জেলা প্রশাসকদের আইন ও সংবিধান অনুযায়ী কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তিন দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক সম্মেলনের শেষ দিনে আইন মন্ত্রণালয়– সম্পর্কিত অধিবেশনে শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন আইন উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘এখানে ফর্মুলার ব্যাপার নেই। আইনে যা আছে, নীতিমালায় যা আছে, সংবিধানে যা আছে, সেটা মেনে চললে জনগণের সেবা আর কল্যাণ দেওয়া ছাড়া ওনাদের (ডিসি) আর কোনো কাজই নাই। সুতরাং আমাদের শুধু একটা কথাই- আপনি আইন অনুযায়ী চলেন, বিবেক মতো চলেন। তাদের যে জনগণের প্রতিপক্ষ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে, সেটি সম্পূর্ণ আইন ও সংবিধান লঙ্ঘন করে।’
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আজকের ডিসি সম্মেলন আমার জন্য একটা নতুন অভিজ্ঞতা। আমার কাছে মনে হয় এটা খুব জরুরি ছিল। ওনারা মাঠ পর্যায়ে প্রশাসন দেখেন, বাস্তবায়নে কী কী সমস্যা আছে ওনাদের থেকে কেউ ভালো জানেন না।’
আসিফ নজরুল আরও বলেন, প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ব্যাপারে আমরা তাদের একটি অনুরোধ করেছি- যারা এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার পর ছাত্ররা কয়েক মাস সময় পায়। ওই সময়টাতে ওনারা যেন তাদের টিটিসিতে নিয়ে আসেন, টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারে।
প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা বলেন, ‘ওনারা (ডিসি) আমাদের খুবই গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন। ওনারা বলেছেন বিদেশে যারা যেতে চায়, তাদের সবার যেন ডাটাবেজ করা হয়। শুধু প্রশিক্ষণ যারা নিয়েছেন তাদের না। ওনারা যেটি বলেছেন সেটি আমরা সত্যি ভাবছি। যারা বিদেশে যেতে চায় তাদের ডাটাবেজ করার পদক্ষেপ নিয়েছি, অচিরেই কাজ শুরু হবে।’
‘এছাড়া জেলা ও বিভাগ পর্যায়ে আরও সচেতনতা সৃষ্টির কথা বলেছেন। সরকারি যে রিক্রুটিং এজেন্সি আছে সেগুলোকে শক্তিশালী করার কথা বলেছেন। আমাদের কাছে ভালো লেগেছে এটা ভেবে যে, এটা তো আমরাও ভাবছি।’
প্রশাসনের সবচেয়ে মেধাবী কর্মকর্তারা ডিসি হন জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘কিন্তু রাষ্ট্রের এত বড় একটি রিসোর্সকে গত ফ্যাসিস্ট সরকার জনগণকে অত্যাচারের নিপীড়ন করার জন্য, তাদের অপকর্ম জায়েজ করার জন্য ব্যবহার করেছে। সঙ্গে কথা বলে আমার মনে হয়েছে এটা যদি আমরা পজিটিভভাবে কাজে লাগাই, জনগণের সেবার জন্য, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষা করার জন্য, ভূমি ব্যবস্থাপনার জন্য, স্বাস্থ্য-শিক্ষা সেবা দেওয়ার জন্য- সেই ক্যাপাবিলিটি তাদের আছে। কিন্তু ওই রাজনৈতিক দিক-নির্দেশনা থাকে না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করব ভবিষ্যতে যেই দল এই বাংলাদেশে ক্ষমতায় আসুক প্রশাসন ক্যাডারের আমাদের যে অসীম সম্ভাবনার শক্তি রয়েছে, এটাকে যেন জনগণকে নিপীড়নের কাজে না লাগিয়ে আমাদের সংবিধানে যেভাবে বলা আছে জনগণের সেবা করার কাজে যেন লাগাই। এটাই আমার প্রত্যাশা থাকবে।’
সারাদেশে অনেক টিটিসি (কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র) তৈরি হয়ে আছে কিন্তু সেগুলো থেকে প্রত্যাশা অনুযায়ী সেবা পাওয়া যাচ্ছে না- এ বিষয়ে আসিফ নজরুল বলেন, শুধু টিটিসি না, বাংলাদেশের শুধু বিল্ডিং আছে কর্মকর্তা-কর্মচারী আছে সেবা নাই, এটা আমার গত ছয় মাসের অভিজ্ঞতা। আমরা প্রাণান্তকর চেষ্টা করছি, ভালো কিছু করার জন্য।’
মন্তব্য করুন