ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি কেমন হবে তার মডেল তুলে ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন আমেরিকার হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. মির্যা গালিব।
রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে তিনি এ স্ট্যাটাস।
ফেসবুকে স্ট্যাটাস গালিব লেখেন, ‘ধরেন, আপনি কোনো একটা ছাত্র সংগঠনের একটা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি। আপনার ক্যাম্পাসে আপনার দলের হাজারখানেক নেতাকর্মী আছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই এক হাজার ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে আপনি কী করবেন?’
তিনি লেখেন, ‘মডেল-১: আপনি সপ্তাহে দুই/তিন দিন এদেরকে সঙ্গে নিয়ে একটা করে মিছিল করবেন। ঝাঁঝালো কণ্ঠে স্লোগান দিয়ে ক্যাম্পাস প্রকম্পিত করবেন। আর প্রতিদিন এদের অনেককে আশপাশে নিয়ে ক্যাম্পাসে হাঁটবেন যাতে দেখলেই বোঝা যায় আপনি অনেক বড় নেতা। এই মিছিল আর শোডাউনের পেছনে যে সময়গুলো যাবে এইটার আসলে কোনো ইউটিলিটি নাই। বরং স্লোগানের শব্দে কিছুটা সাউন্ড পল্যুশান হবে। আর লাইব্রেরিতে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটবে।’
মির্যা গালিব আরও লেখেন, ‘মডেল-২: আপনি ১২টা বই বাছাই করবেন। ভালো ভালো বই। সাহিত্য, দর্শন, ধর্ম, বা ইতিহাসের উপর। তারপর এক হাজার ছাত্র-ছাত্রীকে দশজন দশজন করে একশ গ্রুপে ভাগ করে দিবেন। প্রত্যেক গ্রুপ প্রতি মাসে একটা করে বইয়ের উপর পাঠচক্র করবে। তারপর নিয়মিত কিছু ওয়ার্কশপ আয়োজন করবেন, যেইখানে ক্রিয়েটিভ রাইটিং, ইংলিশ স্পোকেন, প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ, রোবটিক্স এই সব শিখাবে। পাশাপাশি বিতর্ক, গান, আবৃত্তি, তেলাওয়াত এই সব শিখার জন্য ক্লাব বা ওয়ার্কশপ চালাবেন। প্রতি মাসে একবার করে ক্যাম্পাসে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালাবেন। এই মডেলে মিছিল মিটিং স্লোগান থাকবে না বা কম থাকবে কিন্তু সময়গুলো কাজে লাগবে। দলের প্রত্যেক কর্মীর জ্ঞান, যোগ্যতা আর দক্ষতার উন্নতি হবে।’
হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক লেখেন, ‘প্রথম মডেলটা হইল ট্র্যাডিশনাল প্রকাশ্য রাজনীতি। কিন্তু এই রাজনীতির মধ্য দিয়ে আধুনিক প্রতিযোগিতামূলক দুনিয়ায় সামনে আগানো সম্ভব না। আর দ্বিতীয় মডেলটা হল একটা ক্রিয়াশীল গঠনমূলক ছাত্র রাজনীতির মডেল। এইটাতে আওয়াজ কম বলে অনেকের কাছে ‘গুপ্ত’ রাজনীতি বলে মনে হইতে পারে। কিন্তু ছাত্র রাজনীতির এই মডেলটাই কী আমাদের অধিক প্রয়োজন না?’
মন্তব্য করুন