জাতীয় পরিচয় পত্রের (এনআইডি) ভিত্তিতে পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়াই এখন থেকে পাওয়া যাবে পাসপোর্ট। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে এমন নির্দেশনা দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, পুলিশ ভেরিফিকেশন যথাসময়ে না পাবার কারণে বা পুলিশ ভেরিফিকেশনের সময় অনাবশ্যক কাগজপত্র যাচাইয়ের কারণে আবেদনকারীরা প্রায়শই ভোগান্তিতে পরার অভিযোগ পাওয়া যায়। পাসপোর্টের আবেদনকারীর ভোগান্তি হ্রাস এবং যথাসময়ে পাসপোর্ট প্রাপ্তি নিশ্চিত করার জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশন ব্যবস্থা তুলে দেওয়ার জন্য অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অনুশাসন দিয়েছেন।
এতে বলা হয়, নতুন পাসপোর্টের আবেদনের ক্ষেত্রে অনলাইনে জাতীয় পরিচয় পত্রের তথ্য যাচাই করে আবেদনকারীকে পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়াই পাসপোর্ট প্রদান করতে হবে। এ ছাড়া বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিক ও অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য পাসপোর্টের নতুন আবেদনের ক্ষেত্রে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্যে যাচাই করে পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়াই পাসপোর্ট প্রদান করতে হবে।
এর আগে, গতকাল রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, পাসপোর্ট করতে পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগবে না। এ ধরনের সিদ্ধান্তগুলো জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে ডিসিদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, পাসপোর্ট করতে পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগবে কেন? এটা তো নাগরিক অধিকার। আমরা আইন করে দিয়েছি, এখন থেকে পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগবে না। এই কথা গ্রামে পৌঁছাতে হবে। বিনা কারণে এগুলো হয়রানি করে মানুষকে। হয়রানি করা যেন আমাদের ধর্ম। সরকার মানেই হয়রানি করা, এটাকে উল্টে ফেলতে হবে।
জন্মনিবন্ধন প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অনেক সিদ্ধান্ত ঢাকা থেকে হয়। সেটা কীভাবে জেলা পর্যায়ে বাস্তবায়ন হয় জানা যায় না। যেমন- জন্মনিবন্ধন। এটার কোনো মা-বাবা আছে বলে মনে হয় না। নিয়ম আছে কিন্তু কোনো মা-বাবা নাই।
তিনি আরও বলেন, মধ্য বয়সে কিংবা শেষ বয়সে কোথাও যাওয়া দরকার, পাসপোর্ট করা লাগবে, এ জন্য জন্মনিবন্ধন লাগবে। সেই আমলে কে জন্মনিবন্ধন করতো জানা নেই। কিন্তু পাওয়া যায়, পয়সা দিলে ঠিকই চলে আসে। পয়সা দিলে যখন আসে, না দিলেও আসার কথা। এই সিস্টেম আমরা করতে পারছি না কেন, এটা তো আসলে নাগরিকদের অবশ্য প্রাপ্য। সরকার ব্যবস্থা করতে পারে নাই বলে অজুহাত দিলে তো চলবে না। নিশ্চয় ব্যবস্থা আছে। কাজেই আমাদের সে ব্যবস্থা করতে হবে। জন্মসনদ যে যেই বয়সেই চায় তাকে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। বাংলাদশে জন্ম নেওয়ার দলিল জন্মসনদ। সেটা না হলে এনআইডি পাওয়া যাচ্ছে না, এনআইডি না হলে পাসপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে না। রাতারাতি করে ফেলার আশাও আমি করছি না। শুরু তো করতে হবে।
মন্তব্য করুন