বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে প্রতিষ্ঠানটির সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তাদের লকার খুলতে যাওয়া দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পরিচালক কাজী সায়েমুজ্জামানকে এবার দুদক থেকেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর আগে তাকে প্রথম দফায় বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মামলার দায়িত্ব থেকে অব্যহতি ও পরে তার দপ্তর বদল করা হয়। এবার দুদক থেকে সরিয়ে তাকে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হলো।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানা গেছে। গত দুই বছর যাবৎ দুদকে বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি সংক্রান্ত অনুসন্ধান বিভাগের পরিচালক হিসেবে তিনি দায়িত্বে ছিলেন।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের দুর্নীতি নিয়ে বেশ আলোচনায় আসেন সায়েমুজ্জামান। অনুসন্ধান চলাকালে প্রতিষ্ঠানটির বিপুল সংখ্যক কর্মকর্তার সেইফ ডিপোজিটের (লকার) খোঁজ পান তিনি। তারপরই বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা তার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখালেখির অভিযোগ এনে দুদকের কাছে নালিশ করেন।
এরই প্রেক্ষিতে গত ১০ ফেব্রুয়ারি কাজী সায়েমুজ্জামানকে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের দুর্নীতিসংক্রান্ত অনুসন্ধান ও মামলার তদারককারী কর্মকর্তার দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়। সেসময় তাকে কারণ দর্শানোরও নোটিশ দেওয়া হয়। পরে তাকে জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল কর্মপরিকল্পনা (এনআইএস) ও ইউনাইটেড নেশনস কনভেনশন এগেইনস্ট করাপশনের (ইউএনসিএসি) ফোকাল পয়েন্টের পরিচালকের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এর আগে গত ২৬ জানুয়ারি দুদকের পরিচালক কাজী সায়েমুজ্জামানের নেতৃত্বে সংস্থাটির একটি দল বাংলাদেশ ব্যাংকে ব্যাংকটির সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার চৌধুরীর (এসকে সুর) লকার তল্লাশি করে। গোপন লকার থেকে এক কেজি স্বর্ণ, ১ লাখ ৬৯ হাজার ৩০০ ডলার, ৫৫ হাজার ইউরো ও ৭০ লাখ টাকার এফডিআর পায় দুদক।
এরপরই ব্যাংকের আরও কর্মকর্তাদের লকারের বিষয়টি সামনে আসে। পরবর্তীতে আদালতের অনুমোদন নিয়ে দুদকে অভিযোগ জমা পড়া বাকি কর্মকর্তাদের লকার খোলার উদ্যোগ নিচ্ছিলেন দুদকের এই পরিচালক। এরপরই তাকে দুদক থেকে সরিয়ে দেওয়া হলো।
মন্তব্য করুন