বর্তমানে দেশে নারীদের নির্যাতন, হেনস্তার বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার (৭ মার্চ) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সহদপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন ‘দেশের উন্নয়ন, অগ্রগতিসহ সব ক্ষেত্রে নারীরা পুরুষের পাশাপাশি অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন। শিক্ষা ক্ষেত্রেও নারীরা যে, অগ্রগামিতা দেখাচ্ছে তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। দেশের মতো বিদেশেও নারীরা প্রশসংনীয় ভূমিকা রেখে দেশের সম্মান বৃদ্ধি করছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থানে ছাত্রী, নারী শ্রমিকসহ বিভিন্ন পেশার নারীদের ইভটিজিং, শ্লীলতাহানি এবং হেনস্তা করা হচ্ছে। ধর্ষণ ও নির্যাতন করে নারীদের হত্যা করা হচ্ছে। ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে এর ব্যাপকতা বৃদ্ধি পেয়েছে। আওয়ামী সরকার নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়নি এবং বিচারহীনতার কারণে নির্যাতনকারীরা আরও উৎসাহিত এবং বেপরোয়া হয়েছে, যা বর্তমানেও চলমান রয়েছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি যে, রাস্তাঘাটে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নারীদের বিভিন্নভাবে হেনস্তা করার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই ধরনের প্রবণতা বিপজ্জনক। এসব ঘটনা ঘটিয়ে নৈরাজ্য ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে। নারীদের সম্মান রক্ষা এবং নারী স্বাধীনতা রক্ষা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব, যা নারীদের সংবিধান স্বীকৃত অধিকার। নারী-নির্যাতনসহ দেশের সার্বিক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে দেশের মানুষ এখন চরম উদ্বিগ্ন। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও বিরোধিতা করছি এবং একইসঙ্গে সকলকে সচেতনভাবে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানাচ্ছি। সরকারকে নারী নির্যাতনসহ সব নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি কঠোর হস্তে দমন করে দেশে ন্যায়বিচার এবং শান্তি প্রতিষ্ঠা করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
এদিকে নারী দিবস উপলক্ষে শুক্রবার (৭ মার্চ) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাস দেন মির্জা ফখরুল। এতে তিনি বলেন, একটি আধুনিক রাষ্ট্রের অন্যতম নির্ধারক হচ্ছে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
পোস্টে তিনি লেখেন, ‘গত পনেরো বছরে হাজার হাজার পুরুষ, নারী গুম, খুন, অত্যাচারিত হয়েছে। অমানবিক সংগ্রাম করেছে ওই পরিবারগুলোর নারীরা। জুলাইতেও আন্দোলনের শুরু এই বাংলাদেশের নারীদের হাতেই। শহীদ হয়েছে আমাদের সন্তানেরা, ছোট শিশুকন্যাও। হিন্দু, মুসলিম, খ্রিশ্চান, বৌদ্ধ, সকলেই এই আন্দোলনের শরিক।’
তিনি লেখেন, ‘আমরা এমন বাংলাদেশ গড়তে চাই যেখানে নাগরিকদের নিরাপত্তা দেওয়াই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সর্বোচ্চ লক্ষ্য থাকবে। লিঙ্গ, বয়স, পেশা নির্বিশেষে প্রতিটা নাগরিক যেন রাস্তাঘাটে চলাফেরা করতে নিরাপদ বোধ করে এমন বাংলাদেশ আমাদের কাম্য। বাড়ি থেকে রাস্তায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে, অফিসে, সর্বত্র তাদের আত্মসম্মানকে মূল্যায়ন করা উচিত।’
ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে উগ্রবাদের কোনো জায়গা নেই উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল লেখেন, ‘একটি আধুনিক রাষ্ট্রের অন্যতম নির্ধারক হচ্ছে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। আসুন আমরা নারীদের প্রতি উগ্রতা, বিদ্বেষ, এবং অশ্রদ্ধামূলক সকল আচরণকে না বলি এবং এই লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা সুসংহত করার জন্য আহবান জানাই।’
বিএনপি মহাসচিব লেখেন, আগামীকাল শনিবার (৭ মার্চ) আন্তর্জাতিক নারী দিবস। নারীরা আমাদের উন্নয়ন এবং অগ্রগতিতে অংশীদার। আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রাক্কালে, আসুন আমাদের অগ্রগতি দ্রুততর করতে পদক্ষেপ নিই।
মন্তব্য করুন