সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ ফাল্গুন ১৪৩২
কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:০৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

‘দাবি আদায়ে সহিংসতা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে’

অধ্যাপক রেহমান সোবহান। ছবি : সংগৃহীত
অধ্যাপক রেহমান সোবহান। ছবি : সংগৃহীত

দাবি আদায় করতে লোক জড়ো করা এবং সহিংসতা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সিপিডির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান। এখান থেকে বের হওয়ার রাস্তা খোঁজার আহ্বান জানান তিনি। রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টার ইনে শনিবার বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে ‘অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রাজনীতি’ শীর্ষক একটি অধিবেশনে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

গবেষণা সংস্থা সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক রওনক জাহানের সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইজিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. মির্জা এম হাসান।

অনুষ্ঠানে অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, অতীতের ক্ষমতার চর্চা ছিল অর্থের ও ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার জন্য। আদর্শের চর্চার প্রভাব খুব একটা ছিল না। জাতীয় সংসদের প্রধান থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য পর্যন্ত সবাইকে এ ধারায় চলতে দেখা গেছে। আওয়ামী লীগ চলে গেলেও সেই টাকার প্রভাবের শূন্যতা পূরণ হয়ে যাচ্ছে।

আলোচনায় অংশ নিয়ে সংবিধান সংস্কারে গঠিত কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, বর্তমান সংবিধানে প্রধানমন্ত্রীকে তার কাজের জন্য জবাবদিহির আওতায় আনার কোনো ব্যবস্থা নেই। এতে প্রধানমন্ত্রীর স্বেচ্ছাচারী হয়ে ওঠার যথেষ্ট সুযোগ আছে। সংবিধান সংস্কারের প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রীর জবাবদিহি নিশ্চিতের প্রবিধান সংযুক্ত করা হবে।

আলী রীয়াজ আরও বলেন, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থাকে কেউ কেউ ‘বিপ্লব’ বলেন। আদতে এটা বিপ্লব ছিল না। বিপ্লব হলে বিভিন্ন কমিশন গঠন করার দরকার হতো না। তিনি উল্লেখ করেন, সংবিধান সংস্কার কমিশন তাদের প্রস্তাব দিয়েছে। এখন রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর নির্ভর করবে তারা কতটুকু গ্রহণ করবে।

অধ্যাপক রওনক জাহান বলেন, সবাই সংস্কার চান। তবে কী সংস্কার চান, তা সুস্পষ্ট করা উচিত। সংস্কার কেবল আইনের পরিবর্তনের মধ্যে আটকে থাকলে হবে না। আইন অনেক আছে। সমস্যা রাজনৈতিক চর্চার। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র ব্যবস্থায় অনেকগুলো সংস্কারের জন্য কাজ করছে। এরই মধ্যে অনেক সংস্কার প্রস্তাবও এসেছে। তবে সংস্কার প্রস্তাবের অনেকগুলো আইন পরিবর্তনের জন্য। সত্যিকার অর্থে, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে চাইলে জনগণকে সিদ্ধান্ত গ্রহণের মূল ভূমিকা রাখতে হবে।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক চর্চার পরিবর্তনের জন্য অন্তর্বর্তী নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল। কিন্তু সেই সরকার ব্যবস্থাকেও রাজনীতিকীকরণ করা হয়েছিল। রাষ্ট্রক্ষমতাকে ব্যবহার করে ক্ষমতা ধরে রাখার চর্চাও দেখা গেছে। প্রতি বছর সম্পদের হিসাব প্রকাশ করবে– ‘দিন বদলের’ কথা বলে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে সে প্রতিশ্রুতি রাখেনি। কীভাবে মানুষ এটা বিশ্বাস করবে, রাজনৈতিক দলগুলো যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসছে, সেই প্রতিশ্রুতি রাখবে।

বক্তারা আরও বলেন, নিজেদের পক্ষে কথা বলার জন্য রাষ্ট্র ব্যবস্থায় প্রতিনিধি পাঠানোর পর যদি জনগণ দেখেন তাদের পক্ষে ওই প্রতিনিধি কথা বলছেন না, তাহলে তাকে ফেরত নেওয়ার ব্যবস্থাও থাকা উচিত। রাজনৈতিকগুলো গণতন্ত্রের কথা বললেও নিজেরা গণতন্ত্রের চর্চা করে না। মুখে জনগণই সব ক্ষমতা উৎস– এমনটা বললেও সংসদে নিজ দলের বিরুদ্ধেই কথা বলতে পারে না।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নতুন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের আত্মপ্রকাশ, অনুষ্ঠানে ৩ বাহিনীপ্রধান ও রাজনীতিবিদরা

‘মার্চে ঢাকায় আসছেন জাতিসংঘের মহাসচিব’

ডব্লিউএইচও ও এফসিটিসি নিয়ে বিশ্বব্যাপী বিতর্ক

আশুলিয়া-সাভারে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, শিশুসহ দগ্ধ ১০

রাজশাহীতে ডেভিল হান্টের তিনজনসহ গ্রেপ্তার ১৬ জন

অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশকালে সীমান্তে যুবক আটক

তামাকের আগ্রাসন দীঘিনালায়, হুমকিতে জনস্বাস্থ্য

যে কোনো মুহূর্তে যুদ্ধ শুরু করতে প্রস্তুত ইসরায়েল : নেতানিয়াহু

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বগুড়ায় হত্যা মামলার আসামি গ্রেপ্তার

দক্ষিণ ঢাকায় জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন করতে দেব না : ইশরাক

১০

সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন জুলাই বিপ্লবে আহতের পাশে তারেক রহমান

১১

কোহলির শতরানে পাকিস্তানের স্বপ্নভঙ্গ

১২

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও এবি পার্টির দ্বিপক্ষীয় বৈঠক

১৩

ফাঁকা পড়ে আছে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর, বারান্দায় খড়ের স্তূপ

১৪

কুষ্টিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা বহিষ্কার

১৫

জঙ্গি নাটকে পাঁচ বছর কারাগারে খুবির দুই শিক্ষার্থী

১৬

স্টুডিওতে ছবি তুলতে ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগ মাদ্রাসাছাত্রীর

১৭

গাজী মুনছুর আজিজের ভ্রমণগল্প ‘পাখির খোঁজে বাংলাজুড়ে’র প্রকাশনা উৎসব

১৮

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেত্রী শিরীন / ‘আধা শতাংশ জমির দাম ১০ কোটি কীভাবে হয়?’

১৯

জানা গেল ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি না দেওয়ার কারণ

২০
X