প্রতি বছরের মতো এবারও শুষ্ক মৌসুমে দেশের বায়ুদূষণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণহীন পর্যায়ে পৌঁছেছে। ঢাকার বায়ু সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ দূষণে বিশ্বে প্রথম অবস্থানে উঠেছে। সকাল ১০টা ২০ মিনিটে আন্তর্জাতিক বায়ুমান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার থেকে এ তথ্য জানা যায়।
এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সে তখন ঢাকার বায়ুমানের স্কোর ছিল ৫৪৯। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা পাকিস্তানের লাহোরের স্কোর ৩৪২। স্কোর ২৯৭ নিয়ে তৃতীয় ভারতের কলকাতা এবং চতুর্থ অবস্থানে থাকা দিল্লির স্কোর ২৬৫।
দূষণের এই মাত্রা ইস্কেমিক হার্ট ডিজিজ, স্ট্রোক, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, নিম্ন শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ এবং ফুসফুসের ক্যানসারের সঙ্গে সম্পর্কিত। দূষিত বাতাসের কারণে প্রতি বছর কয়েক লাখ মানুষ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করছেন; জন্ম নিচ্ছে অপরিণত শিশু; হাসপাতাল শয্যায় মৃত্যুর প্রহর গুনছে অগণিত মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে রাজধানী ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকায় প্রতিনিয়ত বাড়ছে বিষাক্ত বাতাস। এ অবস্থায় জনসাধারণকে মাস্ক পরাসহ বাইরে না যাওয়ার পরামর্শও দিয়ে আসছেন বিশেষজ্ঞরা।
আইকিউএয়ার স্কোর শূন্য থেকে ৫০ ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ মাঝারি হিসেবে গণ্য করা হয়, আর সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তাকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু বলে মনে করা হয়। ২০১ থেকে ৩০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই স্কোরকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ ও অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভেতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।
এ ছাড়া ৩০১ থেকে ৪০০-এর মধ্যে থাকা আইকিউএয়ার ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে বিবেচিত হয়, যা নগরের বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। সাধারণত একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি ধরনকে ভিত্তি করে। যেমন- বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন (ও৩)। বায়ুদূষণ গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে থাকে। এটা সব বয়সী মানুষের জন্য ক্ষতিকর। তবে শিশু, অসুস্থ ব্যক্তি, প্রবীণ ও অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য বায়ুদূষণ খুবই ক্ষতিকর।
মন্তব্য করুন