাই দায়িত্বপ্রাপ্ত সিআরএ নিয়ম অনুযায়ী তাদের সেখান থেকে প্যাসেঞ্জার গেট (পিজি) ব্যতীত সুইং গেট দিয়ে বের হওয়ার কারণ জানতে চান। সংশ্লিষ্ট পুলিশের কর্মকর্তারা এতে উত্তেজিত হয়ে তর্কে জড়ান এবং একপর্যায়ে এমআরটি পুলিশের কন্ট্রোল রুমে চলে যান।

পরবর্তীতে ঠিক একইভাবে দুজন এপিবিএন সদস্য সুইং গেট ব্যবহার করে গেট না লাগিয়ে চলে যান। এর কারণ জানতে চাওয়া হলে তারা পূর্বের ঘটনার জের ধরে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। কিছুক্ষণ পরে পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকে আরও কয়েকজন পুলিশ এসে দায়িত্বে থাকা সিআরএর সঙ্গে ইএফওতে তর্কে জড়িয়ে পড়েন এবং ইএফও থেকে বের হওয়ার সময় কর্মরত সিআরএ-এর কাঁধে বন্দুক দিয়ে আঘাত করেন এবং কর্মরত আরেকজন টিএমওর শার্টের কলার ধরে জোরপূর্বক এমআরটি পুলিশ বক্সে নিয়ে গিয়ে মারধর করেন। এ সময় গুলি করার জন্য বন্দুক তাক করেন তিনি।

উপস্থিত স্টেশন স্টাফ ও যাত্রীরা বিষয়টি অনুধাবন করে এমআরটি পুলিশের হাত থেকে কর্মরত টিএমওকে বাঁচিয়ে নিয়ে আসেন। ওই পরিস্থিতি মেট্রোরেল কর্মপরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ। বর্তমানে আহত (রাইফেল দিয়ে কাঁধে আঘাত করা হয়) সিআরএকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা প্রদান করার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় এবং টিএমও (যাকে পুলিশ কন্ট্রোল রুমে হেনস্তা করা হয়, গুলি করার জন্য বুকে রাইফেল ধরা হয়) উক্ত ঘটনার বিবৃতি দেওয়ার পর বাসায় যাওয়ার পথে জ্ঞান হারিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রিয়ালের হুমকি নিয়ে লা লিগা সভাপতির খোঁচা

রোহিঙ্গা শিবিরে যুবককে পিটিয়ে হত্যা

ক্যালিফোর্নিয়া বিএনপির উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

নিউইয়র্কে শুরু হচ্ছে চতুর্থ রেমিট্যান্স ফেয়ার

মৃদু তাপপ্রবাহ নিয়ে যে তথ্য দিল আবহাওয়া অফিস

দুর্বার তারুণ্য ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ইফতার সামগ্রী বিতরণ

চট্টগ্রামে প্রেমিককে মেরে প্রেমিকাকে ধর্ষণচেষ্টা, অতঃপর...

শাজাহান খানের ছেলে আসিবুর রিমান্ডে

এমআরটি পুলিশের ২ সদস্য বরখাস্ত, তদন্ত কমিটি গঠন

সড়ক বন্ধ করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, ৮ কারখানায় ছুটি

১০

কুড়িগ্রামে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ

১১

মেসির দুর্দান্ত কামব্যাক, মায়ামির নাটকীয় জয়

১২

গরমে চুলের তেলতেলে ভাব দূর করার টোটকা

১৩

নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতিবাদে ঢাবির অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের মানববন্ধন

১৪

ইজিবাইককে সাইড দেওয়া নিয়ে সংঘর্ষ, টেঁটাবিদ্ধসহ আহত ৫০

১৫

রাতের শহরে স্বাদের উৎসব / শুরু হতে যাচ্ছে ‘মুনলাইট ফেস্টিভ্যাল সিজন ১’

১৬

বাংলাদেশে পা রাখলেন হামজা চৌধুরী

১৭

পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার জরুরি বৈঠক চলছে

১৮

আরাকান আরসার ৪ সদস্য আটক

১৯

গরমে ফিট থাকতে যেসব কাজ করবেন

২০
X