আগামী মে থেকে শুক্রবারও সারাদিন মেট্রোরেল পরিচালনার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এ ছাড়া বর্তমানে যে বিরতিতে মেট্রোরেল চলছে, সেটিও কমিয়ে আনার পরিকল্পনা চলছে। আর এটি বাস্তবায়িত হলে দৈনিক ট্রেন চলাচলের সংখ্যা বাড়বে।
মঙ্গলবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) উত্তরায় মেট্রোরেলের ডিপোতে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে সভায় এসব কথা জানান ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ।
তিনি বলেন, বর্তমানে শুক্রবার দুপুর তিনটা থেকে মেট্রোরেল চলাচল করে। অন্যান্য দিন ব্যস্ত সময়ে পিক আওয়ারে ৮ মিনিট এবং কম ব্যস্ত সময়ে (অফ পিক আওয়ারে) ১০ মিনিট পরপর উভয় দিক থেকে মেট্রোরেল চলছে। সব মিলিয়ে খোলার দিনগুলোতে সারা দিনে ১৯৮ বার যাতায়াত করে মেট্রোরেল। বিরতির সময় কমানো গেলে ট্রেনের সংখ্যা আরও বাড়বে। এছাড়া বর্তমানে শুক্রবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত ট্রেন চলে ৬০ বার। শুক্রবার সকালেও মেট্রোরেল চলাচল শুরু হলে বাড়বে ট্রেনের সংখ্যা।
তিনি আরও বলেন, আমরা চেষ্টা করছি মেট্রোরেলের ফ্রিকোয়েন্সি মে মাসের মধ্যে সহনীয় মাত্রায় আনা যায় কি-না; এ লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। উপদেষ্টা মহোদয়ের নির্দেশনা রয়েছে। মে মাসকে আমরা টার্গেট করেছি। আশা করছি মে মাসের মধ্যে গুছিয়ে ফেলতে পারব।
বর্তমানে মেট্রোরেলে দৈনিক গড়ে সাড়ে তিন লাখ যাত্রী পরিবহন করে বলে জানান ডিএমটিসিএলের এমডি। মেট্রোরেল কমলাপুর পর্যন্ত চালু হলে দৈনিক যাত্রী চলাচল সাড়ে পাঁচ লাখ হবে বলে তিনি জানান।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে মেট্রোরেলের যাত্রীদের কাছে টিকিট বিক্রি করে প্রায় ২৪৪ কোটি টাকা আয় হয়েছে বলেও জানান ডিএমটিসিএল এমডি।
তিনি জানান, ২০২২ সালে আংশিক চালুর পর ২০২২-২৩ অর্থবছরে আয় হয়েছিল ২২ কোটি টাকার বেশি।
সভায় মেট্রোরেল পরিচালনায় খরচের বিষয়ে ডিএমটিসিএলের পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) মো. আফতাবুজ্জামান জানান, মেট্রোরেল পরিচালনায় মাসে গড়ে ছয় কোটি টাকার মতো বিদ্যুৎ বিল দিতে হয়। আরও প্রায় ছয় কোটি টাকার মতো খরচ হয় বেতন-ভাতার পেছনে। এর বাইরে মেরামত, স্টেশনারি কেনাকাটা রয়েছে। কিছু কর্মকর্তার বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হয় প্রকল্পের অধীনে।
ডিএমটিসিএলের এমডি আবদুর রউফ জানান, মেট্রোরেল প্রকল্পের ঋণের কিস্তি ও সুদ তিন কিস্তি পরিশোধ করা হয়েছে। এ খাতের প্রায় ৭৬ কোটি টাকা মেট্রোরেলের আয় থেকে পরিশোধ করা হয়েছে।
গত জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ এর স্টেশন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রাথমিকভাবে অন্য স্টেশন ও স্থাপনা থেকে কিছু যন্ত্রপাতি স্থানান্তর এবং স্থানীয়ভাবে কিছু পণ্য কিনে প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয় করে দুটি স্টেশন চালু করা হয়। ডিএমটিসিএলের এমডি জানান, অন্য স্থান থেকে যেসব যন্ত্র ও সামগ্রী নেওয়া হয়েছে, সেগুলোর আরও কিছু প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কেনার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এ কাজে সাকুল্য ১৮ কোটি টাকা লাগবে।
মন্তব্য করুন