যেসব সংস্কারের ব্যাপকতা বেশি, সেগুলোর ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দল ও অন্য অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠক শুরু করবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। চলতি ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি এ বৈঠক শুরু হবে। এ ছাড়া সংস্কারের জন্য গঠিত কমিশনগুলোর প্রতিবেদনকে দুই ভাগে ভাগ করা হবে। যার এক ভাগে আশু সংস্কার এবং অন্য ভাগে থাকবে কাঠামোগত সংস্কার।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাত সংস্কারে প্রস্তাব তৈরির জন্য গঠিত ছয়টি সংস্কার কমিশনের প্রধানদের বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয়।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রিয়াজ, বিচার বিভাগীয় কমিশনের প্রধান বিচারপতি শাহ মমিনুর রহমান, নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফরাজ হোসেন, দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রধান ডা. ইফতেখরুজ্জামান এবং জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী অংশ নেন।
বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ছয় মাস পূর্তির দিন ছয়টি সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে এবং সংস্কার কমিশনগুলো সরকারকে করণীয় জানাবে।
প্রেস উইং সূত্র আরও জানায়, এ ছাড়া কমিশন রিপোর্ট দুই ভাগে ভাগ করা হবে। একটি ভাগে আশু সংস্কার, যেগুলো দ্রুত করে ফেলা সম্ভব, সেগুলো থাকবে। অন্য ভাগটিতে কাঠামোগত সংস্কার, যেগুলোর জন্য প্রক্রিয়াগত জটিলতা রয়েছে, সেগুলো থাকবে।
পাশাপাশি যে সংস্কারগুলো সরকার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে করতে পারবে, সেগুলো রাজনৈতিক দলগুলোকে ইনফর্ম করে সংস্কার করা হবে। যে সংস্কারগুলো ব্যাপক, সেগুলোর জন্য জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মাধ্যমে রাজনৈতিক দল ও অন্য অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠক শুরু হবে।
প্রেস উইং জানিয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতা সাপেক্ষে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকের থেকেই জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কাজ শুরু করবে।
গত বছরের ৩ অক্টোবর নির্বাচনব্যবস্থা, পুলিশ, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছিল। ৯০ দিনের মধ্যে এই পাঁচ কমিশনকে প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল। সে হিসাবে ৩ জানুয়ারির মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা ছিল। সংবিধান সংস্কার কমিশন গঠন হয়েছিল ৬ অক্টোবর। ৫ জানুয়ারির মধ্যে এ কমিশনের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা ছিল।
পরবর্তীসময়ে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন ছাড়া অন্য পাঁচটি কমিশনকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময় বাড়িয়ে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়। বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনকে সময় দেওয়া হয় ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত।
মন্তব্য করুন