ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম-মহাসচিব ও দলীয় মুখপাত্র গাজী আতাউর রহমান বলেছেন, হাসিনার স্বৈরাচার এতটাই নির্মম ছিল তাদেরকে দেশ ছাড়া হতে হয়েছে। বাংলাদেশের অতীতের সকল সরকারই বৈষম্য ও নিপীড়ন চালিয়েছে। পদ্ধতিগতভাবে স্বৈরাতন্ত্র লালন করেছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর পরিবর্তন চায়।
তিনি বলেন, ইসলাম এই জাতির রক্ষাকবচ। ইসলামই আমাদের সীমানা আলাদা করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কার্ল মার্ক্স-লেলিন চর্চা হলে ইসলাম কেনো চর্চা হতে পারবে না? ইসলাম নিয়ে ভুল আতংক তৈরি করা হয়। ইসলাম বরং নিপীড়িত মানুষের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করে।
রোববার (১৬ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক বটতলায় ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা আয়োজিত সংগঠনের ঢাবি সম্মেলন ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গাজী আতাউর রহমান এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। শিক্ষার মান যত উন্নত দেশ তত উন্নত হয়। মানবসম্পদ উন্নয়ন ও দক্ষ জনগোষ্টি তৈরি করতে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড হিসেবে জিডিপির ৬ শতাংশ শিক্ষাখাতে বরাদ্দ রাখার কথা। এশিয়ার বিভিন্ন দেশও জিডিপির বৃহৎ অংশ শিক্ষাখাতে খরচ করে মানবসম্পদ উন্নয়ন করতে। কিন্তু আমাদের বিগত সরকারগুলো গড়ে ২ শতাংশ এর মতো বরাদ্দ রাখে। এর মধ্যে শিক্ষাখাতের অবকাঠামো উন্নয়নও অন্তর্ভুক্ত থাকে। ফলে গবেষণা ও জ্ঞান তৈরিতে তেমন কোনো বিনিয়োগ থাকে না বললেই চলে। যার ফলে আন্তর্জাতিক দক্ষতাভিত্তিক কর্মবাজারে আমরা পিছিয়ে পড়ছি।
গাজী আতাউর রহমান আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সামগ্রিক শিক্ষার মান ক্রমান্বয়ে অবনতি হচ্ছে। দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আবাসন ও খাবারের মান নিয়ে কথা বলতে গেলে আক্ষেপ করতে হয়। এই রাষ্ট্র কতো কিছু করে কিন্তু দেশের সেরা মেধাবী সন্তানদের জন্য উন্নত আবাসন ও খাবারের ব্যবস্থা করতে পারে না এটা মেনে নেওয়া যায় না। তাই দক্ষতা ও নৈতিকতাকে ভিত্তি ধরে অবকাঠামো, গবেষণা ও শিক্ষার মান নিশ্চিত করতে সামগ্রিক সংস্কার করতে হবে।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ১৫ বছরের চেপে বসা স্বৈরাচার উৎখাতে যে ভূমিকা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রেখেছে তা ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবে। দেশ-জাতি ও মানবতা রক্ষায় এই বিশ্ববিদ্যালয় একটি অজেয় দূর্গ, জাতীর প্রত্যাশার মিনার।
ইসলামী ছাত্র আন্দোলন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মুহাম্মাদ ইয়াসিন আরাফাতের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সাইফ মুহাম্মাদ আলাউদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় প্রচার ও দাওয়াহ সম্পাদক শেখ ফজলুল করীম মারুফ, ইসলামী আন্দোলনের কৃষি ও শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রহমান, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল শেখ মাহবুব নাহিয়ান ও ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় উইংয়ের যুগ্ম আহবায়ক আল আমীন মুহাম্মাদ বাবুল।
মন্তব্য করুন