পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ বলেছেন, বিএসইসির ঘটনায় সব কর্মকর্তা ও কর্মচারী সম্পৃক্ত নন। সংঘটিত কাজে অংশগ্রহণকারী অনেকেই স্বতঃস্ফূর্তভাবে যুক্ত হননি এমনটাই কমিশন বিশ্বাস করে। এ বিষয়টি মাথায় রেখেই ভবিষ্যতে প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
সোমবার (১০ মার্চ) বিএসইসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিএসইসি ভবনে অনুষ্ঠিত সভায় বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ, বিএসইসির কমিশনার মু. মোহসিন চৌধুরী, মো. আলী আকবর, ফারজানা লালারুখ এবং বিএসইসির সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
রাশেদ মাকসুদ বলেছেন, বিএসইসির সামগ্রিক ঘটনার ব্যাপারে সরকারের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি বিভিন্ন এজেন্সিও অবগত আছে। সোমবার (১০ মার্চ) বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের সঙ্গে কমিশনের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনুষ্ঠিত সভায় তিনি এ কথা বলেন।
সভায় বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ বলেন, বিএসইসির ইতিহাসের একটি ক্রান্তিলগ্নে আজকের সভায় বিএসইসির সকলে একত্রিত হয়েছে। গত ০৫ মার্চ সংঘটিত ঘটনাকে চরম অনভিপ্রেত এবং কিছু উচ্ছৃঙ্খল কর্মচারীর প্ররোচনায়, ইন্ধনে এবং অংশগ্রহণে তা সংঘটিত হয়েছে বলে এসময় উল্লেখ করেন তিনি। এ ঘটনা প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ এর পাশাপাশি গুরুতর ফৌজদারি অপরাধ বলে মন্তব্য করেন তিনি। ওই ঘটনা আমাদের পুঁজিবাজার এর জন্য মারাত্মক ঘটনা। যা দেশে ও বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন করেছে এবং এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনা সারা পৃথিবীতে কোন রেগুলেটরি সংস্থায় এই প্রথম ঘটল বলে জানান তিনি। তিনি একে জাতীয় জীবনে চরম দুঃখজনক অধ্যায় বলে উল্লেখ করেন।
জাতীয় স্বার্থে একটি গুরুত্বপূর্ণ রেগুলেটরি সংস্থা এভাবে চলতে পারে না উল্লেখ করে তিনি ভবিষ্যতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিপূর্ণ দায়িত্বশীলতা ও শৃঙ্খলার সাথে কাজ করার নির্দেশনা দেন। যারা নিষ্ঠা-সততার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন, তারা বিএসইসির ক্রান্তিলগ্নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে এসময় মন্তব্য করেন তিনি। আগামীতে সবার সহযোগিতায় বিএসইসি তার কার্যক্রম গতিশীলতার সাথে চালিয়ে যাবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
গত বুধবার সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানের বাধ্যতামূলক অবসরকে কেন্দ্র করে বিএসইসির বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও তিন কমিশনারের কাছে চার দফা দাবি তুলে ধরেন। এই দাবি আদায়ে বিএসইসির কার্যালয়ের বিদ্যুৎ–সংযোগ, সিসিটিভি-সংযোগ বিচ্ছিন্ন, মূল ভবনের ফটক বন্ধ করে চেয়ারম্যান ও তিন কমিশনারকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। এরপর সেনাসদস্যরাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এসে চেয়ারম্যান ও তিন কমিশনারকে ‘অবরুদ্ধ’ অবস্থা থেকে উদ্ধার করেন। এই উদ্ধার অভিযানকালে বিএসইসির কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী আহত হন। এর প্রতিবাদে চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে গত বৃহস্পতিবার থেকে কর্মবিরতির ঘোষণা দেন বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
এদিকে বুধবারের ঘটনায় বিএসইসির ১৬ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আসামি করে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা হয়েছে। বিএসইসির চেয়ারম্যানের গানম্যান বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার এ মামলা করেন। এই মামলার পর সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মবিরতি বাদ দিয়ে স্বাভাবিক কাজে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন।
মন্তব্য করুন