অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন সূচিত হলেও এর মূল চেতনা স্বাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ছিল।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে মাতৃভাষা পদক প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন সূচিত হলেও এর মূল চেতনা ছিল স্বাধিকার প্রতিষ্ঠা। এটি ছিল রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তির আন্দোলন।
তিনি বলেন, ‘আমরা দ্রুত গতিতে নতুন পৃথিবী সৃষ্টি করে চলেছি। এ জন্য নিত্যনতুন প্রযুক্তি প্রধানত দায়ী। প্রযুক্তির প্রাধান্যের সঙ্গেই ভাষার প্রাধান্য আসে। তাই বাঙালির কাছে একুশ মানে মাথা নত না করার প্রত্যয়।’
ড. ইউনূস বলেন, যে দেশের প্রযুক্তি পৃথিবীতে প্রাধান্য অর্জন করতে থাকবে, তার সঙ্গে প্রাধান্য অর্জন করতে থাকবে প্রযুক্তিদাতা দেশের ভাষা। সারা পৃথিবী এই ভাষা শেখার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়বে। যে দেশ পৃথিবীতে নেতৃত্ব দেবে, সে দেশের ভাষার জন্য সারা পৃথিবী ঝুঁকে পড়বে। তিনি আরও বলেন, প্রযুক্তি ছাড়াও যে কোনো একটি দিক থেকে জাতি নেতৃত্ব দিতে পারলে, সে দেশের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়বেই। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিভিন্ন দেশে শৈশবে পড়ার সময় মাতৃভাষার পাশাপাশি একটি ভিন্ন ভাষা শেখা বাধ্যতামূলক করা হয়। ইংরেজি শিখলেই বাংলা ভুলে যেতে হবে- এ রকম কোনো চিন্তা তাদের মাথায় আসে না।
প্রসঙ্গত, এবারে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা জাতীয় পদক পেয়েছে তিন দেশি-বিদেশি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। মাতৃভাষা সংরক্ষণ, পুনরুজ্জীবন ও বিকাশে ভূমিকা রাখায় পদক পান ভাষাবিজ্ঞানী ও ভাষা গবেষক অধ্যাপক আবুল মনসুর মুহম্মদ আবু মুসা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জীবনানন্দ দাশের রচনাবলি অনুবাদ এবং বাংলা ভাষার আন্তর্জাতিকীকরণ ও প্রসারে ভূমিকা রাখার জন্য পদক পান ইংল্যান্ডের কবি, লেখক ও অনুবাদক জোসেফ ডেভিড উইনটার এবং মহান ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসকে কেন্দ্র করে ইউনেসকো কর্তৃক ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি প্রদানে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করায় প্রতিষ্ঠান ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পায় প্যারিস অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস।
মন্তব্য করুন