দৈনিক সংবাদের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক এবং জাতীয় প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা এবং ব্যাংকার খায়রুল কবিরের ২৮তম মৃত্যুবার্ষিকী শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি)।
ব্যাংকিং ক্ষেত্রে খায়রুল কবির ছিলেন ইউনিয়ন ব্যাংক লিমিটেডের সংখ্যাগরিষ্ঠ শেয়ারহোল্ডার, ভাইস চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। এ ব্যাংকটি আগে ব্যাংক অফ ত্রিপুরা, আসাম অ্যান্ড বেঙ্গল নামে পরিচিত ছিল, যেটি ভারতের একটি প্রাচীনতম ব্যাংক। তিনি ইউনাইটেড ব্যাংক অফ পাকিস্তানের তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের দায়িত্বে নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তিনি পাকিস্তান শিল্প ব্যাংকের পরিচালক এবং জনতা ব্যাংকের প্রথম চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। তিনি আমেরিকান ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের ফেলোও ছিলেন।
খায়রুল কবির বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ছয় দফা কর্মসূচির অন্যতম প্রণেতা। তিনি শেখ মুজিবুর রহমান, খান আবদুস সবুর খান, জাতীয় অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাক, তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া, কাজী আনোয়ারুল হক, ড. মাহমুদ হোসেনের মতো দেশের বহু গুণী ও কৃতী সন্তানের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সঙ্গী ও বন্ধু ছিলেন। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার কর্তৃক ১৯৫৫ সালে ‘লিডারশিপ প্রোগ্রাম’ এর জন্য মনোনীত হন এবং তা সফলভাবে সম্পন্ন করেন।
তিনি পূবালী জুট মিলস লিমিটেড, ইস্ট পাকিস্তান কো-অপারেটিভ ইনস্যুরেন্স সোসাইটি এবং ইউনাইটেড ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড-এর উদ্যোক্তা পরিচালক ছিলেন। অত্যন্ত সংস্কৃতিমনা খায়রুল কবির ছিলেন পাকিস্তান আর্ট কাউন্সিল (যেটি বর্তমানে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি) এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন, ইসমত চুগতাই, হাবিবুর রহমান, এস. এম. সুলতান-সহ অসংখ্য শিল্পীকে তিনি বিভিন্নভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থার (এফডিসি) প্রথম ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালনকালে দেশের প্রথম রঙিন চলচ্চিত্র প্রসেসিং ও মুদ্রণ ল্যাবরেটরি স্থাপন করেন।
দেশের ক্রীড়াঙ্গনেও তার সরব পদচারণা ছিল। তিনি তদানীন্তন পাকিস্তান বাস্কেটবল ফেডারেশনের সভাপতি ছিলেন। তিনি ঢাকা স্টেডিয়াম (বর্তমান বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম) নির্মাণ কমিটির সদস্য ছিলেন। এ ছাড়া ইস্ট পাকিস্তান ফ্লাইং ক্লাব এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন তিনি।
মরহুম খায়রুল কবির ঘোড়াশালের সম্ভ্রান্ত কবির পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯৭ সালের আজকের এ দিনে বার্ধক্যের কারণে সিঙ্গাপুরে মারা যান তিনি। তাকে ঘোড়াশালে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়। মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনায় আজ তার পৈতৃক বাড়িতে এক মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন