জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের (ওএইচসিএইচআর) কাছে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগসহ ৯৫ জনের একটি তালিকা দিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) জাতিসংঘের প্রকাশিত তদন্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
তালিকায় রয়েছেন- . ১০ জন সাবেক সংসদ সদস্য . ১৪ জন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা . ১৬ জন যুবলীগ নেতা . ১৬ জন ছাত্রলীগ নেতা . সাতজন পুলিশ সদস্য
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের ওপর সহিংস আক্রমণ চালানো এবং সাধারণ নাগরিকদের মাঝে অস্ত্র বিতরণের অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া, পুলিশের দেওয়া তথ্যানুসারে, ১৬০ জন আওয়ামী লীগ-সম্পর্কিত রাজনৈতিক নেতা এবং নিরাপত্তা সংস্থার কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও সহিংসতার উসকানির অভিযোগ রয়েছে।
এর আগে, গত জুলাই আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন। এতে এক হাজার ৪০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে এক হাজার ৪০০ জনের বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। নিহতদের মধ্যে ১২ শতাংশ শিশু রয়েছেন। এ ছাড়া এ সময়ে হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে বেশিরভাগ নিরাপত্তাবাহিনীর দ্বারা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, আন্দোলনে ৮৪১ জন নিহত হয়েছেন। তবে জাতিসংঘের এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মন্ত্রণালয়ের এ তথ্য সম্ভবত অসম্পূর্ণ। কেননা এ সময়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা হতাহতদের ব্যাপক চাপ সামলেছেন। এ ছাড়া বেশকিছু মামলা সঠিকভাবে রেকর্ড করা হয়নি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ সময়ে অন্তত ১৩ হাজার ৫২৯ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে অন্তত ৩৯০ জন নারী রয়েছেন। এ ছাড়া এ সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে অন্তত ১১ হাজার ৭০২ জন আটক হয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, বাংলাদেশে সাবেক সরকার এবং নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সহিংস কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি আন্দোলনে পদ্ধতিগতভাবে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর সঙ্গে জড়িত ছিল।
প্রতিবেদনেটি ২৩০টি হত্যার ঘটনার সাক্ষাৎকার ও ১৫৩টি ফরেনসিক অ্যানালাইসিসের ওপর নির্ভর করে প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনে।
মন্তব্য করুন