আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গত বছরের ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। এই সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। আজ মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার পদ থেকে তিনি পদত্যাগ করেছেন।
নাহিদ ইসলাম অন্তর্বর্তী সরকারে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছিলেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করতে যাচ্ছে। এই দলের নেতৃত্ব দেবেন নাহিদ ইসলাম। সে কারণে তিনি উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন বলে জানা গেছে। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি নতুন এই রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ হওয়ার কথা রয়েছে। আজকে তার পদত্যাগের মধ্য দিয়ে সে পথ অনেকটা সুগম হলো।
নাহিদ ইসলামের জন্ম ১৯৯৮ সালে ঢাকায়। তার ডাকনাম ‘ফাহিম’। নাহিদের বাবা শিক্ষক। সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে। ইতোমধ্যে মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন। নাহিদের ছোট এক ভাই রয়েছে। এ ছাড়া ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত।
জুলাই মাসেও নাহিদ ততটা পরিচিত মুখ ছিলেন না। কিন্তু জুলাইয়ের মাঝামাঝিতে তাকে অপহরণ করা হলে দেশব্যাপী তিনি পরিচিত হয়ে ওঠেন। কোটাবিরোধী আন্দোলন ঘিরে তাকে দুবার আটক করা হয়। এ সময় তিনি অকথ্য নির্যাতনেরও শিকার হন। ওই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। এর তিন দিনের মাথায় ৮ আগস্ট অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়।
নাহিদ ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন। তবে নেতৃত্বে ছিলেন না। আন্দোলন চলাকালে নাহিদের এক সহপাঠী ও সিনিয়র শিক্ষার্থীকে সাদা পোশাকে পুলিশ তুলে নিয়ে গেলে নাহিদ আন্দোলন গড়ে তোলেন। তখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষকদের বাধার মুখে পড়তে হয় নাহিদকে।
২০১৯ সালে ডাকসু নির্বাচনে নুরুল-রাশেদ-ফারুক প্যানেল থেকে নাহিদ নির্বাচনে অংশ নেন। নাহিদ সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে নির্বাচন করেন। নির্বাচনে তিনি জয়ী হননি। পরে মতবিরোধের কারণে ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ থেকে বেরিয়ে যান তিনি। ২০২৩ সালের ৪ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন নির্দলীয় ছাত্র সংগঠন ‘গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি’ আত্মপ্রকাশ করে। এর কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব ছিলেন নাহিদ ইসলাম।
মন্তব্য করুন