ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার পবন বাধেকে তলব করেছে বাংলাদেশ। ভারতে বসে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ভাষণ দেওয়া বন্ধ করার পদক্ষেপ নিতে তাকে অনুরোধ করা হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন দাবি করে বলেছেন, ভারত থেকে শেখ হাসিনার বক্তব্য-বিবৃতির কারণে বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙচুর এবং আজ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা যাতে বাংলাদেশের বিপক্ষে এ ধরনের বক্তব্য না দেন, তাকে বিরত রাখার জন্য ভারতকে লিখিতভাবে বলা হয়েছে এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে তলব করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
রাজধানীর ৩২ নম্বরে আজ ও গতকালের ভাঙচুরের ঘটনা তুলে ধরে এক প্রশ্নের জবাবে তৌহিদ হোসেন বলেন, প্রথম কয়েক দিন একটু আইনশৃঙ্খলা সমস্যার পর আস্তে আস্তে সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে আসছিলে। আপনারা একটা জিনিস খেয়াল করবেন, এ ধরনের ঘটনা তো তখনও ঘটতে পারতে। ঘটেনি কিন্তু।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ভারতে থেকে যেসব বক্তৃতা-বিবৃতি দিচ্ছেন, সেটাকে ছাত্র-জনতা ভালোভাবে নেয়নি। তিনি অবিরাম প্রোভোক (উসকানি) করছেন। তারই ফলে এ ঘটনা ঘটেছে বলে আমাদের বিশ্বাস। যদি তিনি এ ধরনের ঘটনা থেকে বিরত থাকতেন, তাহলে এ রকম ঘটনা হয়তো ঘটতে না বলে দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ সম্পর্কে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আপনারা জানেন যে সেনাবাহিনীও সেখানে উপস্থিত হয়েছিলে এবং তারা কনটেইন করতে পেরেছিল, যাতে বাড়াবাড়ি এর চেয়ে বেশি কিছু না হয়। তারা যখন শুরু হয়ে গেছে, তখন সম্পূর্ণ থামাতে পারেনি। কিন্তু এটা যাতে ছড়িয়ে না পড়ে বা আরও যাতে ক্ষতি না হয়, এটা তারা কনটেইন করতে পেরেছিল।
শেখ হাসিনা যাতে বাংলাদেশের বিপক্ষে এ ধরনের বক্তব্য না দেন, তাকে বিরত রাখার জন্য ভারতকে লিখিতভাবে বলা হয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
তৌহিদ হোসেন বলেন, এখনো আমরা জবাব পাইনি। আজ আবারও তাদের আমরা গত কয়েক দিনের পরিস্থিতির জন্য প্রোটেস্ট নোট দিয়েছি। হাইকমিশনার এখন নেই, তাই অ্যাকটিং হাইকমিশনারকে ডেকে এ ধরনের প্রোভোক করার প্র্যাকটিস বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করেছি।
পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক প্রশ্নে তিনি বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আমরা দাঁড়িয়ে থাকলে তাদেরও কোনো লাভ নেই, আমাদেরও কোনো লাভ নেই। আমরা নিশ্চয়ই আমাদের স্বার্থ রক্ষা করার চেষ্টা করব। পাশাপাশি আমরা চাইব যে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক আমরা আরেকটি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক হিসেবে দেখতে চাই, নিয়ে যেতে চাই।
পাকিস্তানের সঙ্গে জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এটার পজিটিভ বেনিফিটস আছে। চেষ্টা করব আমাদের সর্বোচ্চ বেনিফিট যাতে আদায় করতে পারি।
মন্তব্য করুন