গরমের সময়ে রাজধানীতে সব থেকে বেশি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। গরম আসতে না আসতেই ঢাকায় একাধিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। সম্প্রতি হাজারীবাগ, খিলগাঁও তালতলাসহ বেশ কয়েক জায়গায় আগুন লেগেছে।
এ সপ্তাহে গুলশানের শাহজাদপুরে আবাসিক হোটেলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত হয়েছেন চারজন। এর পরপরই আবার গাবতলীর শাহি মসজিদ বস্তিতে আগুন লেগে বস্তিবাসীর সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই আবার ভাসানটেক এলাকার আবুলের বস্তিতে আগুন লাগে।
শুষ্ক ও উষ্ণ আবহাওয়ার কারণে এ সব অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা রোধে সতর্কতামূলক নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
বুধবার (০৫ মার্চ) বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভেরিফায়েড ফেসবুকে পেজে (বাংলাদেশ আর্মি) এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বর্তমান শুষ্ক ও উষ্ণ আবহাওয়ার কারণে অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে জনবহুল এলাকা, শিল্পাঞ্চল, বাজার এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আগুন লাগার ঝুঁকি বেশি। এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আগুনসংক্রান্ত যে কোনো দুর্ঘটনা বা নাশকতা প্রতিরোধে নিম্নলিখিত সতর্কতামূলক নির্দেশনা অনুসরণ করতে অনুরোধ জানাচ্ছে।
সাধারণ নিরাপত্তাব্যবস্থার জন্য সিসিটিভি পর্যবেক্ষণ, জনবহুল এলাকা, শিল্পকারখানা ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় কার্যকর সিসিটিভি সার্ভেইলেন্স নিশ্চিত করুন এবং ২৪-৭ মনিটরিং করুন। প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ, উচ্চ-সংবেদনশীল এলাকাগুলোতে প্রবেশাধিকার সীমিত করুন এবং অনুমোদিত ব্যক্তিদের পরিচয় যাচাই করুন। সন্দেহজনক কার্যকলাপ শনাক্তকরণ, যে কোনো অস্বাভাবিক কর্মকাণ্ড (যেমন— অপ্রত্যাশিত দাহ্য পদার্থের উপস্থিতি, অননুমোদিত ব্যক্তি বা যানবাহন) সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করুন।
এতে বলা হয়, অগ্নিপ্রতিরোধ ও নির্বাপণ ব্যবস্থার জন্য স্ট্যান্ডার্ড ফায়ার সেফটি গিয়ার, সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় অগ্নিনির্বাপক (ফায়ার এক্সটিংগুইশার, ফায়ার ব্ল্যাঙ্কেট, স্মোক ডিটেক্টর) পর্যাপ্ত পরিমাণে স্থাপন করুন। ইলেকট্রিক্যাল ওভারলোডিং রোধ, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ও বাণিজ্যিক ভবনগুলোতে বৈদ্যুতিক লোড ব্যালান্সিং পরীক্ষা করুন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন। অগ্নিনির্বাপক সরঞ্জামের রক্ষণাবেক্ষণ, নিয়মিত ফায়ার হাইড্রেন্ট, স্প্রিংকলার সিস্টেম ও ফায়ার অ্যালার্মের কার্যকারিতা পরীক্ষা করুন।
নাশকতা প্রতিরোধ ও প্রতিক্রিয়া ব্যবস্থার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নজরদারি, সম্ভাব্য অগ্নিসংযোগমূলক কর্মকাণ্ড শনাক্ত করতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অন্যান্য উৎস মনিটর করুন। কুইক রেসপন্স টিম, শিল্প এলাকা, বাজার ও জনসমাগমস্থলে দ্রুত প্রতিক্রিয়াশীল নিরাপত্তা টিম প্রস্তুত রাখুন। জরুরি যোগাযোগ ও সমন্বয়, স্থানীয় প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সঙ্গে দ্রুত তথ্য বিনিময়ের জন্য হটলাইন নম্বরগুলো জেনে রাখুন।
যে কোনো অগ্নিকাণ্ড বা সন্দেহজনক কর্মকাণ্ড দেখলে নিম্নোক্ত নম্বরে দ্রুত যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে-
জাতীয় জরুরি সেবা : ৯৯৯
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স: ১০২
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নিকটস্থ ক্যাম্প
আগুন প্রতিরোধে প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা ও সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আমরা সম্মিলিতভাবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম হবো।
মন্তব্য করুন