র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) নাম পরিবর্তন হচ্ছে। একই সঙ্গে পুনর্গঠন হচ্ছে ফোর্সটি।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সভায় র্যাবের নাম ও পোশাকের বিষয়ে একটা ধারণা দেওয়া হয়েছে। সংস্থাটিকে নতুন করে গঠন করা হবে। র্যাবের নাম ও পোশাকের বিষয়ে সবার মতামত নেওয়া হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির পরবর্তী সভায় নাম ও পোশাকের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এর আগে, ১২ ফেব্রুয়ারি জুলাই অভ্যুত্থানের সঙ্গে সম্পর্কিত মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতন সংক্রান্ত ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং প্রতিবেদনে র্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ করা হয়। জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র্যাব) বিলুপ্ত করুন এবং গুরুতর লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত নন, এমন কর্মীদের নিজ নিজ ইউনিটে ফিরিয়ে দিন।
এছাড়া গত ২৮ জানুয়ারি র্যাব বিলুপ্ত করার সুপারিশ করে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। ‘আফটার দ্য মুনসুন রেভুলেশন : আ রোডম্যাপ টু লাস্টিং সিকিউরিটি সেক্টর রিফর্ম ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ সুপারিশ করে সংস্থাটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। যাত্রা শুরুর পর সব সরকারই এই বাহিনীকে দায়মুক্তির সাথে কাজ করার অনুমতি দেয়। যা র্যাবকে একটি অভ্যন্তরীণ ডেথ স্কোয়াডের মতো কাজ করতে অনুপ্রাণিত করেছে।
এতে বলা হয়, র্যাব বিলুপ্তি করা হবে শুধু এই শর্তেই, র্যাবের সঙ্গে যুক্ত সব কর্মকর্তা যাতে অন্য ইউনিটে গিয়ে একই অপকর্মের চর্চা করতে না পারেন, সে জন্য তাদের মানবাধিকার প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
এ ছাড়া বাংলাদেশে কাঠামোগত সংস্কার না করা হলে ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের কষ্টার্জিত সব অর্জন বৃথা যেতে পারে বলেও সতর্ক করা হয়।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, নিরাপত্তা বাহিনীগুলো পতিত সরকারের আমলে সাধারণ মানুষকে যেভাবে অকারণে হয়রানি করতো এখনো তাতে খুব একটা পরিবর্তন আসেনি। সেই বাহিনীগুলোকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করা বিদ্যমান আপৎকালীন সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালে র্যাব গঠন করা হয়েছিল। গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর র্যাবের সাতজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল মার্কিন সরকার। এরপর হাসিনা সরকারের পতনের পর গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশন তাদের প্রতিবেদনে র্যাবকে বিলুপ্তির সুপারিশ করে।
মন্তব্য করুন