পিলখানায় বিডিআর হত্যাকাণ্ডের তদন্তে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল তারেক আহমেদ সিদ্দিক (অব.) সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ, ঢাকা দক্ষিণের সাবেক মেয়র ফজলে নূর তাপসসহ ১৫ জনকে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য তলব করেছে জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন।
শনিবার (৮ মার্চ) কমিশন থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আগামী সাত দিনের মধ্যে কমিশনের কার্যালয়ে হাজির হয়ে বা অনলাইনে সাক্ষ্য দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সাক্ষ্য প্রদানের জন্য আরও যাদের ডাকা হয়েছে তারা হলেন— সাবেক সংসদ সদস্য শেখ সেলিম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মির্জা আজম, বাহাউদ্দিন নাছিম, বিডিআরের ৪৪ ব্যাটালিয়নের তৎকালীন অধিনায়ক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ শামসুল আলম (অব.), সাবেক ডিজিএফআই প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোল্লা ফজলে আকবর (অব.), সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল মঈন উ আহমেদ (অব.), সাবেক র্যাব প্রধান হাসান মাহমুদ খন্দকার, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল কাহার আকন্দ, সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক নূর মোহাম্মদ এবং সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি মনিরুল ইসলাম।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, সাক্ষ্য প্রদান অপরিহার্য হয়ে পড়ায় উল্লিখিত ব্যক্তিরা কমিশনের কার্যালয়ে হাজির হয়ে অথবা অনলাইনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সাক্ষ্য দিতে পারবেন।
এতে বলা হয়, আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে কমিশনকে সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম শেষ করতে হবে। এজন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সাত দিনের মধ্যে সাক্ষীদের তাদের প্রস্তাবিত সময়সূচি কমিশনকে ফোন, ই-মেইল অথবা চিঠির মাধ্যমে জানাতে হবে।
অসহযোগিতার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও সতর্ক করে কমিশন।
এদিকে পিলখানায় বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনা সম্পর্কিত তথ্য চেয়ে বুধবার (৫ মার্চ) গণবিজ্ঞপ্তি দেয় জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, বর্বরতম হত্যাযজ্ঞের সঙ্গে জড়িত দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র ও প্রকৃত ঘটনার স্বরূপ উদ্ঘাটনে কাজ করছে কমিশন। এ ঘটনায় হওয়া দুটি মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিবর্গ ব্যতীত, ঘটনার ষড়যন্ত্রকারী, সহযোগী, আলামত ধ্বংসকারী, সংঘটনকারী এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যক্তি, গোষ্ঠী, সংস্থা, বিভাগ বা সংগঠনকে চিহ্নিত করার লক্ষ্যে জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে। সংঘটিত অপরাধ প্রতিরোধে ব্যর্থতার জন্য দায়ী ব্যক্তিদেরও চিহ্নিত করতে কাজ করছে কমিশন।
উল্লিখিত বিষয়ে নির্ভরযোগ্য তথ্য ও সাক্ষ্য আহ্বান করা হয়েছে। কমিশন জানিয়েছে, যে কোনো তথ্যদাতা কয়েকটি মাধ্যমে তাদের তথ্য দিতে পারবেন। বিস্তারিত তথ্য কমিশনের ওয়েবসাইটে (bdr-commission.org) পাওয়া যাবে। ই-মেইলের ([email protected]) মাধ্যমে তথ্য পাঠানো যাবে। এ ছাড়া, কমিশনে সরাসরি উপস্থিত হয়ে বা ডাকযোগে তথ্য পাঠানো যাবে।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের ৪৯ দিনের মাথায় ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি সংঘটিত নারকীয়, নৃশংস ও মর্মান্তিক ওই ঘটনায় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন।
মন্তব্য করুন