বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রনেতাদের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ ঘটতে যাচ্ছে নতুন ছাত্র সংগঠনের। শিগগিরই এই ছাত্র সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটতে যাচ্ছে।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন জুলাই আন্দোলনের অন্যতম ছাত্রনেতা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার।
আবু বাকের মজুমদার বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিভিন্ন মতাদর্শের লোকজন অংশ নিয়েছে, এখনো আছে। উদাহারণস্বরূপ হিসেবে যদি বলি, এই প্ল্যাটফর্মে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ছাত্রশক্তি, বাম ছাত্র সংগঠন, ইসলামী ছাত্র সংগঠনের শিক্ষার্থীরা ছিল; এখনো আছে। আমরা মনে করছি, জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে দুটি অঙ্গীকার হচ্ছে, ফ্যাস্টিস্ট ব্যবস্থার সম্পূর্ণ বিলোপ এবং নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত। এই দুটি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কার্যক্রম সমাপ্ত হবে।
তিনি বলেন, একইসঙ্গে এখনকার সাধারণ শিক্ষার্থীসহ যারা একটি মতাদর্শ অনুসরণ করে, বিশেষ করে জুলাই অভ্যুত্থানকারীদের যারা আরও সফিস্টিকেটেড ভিশনারি পলিটিকস করতে চায় তারা মূলত এ ছাত্র সংগঠনের উদ্যোগ নিয়েছে।
কবে নাগাদ সংগঠনটি আত্মপ্রকাশ হতে পারে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখনো তারিখ ও নাম চূড়ান্ত হয়নি। জনমত জরিপ ও কর্মসূচির ভিত্তিতে রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনের নাম প্রকাশ করা হবে। এ লক্ষ্যে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যাওয়া হবে। গণতান্ত্রিক উপায়ে সংগঠনের নেতৃত্ব নির্বাচিত হবে।
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আব্দুল কাদের বলেন, আন্দোলন চলাকালীন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, বাম ছাত্র সংগঠনসহ একাধিক ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা এসে যুক্ত হয়েছিলেন। কিন্তু আন্দোলন পরবর্তী সময়ে সবাই তাদের নিজস্ব সংগঠনে ফিরে গেছেন। কিন্তু এর বাইরে একটা বিশাল সংখ্যক শিক্ষার্থী এসেছিল, যারা কোনো সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। তাদের তো এখন কোনো যাওয়ার জায়গা নেই। সেই দিকটা বিবেচনা করেই আমরা একটা ছাত্র সংগঠন প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে এখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভাজন হয়নি বা এখানে অনুমতি নেওয়ার তেমন কিছু নেই।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক রিফাত রশিদ বলেন, আমাদের এই ছাত্র সংগঠন একটি আলাদা উদ্যোগ। বাংলাদেশের প্রতিটি শিক্ষার্থী ছাত্র রাজনীতি নতুন করে প্রতিষ্ঠিত করবে, নতুন ছাত্র সংগঠন গড়ে তুলবে বলে আমরা আশা করি। এটা তেমনই একটি উদ্যোগ। এর সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো সম্পর্ক নেই। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি নির্দিষ্ট অরগানোগ্রাম আছে। সেখানে আহ্বায়ক, সদস্য সচিবরা তাদের মতো করে পরিচালনা করবেন। তারা তাদের মতো করে চলবেন। এটি একটি সতন্ত্র উদ্যোগ, এখানে নিজস্ব গঠনতন্ত্র এবং যে পলিসি, সে অনুযায়ী বাস্তবায়িত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রনেতারা বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের শক্তি থেকেই আসতে যাচ্ছে নতুন এ রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন। তাদের সংগঠনটি কোনও মূল দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকবে না। জুলাই আন্দোলনে মানুষ যে রায় দিয়েছে, সেটিই এ সংগঠনের ভিত্তি। মূল থিম হবে স্টুডেন্ট ফার্স্ট, বাংলাদেশ ফার্স্ট। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে এটির কোনো সম্পর্ক নেই, নয়া ছাত্রসংগঠনটি ‘স্বতন্ত্র’ হবে।
মন্তব্য করুন