চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সংবাদমাধ্যমটি প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে। এ জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। তবে তা নির্ভর করবে তার সরকার কত দ্রুত সংস্কার করতে পারে তার ওপর। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান সংস্কার প্রয়োজনীয় মনে করেন প্রধান উপদেষ্টা।
ড. ইউনূস বলেন, আমাদের প্রত্যাশামতো যদি তাড়াতাড়ি সংস্কার করতে পারি, তাহলে ডিসেম্বরেই আমরা নির্বাচন অনুষ্ঠান করব। যদি সংস্কারের আরও দীর্ঘ সংস্করণ থাকে, তাহলে আমাদের আরও কয়েক মাস সময় লাগতে পারে।
গত গ্রীষ্মে বাংলাদেশে যে সহিংস বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছিল তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা সম্পূর্ণ বিশৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে আসছি। মানুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এর আগে বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, প্রথম চিন্তা আসলো যে একটা সংস্কার দরকার আমাদের। কারণ যে কারণে এসব ঘটনা ঘটেছে, ফ্যাসিবাদী সরকার চলতে পেরেছে। ১৬ বছর ধরে চলতে পেরেছে, আমরা কিছুই করতে পারি নাই। তিন-তিনটা নির্বাচন হয়ে গেল, ভোটারের কোনো দেখা নাই। এই যে অসংখ্য রকমের দুর্নীতি এবং ব্যর্থতা, মিসরুল ইত্যাদি– সেখান থেকে আমরা কীভাবে টেনে বের করে আনব। টেনে বের করে আনতে গেলে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারগুলো করতে হবে।
বিবিসি বাংলার প্রশ্ন ছিল- অন্তর্বর্তী সরকারের একটা বড় লক্ষ্য হিসেবে আপনি সংস্কারের কথা বলেছেন। এটি নিয়ে আপনি অনেকগুলো কমিশনও গঠন করেছেন। কিন্তু এখন যেহেতু আপনারাই বলছেন যে বছরের শেষে নির্বাচন হবে। তো এই অল্প সময়ের মধ্যে আপনারা সংস্কার কতটা করতে পারবেন বলে মনে করেন?
জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সেটা আমরা প্রক্রিয়া শুরু করেছি। আমরা একেবারে প্রত্যেকটা সুপারিশ দেব। সুপারিশের সঙ্গে কথা থাকবে যে, আপনার রাজনৈতিক দল এটা কি সমর্থন করে? এটাতে রাজি আছেন? রাজি থাকলে বলেন, রাজি না থাকলে বলেন। বা এই যে সুপারিশটা আছে সেটার মধ্যে যদি কোনো একটা সংশোধনী এনে রাজি হবেন, সেটা বলেন। এটা কি নির্বাচনের আগে সংশোধন করা ঠিক হবে নাকি নির্বাচনের পরে – সব প্রশ্নের এখানেই সমাবেশ আছে।
রাজনৈতিক দলকে শুধু বলতে হবে কোনটা? সবকিছু মিলালে আমরা এটা ঠিক করব কোন সুপারিশে সবাই একমত হয়েছে। সেটা আলাদা করব যে এটাতে সবাই একমত হয়েছে। এরকম যে সমস্ত সুপারিশে তারা একমত হয়েছে, সেগুলো আমরা আলাদা একটা কাগজে নিয়ে আসব যে এইসব বিষয়ে সবাই একমত হয়েছে। তবে এটাকে আমরা বলব একটা চার্টার – জুলাই চার্টার।
এবং সবাইকে আহ্বান জানাবো, আপনারা সবাই যেহেতু একমত হয়েছেন এটাতে সই করে দেন। জুলাই চার্টারের মতোই আমরা চলব। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই নির্বাচনটা হবে। নির্বাচনের আগে যেটা বলেছেন সেটা নির্বাচনের আগে হবে, যেটা নির্বাচনের পরে বলেছেন সেটা নির্বাচনের পরে হবে। এটা আপনাদের বিষয়। কিন্তু আপনারা একমত হয়েছেন। সেই ঐকমত্যই আমরা গঠন করার চেষ্টা করছি।’
মন্তব্য করুন