মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ড. এহতেশাম উল হককে আগামীকাল বৃহস্পতিবারের (১৩ ফেব্রুয়ারি) মধ্যে প্রত্যাহারের আলটিমেটাম দিয়েছে জাতীয় শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোট।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) শিক্ষা ভবন ঘেরাও কর্মসূচি থেকে শিক্ষা সচিবকে এ আলটিমেটাম দেন বিএনপিপন্থি শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের দোসর, প্রেতাত্মা এই মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. এহতেশাম উল হককে শিক্ষা প্রশাসনের সর্বোচ্চ পদে বসিয়ে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা হয়েছে। এজন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সিদ্দিক জোবায়েরকে অভিযুক্ত করে তিনি বলেন, তার আশ্রয়-প্রশ্রয়ে অধ্যাপক ড. এহতেশাম উল হককে মহাপরিচালক করা হয়েছে। জুলাই-আগস্ট মাসে এই সচিব আওয়ামী লীগের সঙ্গে যোগাযোগ করে ছাত্র গণহত্যার সঙ্গে যুক্ত ছিল। তিনি এখন আওয়ামী লীগের লোকদের বিভিন্ন স্থানে পদায়ন করছেন।
সেলিম ভূঁইয়া বলেন, বৃহস্পতিবারের মধ্যে এই মহাপরিচালককে প্রত্যাহার না করলে সারা দেশের শিক্ষকরা শিক্ষা ভবনে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। এজন্য শিক্ষা সচিব এবং যুগ্ম সচিব নুরুজ্জামান দায়ী থাকবেন।
এর আগে সকালে মাউশি ডিজি অধ্যাপক ড. এহতেশাম উল হকের প্রত্যাহার দাবিতে শিক্ষা ভবন ঘেরাও করে শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোট। সকাল ১০টায় অধিদপ্তরের মূল ভবনের সামনে শতাধিক শিক্ষক কর্মচারীরা বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। এরপর শিক্ষকরা মূল ভবন ঘেরাও করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
শিক্ষকদের দাবি, মহাপরিচালককে সরিয়ে দেওয়ার জন্য মঙ্গলবার পর্যন্ত আলটিমেটাম দেওয়া ছিল। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাকে এখনো সপদে বল রেখেছে। অবিলম্বে তাকে ডিজি পদ থেকে প্রত্যাহার না করলে সামনে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তারা। একইসঙ্গে জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা অ্যাকাডেমির (নায়েম) মহাপরিচালক পদে ড. জুলফিকার হায়দারকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোট।
শিক্ষকদের দাবি, মাউশির ডিজি পদে পদায়ন পাওয়া অধ্যাপক ড. এহতেশাম উল হক বরিশাল সিটির সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর ঘনিষ্ঠ অনুচর হিসেবে সর্বমহলে পরিচিত। তার হাত ধরেই বরিশাল বিএম কলেজের রসায়ন বিভাগ থেকে বরিশাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ পদে পদায়ন পান অধ্যাপক ড. এহতেশাম উল হক। আওয়ামী বলয়ের প্রভাবশালী অধ্যক্ষ হওয়ায় ক্ষমতার দাপটে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থ লোপাট, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারসহ বিস্তর অভিযোগে পাঁচ আগস্টের পরে অধ্যক্ষ পদ থেকে প্রত্যাহারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা ধারাবাহিক আন্দোলন, আলটিমেটাম এবং শিক্ষা সচিবের লিখিত অভিযোগ দেন। এরপরই তাকে অধ্যক্ষ পদ থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। আওয়ামী ঘনিষ্ঠ অনুচর ও বিতর্কিত শিক্ষা ক্যাডারের এ কর্মকর্তা কীভাবে মাউশির ডিজির পদে আসীন হয় তা শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটসহ শিক্ষার্থী এবং সুশীল সমাজের কারো বোধগম্য নয়।
মন্তব্য করুন